চিকিৎসায় ব্যক্তিগত ব্যয়
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ ডিসেম্বর ২০২২, ৭:৪৯:৪৫ অপরাহ্ন
চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে চিকিৎসায় ব্যক্তিগত ব্যয়। জরিপের তথ্য হচ্ছে, দেশে ৭২ দশমিক ৭০ শতাংশ চিকিৎসা ব্যয় ব্যক্তি নিজে বহন করে। আর চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। ফলে সরকারি স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ সাধারণ মানুষের জন্য দিন দিন সংকোচিত হচ্ছে। সব মিলিয়ে মানুষের মধ্যে আর্থিক দৈন্যতা বেড়ে চলেছে।
সাধারণত রোগিরা স্বাস্থ্যসেবা নিতে সরকারি সুযোগ সুবিধা ছাড়া নিজের পকেট থেকে যে অর্থ ব্যয় করে,সেটাই ব্যক্তিগত ব্যয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, কোন দেশে কোন নাগরিকের স্বাস্থ্যব্যয় তার সামগ্রিক ব্যয়ের ৩০ শতাংশের বেশি হলে সেই দেশে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল বলে বিবেচিত হয়। সেই হিসেবে বাংলাদেশে স্বাস্থ্যের পেছনে ১০০ টাকা খরচ হলে সরকারি সহায়তা পাওয়া যায় ৩০ টাকার কম। বাকি টাকা রোগি নিজে ব্যয় করে। চিকিৎসায় ব্যক্তিগত ব্যয় পার্শ্ববর্তি দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে বেশি। তাই এখানে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে দারিদ্র্য বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশের মানুষের পকেটের ব্যয় বেড়েই চলেছে। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে প্রতিবছর এক কোটি ১৪ লাখের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে রোগিকে সবচেয়ে বেশি (৬৪ ভাগ) টাকা ব্যয় করতে হয় ওষুধ খাতে। এরপর হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোরে সেবা নেয়ার ক্ষেত্রে ২৩ ভাগ এবং পরীক্ষা নিরীক্ষায় ব্যয় হয় ৮ ভাগ টাকা।সরকারি সূত্রে বলা হয়, ১৯৯৭ সালে একজন ব্যক্তিকে তার চিকিৎসা ব্যয়ের ৫৫ শতাংশ বহন করতে হতো। আর সরকারি ব্যয় ছিল ৩৭ শতাংশ। আর বর্তমানে চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রায় ৭০ ভাগ টাকাই ব্যক্তিকে বহন করতে হয়। অর্থাৎ দুই যুগের ব্যবধানে স্বাস্থ্যসেবা নিতে গিয়ে ব্যক্তির ব্যয় ১৫ শতাংশ বেড়েছে। আর সরকারি ব্যয় কমেছে প্রায় ১৫ শতাংশ।
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকার নানা ধরণের উদ্যোগ নিচ্ছে। শোনা যাচ্ছে নানা পরিকল্পনার কথা।কিন্তু বাস্তবে মানুষ সরকারি স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ পাচ্ছে আরও কম।পার্শ্ববর্তী অনেক দেশে জটিল রোগীদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা চালু রয়েছে। সব মানুষের চিকিৎসা পাওয়া একটি মৌলিক অধিকার। সবর্জনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে।