খৃস্টীয় নববর্ষ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০১ জানুয়ারি ২০২৩, ৮:৪৯:০৩ অপরাহ্ন
শুরু হলো আরেকটি বছর। খৃস্টীয় নতুন বছর ২০২৩ এর প্রথম দিন পয়লা জানুয়ারি আজ। গতকাল সন্ধ্যায় পশ্চিমাকাশে ডুবে গেছে ২০২২ এর শেষ দিনের সূর্যটি। কালের গর্ভে বিলীন হয়েছে একটি পঞ্জিকাবর্ষ। নতুন বছরকে বরণ করছে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব। আশাবাদি বিশ্ব মানবের কন্ঠে উচ্চারিত হচ্ছে ‘হেপি নিউ ইয়ার’। সুখ আর সমৃদ্ধির প্রত্যাশা নিয়ে নতুন বছরকে জানানো হচ্ছে সুস্বাগতম। পুরাতনের পালাবদলে নতুনের আগমণ হচ্ছে আমাদের দৈনন্দিন যাপিত জীবনের চিরাচরিত বৈশিষ্ট্য। পুরাতনের জরাজীর্ণতা, ব্যর্থতা, মলিনতাকে ঝেড়ে নতুন প্রত্যয়ে যাত্রাই মানবজীবনের আরাধ্য বিষয়। আর এখানেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে বর্ষবরণের উদ্দামতা পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা।
নতুন বছরকে বরণ করার ইতিহাস পুরনো। গবেষকদের মতে, প্রায় চার হাজার বছর আগে অর্থাৎ খৃস্টপূর্ব ২০০০ খ্রিস্টাব্দে মেসোপটেমিয় সভ্যতায় (বর্তমান ইরাক) প্রথম বর্ষবরণ চালুর বিষয়টি ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে। এর মধ্যে ব্যাবিলনিয় সভ্যতায় বর্ষবরণ প্রথা প্রথমে চালু হয়। তখন খ্রিস্টীয় নববর্ষের মতো জানুয়ারির এক তারিখে তা উদযাপিত হতো না। ব্যাবিলনিয় সভ্যতায় নববর্ষ উদযাপন করা হতো বসন্তের প্রথম দিনে। যেদিন বসন্তের প্রথম চাঁদ উঠত, শুরু হতো বর্ষবরণ। মেসোপটেমিয় সভ্যতা নববর্ষ উদযাপনের পর রোমানদের খৃস্টপূর্ব ১৫৩ সাল থেকে এক জানুয়ারি নববর্ষ পালন করার ইতিহাস রয়েছে। কালের পরিক্রমায় বিশ্বের প্রায় সব দেশে একই দিনে খ্রিস্টীয় নববর্ষ উদযাপিত হয়। আবার এখনও অনেক দেশে ভিন্ন তারিখে নববর্ষ উদযাপনের প্রচলন রয়েছে। জানুয়ারির এক তারিখে খৃস্টীয় নববর্ষ হিসেবে উদযাপন প্রকৃতপক্ষে জুলিয়ান এবং পরবর্তী সময়ে গ্রেগরিয়ান প্রবর্তিত বর্ষপঞ্জির অনুসরণেই হয়ে থাকে। খৃস্টীয় নতুন বছরটি যখন শুরু হয়েছে তখন নানান বিপর্যয় মোকাবেলা করতে হচ্ছে দেশবাসিকে। বৈশ্বিক মহামারি করোনা তিন বছর ধরে একটানা ‘শাসন’ করার পর কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসলেও বর্তমানে আবার নতুন করে আক্রমণের আশংকা, বৈশ্বিক মন্দা, দ্রব্যমূল্যের লাগলামহীন উর্ধগতি-এইসব নিয়েই শুরু হয়েছে নতুন বছর। অর্থাৎ একটা অস্বস্থিকর পরিস্খিতিতে শুরু হয়েছে নতুন বছরটি।
বছর আসে বছর যায়। পুরাতন ক্যালেন্ডারের স্থান দখল করে নতুন ক্যালেন্ডার। তারপরেও অতীত থেকে বিস্মৃত হওয়া যায় না। ফেলে আসা বছরের অনেক পাওয়া না পাওয়া, বেদনা আর সুখ-দুঃখের মিশেল অনুভূতি নিয়েই শুরু হয় নতুন বছর। পেছন ফিরে তাকালে ভেসে ওঠে অনেক স্মৃতিময় দিন। কালের গর্ভে ঠাঁই নেয়া অজস্র ঘটনা দুর্ঘটনা বর্তমান ও ভবিষ্যতের নতুন দীক্ষা দেয়। এমনি করে বিগত বছরে আমাদের ব্যক্তি বা রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির অনেক ঘটনা ঘটেছে। জীবন থেমে থাকে না। মানুষকে এগিয়ে যেতেই হয়। অতীতের ব্যর্থতাই আগামির সাফল্যের ভিত্তি। নতুন বছরের প্রতিটি দিন কাটুক নিরন্তর কর্মে-সাধনায়, প্রত্যাশা ও উদ্দীপনায়। সবার জন্য নববর্ষের অফুরন্ত শুভেচ্ছা।