আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ ডিসেম্বর ২০২২, ৬:৪৮:৪০ অপরাহ্ন
অভিবাসীদের স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষে আজ দেশে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস। বাংলাদেশসহ জাতিসংঘের সব সদস্যভুক্ত দেশে প্রতি বছর ১৮ই ডিসেম্বর এই দিবসটি পালিত হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ২০০০ সালের চৌঠা ডিসেম্বর সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বিশ্বব্যাপী দিনটি পালনের। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিপুল সংখ্যক অভিবাসীর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদিকে ঘিরেই এই দিবসের উৎপত্তি। ১৯৯০ সালের আজকের এই দিনে সাধারণ পরিষদ অভিবাসী শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা এবং তাদের পরিবারের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক চুক্তি প্রস্তাব আকারে গ্রহণ করে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বহু দেশের সরকার যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে। সব কর্মসূচির উপজীব্যই হচ্ছে- অভিবাসীদের মানবাধিকারের বিষয়ে তথ্যের বিস্তৃতি ঘটানো, সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব সংঘাত থেকে মুক্তি লাভ, অভিজ্ঞতা বিনিময়, অভিবাসীদের রক্ষার লক্ষে রূপরেখা প্রণয়ন ইত্যাদি।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি নাগরিক বসবাস করছে। সাধারণত এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে মানুষের স্থানান্তরকে বলা হয় অভিবাসন। বিশেষ বিশেষ জনগোষ্ঠীর বা মানুষের গ্রাম থেকে শহরে আগমণ, স্থান বদল, কয়েক দিন বা বহু বছর নিজের আদি বা স্থায়ী বাড়ি থেকে অনুপস্থিতি, সাময়িক অভিবাসন বা স্থায়ী আবাস পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলো এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। অভিবাসন দ্রুত নগরায়নের একটি মূল চালিকাশক্তি যা শ্রমশক্তির ভৌগোলিক পূনর্বন্টনের মাধ্যমে অধিক মাত্রায় উৎপাদন এবং উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। অভিবাসনের মাধ্যমে মানুষ ভাগ্যান্বেষণে স্বল্প সম্ভাবনাময় স্থান থেকে অধিক সম্ভাবনাময় স্থানে যেতে চায়। বিদেশে বাংলাদেশের অস্থায়ী অভিবাসীদের উপার্জিত অর্থ দেশের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার বাড়ায়। বাংলাদেশে ১৯০১ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ৯০ বছরে শহরের জনসংখ্যা ৩০ গুণ বেড়েছে। আর ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত শহরের জনসংখ্যার বার্ষিক বৃদ্ধির হার ছিলো তিন দশমিক চার শতাংশ। যা প্রতিবেশী অনেক রাষ্ট্র এবং এশিয়ার জনবহুল রাষ্ট্রগুলোর তুলনায় অধিক।
সব মিলিয়ে দেশের মানুষ যেমন দেশের অভ্যন্তরেই অভিবাসী হিসেবে বসবাস করছে তেমনি দেশের মানুষ বিদেশে গিয়েও অভিবাসী হিসেবে বসবাস করছে। বিশেষ করে দেশের অভ্যন্তরে এই অভিবাসন প্রক্রিয়ার ভালো-মন্দ উভয় দিকই রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বড় বড় শহরে গ্রাম থেকে ক্রমাগত অভিবাসনের ফলে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির পরিবর্তে তা দারুণভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। নগরের জনসংখ্যার দ্রুত ও ব্যাপক বৃদ্ধি উন্নয়নের ধারাকে ব্যাহত করে। বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অভিবাসীরূপে বসবাস শুরু হয়েছে কয়েক শ’বছর আগে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে এই সংখ্যা। তাদের কষ্টার্জিত অর্থ আমাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে আমাদের প্রত্যাশা, দেশে কিংবা বিদেশে বাংলাদেশী অভিবাসীদের স্বার্থ সুরক্ষিত হোক।