জলবায়ু উদ্বাস্তু
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ ডিসেম্বর ২০২২, ৮:০৯:০১ অপরাহ্ন
উদ্বাস্তু হওয়ার আশংকায় রয়েছে বাংলাদেশের এক কোটি ৩৩ লাখ মানুষ। এরা হবে জলবায়ু উদ্বাস্তু। আর আগামি দুই দশকের মধ্যেই এই পরিমাণ জনগোষ্ঠী বাস্তুচ্যূত হবে। এই আশংকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। তাদের মতে, ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সোয়া কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রতি আটজনের একজন এবং এক বিলিয়ন লোকের মধ্যে ২৮১ মিলিয়ন অভিবাসী এবং কয়েক মিলিয়ন ব্যক্তি রাষ্ট্রহীন অবস্থায় রয়েছে। এ পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ৭০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্ববাসিকে নানামুখি সমস্যার সম্মুখীন করছে। এর মধ্যে উদ্বস্তু সমস্যাও একটা বৃহৎ সমস্যা। সাধারণত জলবায়ু শরণার্থী তারাই যারা স্থানীয় পরিবেশের আকস্মিক বা দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তনের কারণে নিজের অঞ্চল ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়। জলবায়ুর এমন পরিবর্তন যা তাদের সুষ্ঠু জীবিকা নির্বাহে ব্যাঘাত ঘটায়।এই পরিবর্তনগুলো হলে- দীর্ঘ খরা, মরুকরণ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং ভারী বর্ষণের মতো আবহাওয়ার ক্ষতিকারক পরিবর্তন। জলবায়ু শরণার্থীরা অন্য দেশে চলে যেতে পারে বা তারা নিজের দেশেও এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলে যেতে পারে।আর জলবায়ু পরিবর্তন, ক্রমবর্ধমান বৈষম্য, দ্বন্দ্ব, বাণিজ্য এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি এই বাস্তুচ্যুত ও অভিবাসন সমস্যাকে প্রকট করে তুলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিবাসন এবং বাস্তুচ্যুতি শারীরিক, মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। ইতোপূর্বে বিজ্ঞাণীগণ সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, বিশ্বে উষ্ণায়নের কারণে জমাট বাঁধা বরফ গলে সমুদ্র মহাসমুদ্রগুলোর পানি স্ফীত হয়ে বিশ্বের শতকোটি মানুষের জীবন, জীববৈচিত্র্য, প্রাণিকুল, বন-বনানী, হাজারো জাতের গুল্মলতা তথা কোটি কোটি বছরের মানবসভ্যতার অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে যাচ্ছে। আর সেই দিন বেশি দূরে নয়, যখন সমুদ্রের মধ্যে ভাসমান বহু দ্বীপদেশসহ অনেক নিচু জনপদ সমুদ্রবক্ষে বিলীন হয়ে যাওয়া অবধারিত হয়ে যাবে।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিপর্যয়ে যেসব দেশ বেশি বিপদের মুখে তার যে তালিকা বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন তাতে বাংলাদেশের নাম ওপরের দিকেই রয়েছে। সুতরাং এব্যাপারে সজাগ হতেই হবে। এর বিকল্প নেই। বিশেষ করে, ঝুঁকিপ্রবন এলাকার মানুষের যতোটুকু করণীয়, তা তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে। সমস্যাটি যেহেতু জাতীয় পর্যায়ের, তাই জাতীয়ভাবেই তা মোকাবেলার চেষ্টা করা উচিত।