সিলেট মিরর পুরস্কার পেলেন ৫ বিশিষ্ট ব্যক্তি শহর ও গ্রামের পার্থক্য আমাকে পীড়া দেয়: পরিকল্পনামন্ত্রী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০১ জানুয়ারি ২০২৩, ৬:৩৪:৫৮ অপরাহ্ন
![সিলেট মিরর পুরস্কার পেলেন ৫ বিশিষ্ট ব্যক্তি শহর ও গ্রামের পার্থক্য আমাকে পীড়া দেয়: পরিকল্পনামন্ত্রী সিলেট মিরর পুরস্কার পেলেন ৫ বিশিষ্ট ব্যক্তি শহর ও গ্রামের পার্থক্য আমাকে পীড়া দেয়: পরিকল্পনামন্ত্রী](https://sylheterdak.com.bd/wp-content/uploads/2021/01/sylheterdak-5-768x406.jpg)
ডাক ডেস্ক ॥ জমকালো আয়োজনে ‘সিলেট মিরর পুরস্কার ২০২২’ প্রদান করা হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেট নগরীর বিমানবন্দর এলাকার পাঁচ তারকা হোটেল ‘গ্র্যান্ড সিলেট’-এর হল রুমে আয়োজন করা হয় এ অনুষ্ঠানের । অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল তথ্যচিত্র প্রদর্শন, সম্মাননা প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা দারিদ্র্য উল্লেখ করে বলেন, ‘দারিদ্রকে আমি অন্যায় মনে করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও চান দারিদ্র্যজনিত অন্যায় যেন আমরা সবাই মিলে সরিয়ে ফেলি। শহর ও গ্রামের মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে এগুলো আমাকে পীড়া দেয়। সরকার এই দারিদ্র্যজনিত অন্যায় দূর করতে কাজ করছে।’ মন্ত্রী দেশের অবহেলিত অঞ্চল চর, হাওর, উপকূলের দিকে যাতে সম্পদ যায় তার চেষ্টা তিনি করেন বলেও জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সিলেটের বিভিন্ন সমস্যার চিত্র তুলে ধরে তা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান। এসময় মেয়র বলেন, ‘শুধুমাত্র অবকাঠামোগত উন্নয়ন না করে ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য বসবাসযোগ্য সিলেট নগর গড়ে তুলতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
সিলেট মিরর পুরস্কার ২০২২-এর জুরি বোর্ডের আহবায়ক খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘সিলেট তো সবকিছুতেই এগিয়ে আছে। শিক্ষা, ব্যবসা, সংস্কৃতি-সাহিত্য সবখানেই এগিয়ে আছে এ অঞ্চল।’
সিলেট মিরর পুরস্কার-২০২২ এর জুরি বোর্ডের অন্যতম সদস্য নাট্যজন মামুনুর রশীদ বলেন, ‘ ভৌগলিক ও রাজনৈতিক কারণে সিলেট অঞ্চল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক সময় সিলেট ছিল সাহিত্য সংস্কৃতিতে ভরপুর। সিলেট অঞ্চলের গুণী ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকের নাম স্মরণ করে তিনি বলেন, মাঝখানে পিছিয়ে গেলেও সিলেট এখন ফের জেগে উঠছে।’
বার্জার পেইন্টসের প্রধান নির্বাহী রূপালী চৌধুরী তাঁকে জুরি বোর্ডের সদস্য করায় ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘সমাজের মূল্যবোধকে জাগ্রত করতে শুধুমাত্র ঢাকাভিত্তিক নয় যারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাজ করে যান তাদেরকে সিলেট মিরর-এর মতো পুরস্কৃত করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে স্ব স্ব ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য পাঁচ গুণীজনকে এ বছরের সিলেট মিরর পুরস্কার দেওয়া হয়।
পাশাপাশি বিশেষ সম্মাননা জানানো হয় চার সফল ব্যক্তিকে। তারা হলেন ইউনিলিভার বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার, গ্রামীণফোন বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক ইয়াসির আজমান, স্ট্যান্ডার্ড চ্যাটার্ড ব্যাংক বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি নাসের এজাজ বিজয় এবং যুক্তরাজ্যের নারী ফুটবল কোচ এবং কমনওয়েলথ গেমসে ব্রিটেনের রাণীর পক্ষে মশাল বহন করা সিলেটের মেয়ে ইয়াসমিন হুসেনকে।
আবৃত্তি শিল্পী নাজমা পারভীন, সঞ্জয় কুমার নাথ, সাইমুম আঞ্জুম ইভানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সিলেট মিরর সম্পাদক আহমেদ নূর, প্রকাশক ফয়সল আহমদ চৌধুরী ও উপদেষ্টা ফাহিম আহমদ চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
এ বছর জুরি বোর্ডের আহবায়ক ছিলেন সাবেক তত্ত্ববধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। জুরি বোর্ডের সদস্য ছিলেন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরী, খ্যাতিমান নাট্যকার ও অভিনেতা মামুনুর রশীদ, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী এবং সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মুহ: হায়াতুল ইসলাম আকঞ্জি। তারা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে বিচার বিশ্লেষণ করে চারটি ক্যাটাগরিতে যোগ্যদের নির্বাচন করেন।
এ বছর শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মো. আব্দুল আজিজ, সাংবাদিকতায় বর্ষীয়ান সাংবাদিক আব্দুল মালিক চৌধুরী, ক্রীড়াক্ষেত্রে বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ নাজির আহমদ চৌধুরী (ছোট নাজির) এবং সাহিত্যে ধ্রুষ এষ ও আলতাফ শাহনেওয়াজ সিলেট মিরর পুরস্কার পেয়েছেন।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির আহবায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলামসহ বিভিন্ন পর্যায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।