ছাতকে পাইপগানসহ ৪ ডাকাত আটক
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ ডিসেম্বর ২০২২, ৬:১৫:৫৯ অপরাহ্ন
ছাতক ও গোবিন্দগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : ছাতকে প্রবাসীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি হয়েছে। ডাকাতরা নগদ টাকা, পাউন্ড, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোনসহ ১০ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সশস্ত্র ডাকাত দলের হামলায় গৃহকর্তাসহ ৭ জন আহত হয়েছেন। আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডাকাতিকালে ধাওয়া করে অস্ত্রসহ ৪ ডাকাতকে আটক করে এলাকাবাসী। গতকাল মঙ্গলবার ভোর রাতে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী ডালিম মিয়ার বাড়িতে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জালালপুর গ্রামের বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসী মৃত উস্তার আলীর পুত্র ডালিম মিয়ার বাড়িতে মঙ্গলবার ভোর রাতে ১৪-১৫ জনের সংঘবদ্ধ সশস্ত্র ডাকাত দল হানা দেয়। ডাকাতরা বাড়ির গ্রিলের গেট ও দরজা ভেঙে অস্ত্রের মুখে পরিবারের লোকজনকে হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারপিটসহ লুটতরাজ চালায়। এসময় পাশের মসজিদের মাইক থেকে ডাকাত-ডাকাত বলে উচ্চস্বরে ঘোষণা দিলে এলাকার লোকজন চিৎকার করে লাঠিসোঁটা নিয়ে এগিয়ে আসেন। অবস্থা বেগতিক দেখে ডাকাতরা আতঙ্ক সৃষ্টি করতে কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। এক পর্যায়ে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় গৃহকর্তাসহ এলাকার লোকজন ডাকাতদের ধাওয়া করে একটি পাইপগানসহ ৪ ডাকাতকে আটক করেন। আটককৃতরা হচ্ছে, জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের চকতিলক গ্রামের মখলিছ মিয়ার পুত্র লাল মিয়া ওরফে জুয়েল (২৯), একই ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের মৃত শহিদ উল্লাহ ওরফে সাইদুল্লার পুত্র সাইফুল ওরফে সাইকুল (২৩), ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের কলাপাড়া-দত্ত গ্রামের মৃত সফর আলী ওরফে সফর উল্লাহর পুত্র আনফর আলী ওরফে আনহার (২৪) এবং একই উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের রবিদাস-পালপাড়া গ্রামের আলিম উল্লাহর পুত্র সাইফুল ইসলাম ওরফে শফিক (২৩) কে আটক করে এলাকাবাসী।
সকালে খবর পেয়ে ছাতক থানাপুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ডাকাতদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এসময় ডাকাতদের ব্যবহৃত একটি পাইপগান, কয়েকটি গুলির খোসা উদ্ধার করে পুলিশ। জনতার গণধোলাইয়ে আহত ডাকাতদের ছাতক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
এদিকে, ডাকাতদের হামলায় আহত গৃহকর্তা ডালিম মিয়া, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সামছুল ইসলাম, আজাদ মিয়া, শাহীন মিয়াসহ অন্তত ৭ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে গত ২ মাসে উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের কটালপুর (মোরারগাঁও) গ্রামে ও কালারুকা ইউনিয়নের গড়গাঁওয়ে পৃথক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়া, প্রায়ই চুরি সংঘটিত হচ্ছে। ছাতকে ইদানীং ডাকাতি ও চুরির ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় লোকজন জানান, দীর্ঘদিন এ উপজেলায় চুরি-ডাকাতি প্রায় বন্ধ। পুলিশের তৎপরতায় প্রায় ২-৩ বছর ধরে কোন ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। হঠাৎ করে চুরি-ডাকাতি বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান ডাকাতির কথা স্বীকার করে জানান, ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান ও ৩টি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।