দেখার হাওরে নেই পানি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ ডিসেম্বর ২০২২, ৮:৪৭:৪৮ অপরাহ্ন

পানিশূন্য হয়ে পড়েছে সুনামগঞ্জের দেখার হাওর। শুকিয়ে চৌচির হয়ে ওঠা হাওরে বোরো আবাদে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, নভেম্বর মাসে জলমহাল ইজারাদাররা তাদের স্বার্থে হাওরের বাঁধ কেটে পানি ছেড়ে দিয়েছেন। এতে করে বোরো চাষের জমি পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। শুধু দেখার হাওর নয়, জেলার অন্যান্য হাওরগুলোর পানিও দ্রুত নেমেছে। এতে বোরো চাষাবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। তাই বোরো ধানের খেত বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন জেলার কৃষকরা।
ভাটির জনপদ সুনামগঞ্জের একমাত্র ফসল বোরো। জেলার হাওরগুলোতে প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জমিতে বোরো ধান চাষ হয়। যা দেশের খাদ্যভাণ্ডার সমৃদ্ধকরণে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছে। কিন্তু প্রায় বছরই প্রাকৃতিক দুরাযোগসহ নানা কারণে ফসল উৎপাদন বিঘ্নিত হয়। এবারও এমনি একটি বিপর্যয়ের সম্মুখিন সুনামগঞ্জের বোরো চাষ। পত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবরে বলা হয়- সুনামগঞ্জ জেলা সদর, শান্তিগঞ্জ ও দোয়ারাবাজার উপজেলা নিয়ে বিস্তৃত দেখার হাওর। অন্যান্য বছর এ সময়ে হাওর পানিতে টইটম্বুর থাকে। জমিতে এ সময় কমপক্ষে হাঁটুপানি থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে পুরো দেখার হাওরের বোরো আবাদের জমি শুকিয়ে ফাটল ধরেছে। এর মূল কারণ হিসেবে জানা যায়, হাওরের কয়েকটি জলমহালের ইজারাদাররা বিলগুলোয় বেশি মাছ আহরণের আশায় নভেম্বর থেকে বাঁধগুলো কেটে দিয়ে পানি ছেড়ে দেন। এতে করে হাওরের পানি ধীরে ধীরে নেমে শুকিয়ে গিয়েছে। শুধু দেখার হাওর নয়,জেলার অন্যান্য হাওরেরও একই অবস্থা। সরকারি সূত্রে বলা হয়, জেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ১৩৭টি হাওর রয়েছে। কাঙ্খিত পরিমাণে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এবার হাওরে পানি প্রবেশ করেনি। তবে সম্প্রতি মাঝে-মধ্যে অল্প বৃষ্টি হলেও হাওরের তলদেশ এখনও পানিতে ভরেনি। জেলায় এবার বোরো মওসুমে ২ লাখ ২২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু সেই লক্ষ্যমাত্রা কতোটুকু সফল হবে, সেটাই বড় প্রশ্ন।
বলা হয়, দেখার হাওরের বোরো ধান উঠলে দেশের মানুষের ১৫ দিনের খাবার হয়। দেখার হাওরসহ সুনামগঞ্জের সব হাওরে স্বাভাবিক চাষাবাদ যাতে কোন অনাকাক্সিক্ষত কারণে বিঘ্নিত না হয়, সেটা দেখার দায়িত্ব সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের। হাওরাঞ্চলে প্রতি বছরই বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার নিয়ে বিস্তর অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এনিয়ে মাতামাতি হয় প্রচুর। কিন্তু দুর্নীতির মূলোৎপাটন হয় না। এই ধারাবাহিকতার অবসান হোক।