কৃষিজমি ধংস নয়
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ ডিসেম্বর ২০২২, ৮:৪৮:২২ অপরাহ্ন
কৃষিজমি সুরক্ষার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, কৃষিজমি নষ্ট করে কেউ শিল্প স্থাপন করলে কোনও সুবিধা দেওয়া হবে না। নানা বাধা-বিপত্তির মুখেও ধান উৎপাদন অব্যাহত থাকায় দেশে খাদ্যের সংকট হয়নি।তিনি বলেন, আমাদের জনসংখ্যা বেশি। খাদ্য নিরাপদ করতে হলে কৃষি জমি রক্ষা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে একথা বলেন।
কৃষিজমি ধংসের মহোৎসব চলছে দেশে। এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগি। কৃষি জমির পরিমাণ নানা কারণে কমে আসছে। অপরিকল্পিত নগরায়ন, যত্রতত্র অবকাঠামো নির্মাণ, নদী ভাঙ্গন, ইটভাটা, কলকারখানা স্থাপন, বাগানবাড়ি, রিসোর্ট-এসব নির্মাণের কারণে কমে আসছে কৃষি জমি। প্রতিদিনই কৃষি জমি কমছে। কৃষিজমিতে গড়ে উঠছে ঘরবাড়ি, অবকাঠামো। যে রাস্তার দুপাশে একসময় দেখা গেছে কেবলই ফসলের ক্ষেত, সেই রাস্তার দুপাশে এখন নানান অবকাঠামো। অনেক জায়গাতেই চিরচেনা ফসলের ক্ষেত আড়াল করে ফেলছে নতুন নতুন বসতি। রাস্তাঘাট উন্নয়নের নামেও বিপুল পরিমাণ কৃষি জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। কৃষি জমির কমে আসার তথ্যটা এখন রীতিমতো ভয়ংকর। কৃষি জমি রক্ষায় ‘কৃষি জমি (যথাযথ ব্যবহার ও সংরক্ষণ) আইন ২০২২’ নামে একটি বেসরকারি বিল গ্রহণ করা হলেও তা এখনও আইনে পরিণত হয়নি। ফলে কৃষি জমি রক্ষায় এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোন আইন বা নীতি প্রণীত হয়নি। সরকারি সূত্রে বলা হয়, দেশে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৬৯ হাজার হেক্টর আবাদি জমি অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। ফলে এই জমিগুলোতে আর কোনো ধরনের চাষবাস হচ্ছে না। অন্য এক সূত্রে বলা হয়, প্রতিবছর আমাদের দেশে ১ শতাংশ হারে কৃষি জমি নষ্ট হচ্ছে। এই ধারাবাহিকতা চলমান থাকলে আগামি ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে আর কোন কৃষি জমির অস্তিত্বই থাকবে না।
কৃষিজমি অকৃষি খাতে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এজন্য দরকার আইন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশে একশ’ শিল্প অঞ্চল গড়ে ওঠেছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠান করতে হলে এখানেই করতে হবে। কৃষি জমিতে শিল্প করা যাবে না। তিনি বলেন, ইতোপূর্বে আমরা অনেক ভালো মানের জমি হারিয়েছি। আমরা আর জমি হারাতে চাই না। এখন দরকার প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের বাস্তবায়ন।