সরিষা চাষে সাফল্য
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ ডিসেম্বর ২০২২, ৮:০৩:৩৫ অপরাহ্ন
ভোজ্যতেল কিনতে হয় না কাউকে। নিজেরাই উৎপাদন করে তারা প্রয়োজনীয় ভোজ্যতেল। এমন একটি আশা জাগানিয়া খবর প্রকাশিত হয়েছে এই পত্রিকায় সম্প্রতি। এতে বলা হয়- সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার ডুলারখাল গ্রাম ও আশেপাশের গ্রামের প্রায় প্রতিটি পরিবারের রয়েছে সরিষা আবাদ। তাদের সারা বছরের ভোজ্যতেলের চাহিদা এখান থেকেই পূরণ হয়ে যায়। তবে, উৎপাদন আরো বাড়াতে সরকারের সহায়তা এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রয়োজন বলে মনে করেন কৃষকরা। অপরদিকে, এই দিগন্ত বিস্তৃত সরিষার মাঠে মৌ চাষের অপার সম্ভবনাও রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
নানা কারণে ভেজ্যতেল একটা ‘দুষ্প্রাপ্য’ বস্তুতে পরিণত হচ্ছে। এর দাম এখন ধরাছোঁয়ার বাইরে। অথচ, অতীতে আমাদের এমন অবস্থা ছিলোনা। তখন ভোজ্যতেলের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভর করতে হতোনা; দেশে উৎপাদিত সরিষার তেলেই ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণ হয়ে যেতো। সত্যি বলতে কি ভোজ্যতেলের জন্য যে হাহাকার অবস্থা চলছে, সেটা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের নিজস্ব উৎপাদনের দিকেই ঝুঁকতে হবে। আর সরিষা উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমেই সেটি সম্ভব। প্রকাশিত খবরে বলা হয়- সরকার ভোজ্যতেল আমদানি হ্রাস করতে তেল বীজ শস্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য প্রনোদনাসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করায় সিলেট অঞ্চলে সরিষা আবাদ বেড়ে ১৭ হাজার ৬৩০ হেক্টরে উন্নীত হয়েছে। কৃষকদের মতে, সরিষা উৎপাদন বাড়াতে হলে প্রকৃত কৃষকদের সহায়তা দিতে হবে। কৃষকদের আয় বাড়ানোর জন্য সরিষা আবাদের সাথে মৌমাছি পালনের মাধ্যমে মধু উৎপাদনও করা য়ায়। ইতোপূর্বে সরিষা উৎপাদনে সরকারের ব্যাপক পরিকল্পনার কথা শোনা যায়। সেটা এ রকম, আগামী তিন বছরে দেশে ৫ লাখ হেক্টর জমিতে তেলবীজ জাতীয় ফসলের উৎপাদন করা হবে। এর মাধ্যমে দেশে ভোজ্যতেলের মোট চাহিদার ৪০ থেকে ৫০ ভাগ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। সেই পরিকল্পনা কবে বাস্তবায়িত হবে সেদিকে চেয়ে আছে মানুষ। জানা যায়, বছরে দেশে ২৪ লাখ মেট্রিকটন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে সরিষা, তিল, সানফ্লাওয়ারসহ অন্যান্য তেলবীজ থেকে চাহিদার ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩ লাখ মেট্রিকটন তেল উৎপাদন হচ্ছে। বাকিটা আমদানি করতে হয়। প্রতিবছর ২৭ হাজর কোটি টাকার ভোজ্যতেল আমদানি করতে হয়।
সম্ভাব্য বৈশ্বিক মন্দার প্রেক্ষিতে তেলসহ সব ধরণের কৃষিপণ্যের উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, তেলের উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমাদের পূর্ব পুরুষেরা নিজেদের উৎপাদিত তেল খেয়েছেন। এখন কেন সেগুলো আমদানি করতে হয়? প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশনা যাতে যথাযথভাবে পালিত হয়, সেটা তদারকির দায়িত্ব কৃষকসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের।