সাংবাদিকতায় ঝুঁকি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২২ ডিসেম্বর ২০২২, ৮:১৮:৪৮ অপরাহ্ন
দেশে গণমাধ্যমের ঝুঁকি বাড়ছে প্রতিনিয়ত।নির্যাতন, হত্যাসহ নানাভাবে নিগৃহিত হচ্ছে সাংবাদিক তথা গণমাধ্যমকর্মি। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বছর বছর বাড়ছে সাংবাদিকতায় ঝুঁকি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার মতে-দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্রমেই সংকটাপন্ন হয়ে উঠছে। এবছর সেই সংকটের চিত্রটা খুবই স্পষ্ট। ২০২২ সালে প্রকাশিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকের বিশ্ব র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬২তম। ১৮০টি দেশকে নিয়ে প্রকাশিত এই র্যাংকিংয়ে গত বছর (২০২১) বাংলাদেশের অবস্থান ছিলো ১৫২তম। এ বছর নিচে নেমেছে দশ ধাপ। বর্তমানে মিয়ানমার ব্যতীত প্রতিবেশি যে কোন দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে।
সময়ের পরিক্রমায় দেশের গণমাধ্যম সম্প্রসারিত হচ্ছে, ব্যাপ্তি বাড়ছে, প্রযুক্তিগত উন্নতিও হচ্ছে। কিন্তু সেই সঙ্গে বাড়ছে এই পেশায় ঝুঁকি। জরিপের তথ্য হচ্ছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দেশজুড়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত মামলা করা হচ্ছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দেশে ১১৮ জন সাংবাদিক আহত ও লাঞ্ছিত হয়েছেন। সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক হামলার ৬২টি ঘটনা ঘটেছে। এসময় তিন গণমাধ্যমকর্মী খুন হয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাংবাদিকদের অধিকার লঙ্ঘন ও হত্যাসহ নির্যাতনের এই প্রবণতা মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় রীতিমতো কুঠারাঘাত। শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বেই সাংবাদিকতায় ঝুঁকি বেড়ে চলেছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে চলতি বছর সারা বিশ্বে ৬৭ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এর আগের বছর (২০২১) ৪৭ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হন। এ বছর কর্মরত অবস্থায় কারাবন্দি হয়েছেন ৩৭৫ জন সাংবাদিক। তবে সবচেয়ে বড় কথা, বাংলাদেশের সংবিধানে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেটা বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষ উদাসিন। জরিপের তথ্য হচ্ছে, বিশ্বে সাংবাদিক হত্যার বিচার না হওয়া দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১তম।
বলা হয়, সংবাদপত্র কিংবা গণমাধ্যম জাতির বিবেক। এই বিবেক যদি নিপীড়িত হয় নির্যাতিত হয় তবে জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকারই হবে। তাই গণমাধ্যম যাতে সুরক্ষিত থাকে সেদিকেই নজর দিতে হবে।অবাধ তথ্য প্রবাহের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে সরকারের, সেটা যাতে কোনভাবে বাধাগ্রস্ত না হয়। পাশাপাশি সংবাদকর্মিদেরও দায়িত্ব পালনে সততা নিষ্ঠার পরিচয় দিতে হবে।