ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ৮:৩১:৩৬ অপরাহ্ন

আপৎকালীন সংকট মোকাবেলায় সরকারের খাদ্য শস্য সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পথে। জানা গেছে, চলমান আমন মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের সাফল্য নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বেঁধে দেয়া দামে চাল সরবরাহে গড়িমসি করছে মিল মালিকরা। এব্যাপারে কৃষকদের কাছ থেকেও মিলছে না তেমন সাড়া। আমন মৌসুমে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ৩ লাখ টন ধান।
আমন মওসুমের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয় ১৭ই নভেম্বর। চলবে আগামি ২৮ শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। পাঁচ লাখ টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এ পর্যন্ত চাল সংগ্রহ হয়েছে এক লাখ ১৮ হাজার ৬৯ মেট্রিক টন। আর ধান সংগ্রহ হয়েছে প্রায় তিন শ’ মেট্রিক টন। দেশের হাট-বাজারে ধান কেনার উপযুক্ত সময় প্রায় শেষ পর্যায়ে। ধান-চাল মিলিয়ে আট লাখ টন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সরকারের গুদামে এসেছে মাত্র এক লাখ ১৮ হাজার মেট্রিকটনের কিছু বেশি; যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ১৫ শতাংশ। এই অবস্থায় এবার সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ব্যর্থ হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। আমন মওসুমে এবার রেকর্ড উৎপাদনের পরেও ধান-চাল সংগ্রহে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। জানা গেছে, সরকারকে চাল দিচ্ছেন না মিল মালিকরা। অনেকে নানা অজুহাতে শেষ পর্যন্ত চাল দিতে চুক্তির আওতায়ই আসেনি। পর্যাপ্ত ধান-চাল সংগ্রহে এবার বাড়ানো হয়েছে দাম। তারপরেও অনেক ক্ষেত্রে এই দাম বাজার দরের চেয়ে কম বলে কৃষকরা সরকারের কাছে ধান চাল বিক্রি করতে চায় না। এবার প্রতি কেজি চালের সংগ্রহ মূল্য ৪২ টাকা আর ধান ২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া সরকারি গুদামে ধান বিক্রির ক্ষেত্রে কিছু প্রক্রিয়াগত জটিলতা থাকায় কৃষকরা স্থানীয় বাজারেই ধান বিক্রি করতে বেশি আগ্রহি। এক্ষেত্রে কৃষকদের আরও একটি অনীহার কারণ হচ্ছে, ধান দেওয়ায় অ্যাপস ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত ঝক্কি-ঝামেলা। সরকারের ধান-চাল সংগ্রহে ব্যর্থতাকে চালকল মালিকদের কারসাজি বলেও মনে করছেন অনেকে। তারা বলছেন, দাম বাড়ানোর চাপে রাখতে সরকারের গুদামে চাল দিচ্ছেন না মিল মালিকরা।
সব মিলিয়ে খাদ্যশস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বিঘ্নিত হচ্ছে। বিশেষ করে, মিল মালিকরা বরাবরই সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেও চাল দিতে চায় না। তবে কখনো তাদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সেজন্য তারা বেপরোয়া। তাদের কারণে বাজারে চাল সরবরাহে ভাটা পড়েছে। এতে চালের দাম আরও বাড়ছে। পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত ও খাদ্য-নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষে চলতি ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান যাতে সফল হয়, সেই উদ্যোগ নিতে হবে।