পুলিশের মানবিকতা: স্বজনদের কাছে ফিরে গেলেন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২২ ডিসেম্বর ২০২২, ৬:৫৮:৪১ অপরাহ্ন
রাজনগর (মৌলভীবাজার) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : রাজনগর থানা পুলিশের সহায়তায় মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি পরিবারের স্বজনদের কাছে ফিরে গেছেন। সারাদিন ঘুরে বেড়াতো এবং রাতে সড়কে, দোকানের বারান্দা অথবা স্কুলের সিঁড়িতে ঘুমিয়ে থাকতেন তিনি। শীতের রাতে খোলা জায়গায় তাকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিনয় ভূষণ রায় তার সাথে কথা বলেন। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে তিনি তার স্বজনদের কাছে ফিরে যান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজনগর উপজেলা সদর ইউনিয়নের মুশুরিয়া গ্রামের আরব আলীর পুত্র মানসিক ভারসাম্যহীন রুহুল মিয়া (৪০) ঘুরে বেড়াতেন ভবঘুরের মতো। রুহুল মিয়ার মা মারা গেলে বাবা আরব আলী দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকেই তার প্রতি অবহেলা বাড়তে থাকে। এক সময় সৎ মায়ের পরামর্শে বাবা বাড়ি থেকে বের করে দেন তাকে। সেই থেকে তার ঠাঁই হয় বিভিন্ন দোকানের বারান্দা ও কলেজ পয়েন্ট যাত্রী ছাউনীতে। অবহেলার শিকার হয়ে ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। প্রচণ্ড শীতে থানার সামনের একটি দোকানের বারান্দায় শুয়ে থাকতে দেখে রাজনগর থানার ওসি তার সাথে কথা বলেন। এসময় তিনি তার বাড়ির ঠিকানা জানালে ওসি বিনয় ভূষণ রায় বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের জন্য উপপরিদর্শক (এসআই) নুর উদ্দিনকে নির্দেশ দেন। পরে এসআই নুর উদ্দিন এলাকায় গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে জানতে পারেন, তার পরিবারের লোকজন পারিবারিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে কৌশলে তাকে পাগল সাজিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। রাজনগর থানার ওসি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপে এসআই নুর উদ্দিন তার বাড়িতে গিয়ে গত মঙ্গলবার রুহুল মিয়াকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। এসময় তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করবেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়। এব্যাপারে রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, পারিবারিক অবহেলায় রুহুল মিয়া মানসিক ভারসাম্যহীনের মতো জীবনযাপন শুরু করেন। শীতের রাতে তাকে দোকানের বারান্দায় দেখে মানবিক কারণে কৌতূহলি হয়ে কথা বলে জানতে পারি তার বাড়িঘর সব রয়েছে। পরে আমার অফিসার গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন পারবারিক সম্পত্তির লোভে তাকে পাগল সাজিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসা করানো হবে বলে আমাদেরকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।