বিশ্বনাথে মুখোমুখি যুক্তরাজ্য প্রবাসী দুই ভাই উত্তেজনা : প্রবাসী নারীসহ আটক ২৮
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ৮:৫৪:৩৯ অপরাহ্ন
বিশ্বনাথ (সিলেট) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : জায়গা-জমি নিয়ে থাকা পূর্ব বিরোধের জের ধরে সিলেটের বিশ্বনাথে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন প্রবাসী দুই ভাই। দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্বের কারণে বেশ কিছুদিন ধরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে উপজেলার বিশ্বনাথ ইউনিয়নের পশ্চিম শ্বাসরাম গ্রামে। গতকাল শনিবার সকালে জায়গা-জমি দখল ও পাল্টা দখল নিয়ে দু’পক্ষ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এ সংবাদ শুনে বিশ্বনাথ থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও নারীসহ উভয়পক্ষের ২৮ জনকে আটক করে। এরপর আটককৃতদের মধ্যে ২১ জনকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ এবং শিশু-নারীসহ অপর ৭ জন তাদের আত্মীয়-স্বজনের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিম শ্বাসরাম গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল মন্নান ওরফে মসকুদ আলী ও তার ভাই আব্দুল কদ্দুছ ওরফে চিকন আলীর মধ্যে বিরোধকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষে আদালতে মামলা মোকদ্দমা রয়েছে। বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে স্থানীয় পঞ্চায়েতসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ব্যর্থ হন। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেন পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান। এরই মধ্যে গতকাল শনিবার সকালে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তজনা বিরাজ করলে অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ উভয়পক্ষের প্রবাসীসহ ২৮ জন নারী-পুরুষকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর তাদের মধ্যে ২১ জনকে শনিবার বিকেলে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ এবং মানবিক দিক বিবেচনায় শিশুসহ ৭ নারীকে তাদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পশ্চিম শ্বাসরাম গ্রামের মৃত মরম আলীর পুত্র যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল কদ্দুছ ওরফে চিকন আলী (৬০), একই গ্রামের মৃত কটু মিয়ার পুত্র টুনু মিয়া (৩২), সাজু মিয়া (৩০), মৃত হাফিজ আলীর পুত্র আবুল মিয়া (৪৫), নানু মিয়ার পুত্র শরীফ আহমদ (১৯), আলকাছ আলীর পুত্র জয়নাল মিয়া (৩২), মৃত খুর্শেদ আলীর পুত্র সেবুল আহমদ (৪৮), আর্শ্বব আলীর পুত্র রোহান উদ্দিন জাফর (১৯), মৃত ছিদ্দিক আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগম (৫০), নানু মিয়ার স্ত্রী নাছিমা বেগম (৩০), জুনু মিয়ার স্ত্রী মোর্শেদা বেগম (৩৫), চান্দশীরকাপন গ্রামের মৃত আমজদ আলীর পুত্র ছালেক মিয়া (২৫), ধীতপুর গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর কন্যা রিয়া বেগম রুবি (৩০), দক্ষিণ সুরমা উপজেলার জালালপুর পূর্বভাগ গ্রামের ফজলু মিয়ার পুত্র ফয়ছল আহমদ (২৬), ওসমানীনগর উপজেলার রাঘবপুর গ্রামের আইন উল্লাহর পুত্র রাসেল উল্লাহ (২৪), খাপনখালপাড় গ্রামের মৃত ইসমাইল আলীর পুত্র লাল মিয়া (২৪), মৃত আমজদ খানের পুত্র কামরুল খান (২৪), মোল্লারগাঁও গ্রামের আব্দুল মালিকের পুত্র আব্দুল মতিন (৪৩), সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া গ্রামের মৃত আফিজ আলীর পুত্র কফিল আহমদ (২৩) ও কুবাজপুর গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের পুত্র রাসেল মিয়া (২৪)।
আটকের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘উভয়পক্ষের লোকজন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। খবর পেয়েই আমরা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে উভয়পক্ষের ২৮ জনকে আটক করি। এরপর আটককৃতদের মধ্যে ২১ জনকে আদালতে প্রেরণ করা হয় এবং শিশুসহ ৭ জন মহিলাকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’