জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ৮:০০:৩২ অপরাহ্ন

জনসংখ্যা টেকসই পর্যায়ে রাখতে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে আজ নিয়ন্ত্রণে কর্মতৎপরতা ঝিমিয়ে পড়েছে। অবশ্য বর্তমানে বিশ্বে কোন কোন দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধি রীতিমতো ভয়াবহ আকার নিচ্ছে, -আবার কোথাও জনসংখ্যা বৃদ্ধি নয়, বরং হ্রাস পাওয়াটাই সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তবে সার্বিকভাবে বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধিই ভোগাচ্ছে সরকারগুলোকে।
সত্যি কথা হলো, প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোনো কিছুই ঠিক নয়। একইভাবে অধিক জনসংখ্যা একটি রাষ্ট্রের উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, যদি না ওই জনসংখ্যা জনসম্পদে পরিণত হয়। আর বিশালসংখ্যক জনগণকে সম্পদে পরিণত করাও চাট্টিখানি ব্যাপার নয়। নানা কারণে জনসম্পদ তৈরি অনেক সময় একটি রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। তখন সেই সব দেশে বর্ধিত জনসংখ্যা বোঝা হিসেবে আবির্ভূত হয়। মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যার জন্য খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি সবসময় সরকারের পক্ষে সম্ভব হয় না। আবার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠাও সবার পক্ষে সহজ ব্যাপার নয়। আবার অধিক জনসংখ্যা পরিবেশের ওপরও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এক্ষেত্রে কোনো রাষ্ট্রের জন্য নিজ দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করার লক্ষে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। প্রায় দেশই পরিবার পরিকল্পনা ও সচেতনতা সৃষ্টিকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষে সবচেয়ে কার্যকরী পন্থা হিসেবে গণ্য করে থাকে। বাংলাদেশও অধিক জনসংখ্যার একটি দেশ। জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে বৃহত্তম রাষ্ট্রের তালিকায় অষ্টম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে ১৯৬১ সালে জনসংখ্যা ছিল তিন কোটি।বর্তমানে জনসংখ্যা ৫ গুণেরও বেশি বেড়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হলো ১.৩০ শতাংশ।
উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো,আমাদের দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম শুরু হয় স্বাধীনতার পূর্ব থেকে। প্রথমে বেসরকারি পর্যায়ে এই কার্যক্রম শুরু হলেও পরবর্তীতে তা সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়। এক পর্যায়ে এই কার্যক্রমে বেশ সফলতা আসে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে এই কার্যক্রম চলছে ঢিমে তালে। মাঠ পর্যায়ে সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই ব্যাপারে সচেতনতা নেই বললেই চলে। অনগ্রসর দরিদ্র জনগোষ্ঠী এ ব্যাপারে অন্ধকারেই রয়ে গেছে। এই প্রেক্ষাপটে আমাদের প্রত্যাশা, দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে টেকসই পর্যায়ে রাখতেই যথাযথ উদ্যোগ নেয়া হবে।