বিদ্যালয়ের নতুন পোশাক, নতুন ব্যাগ কিনার ধুম
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ৮:৫৮:৩৮ অপরাহ্ন
আহমাদ সেলিম
নতুন বছর, ঘরে ঘরে নতুন বই। অনেক শিশুর জীবনে শুরু হবে প্রথম ক্লাস। তাই, বাসাবাড়িতে শিশুদের মধ্যে অন্যরকম উদ্দীপনা। সেই উদ্দীপনায় যোগ হয়েছে নতুন বইয়ের সাথে নতুন স্কুলব্যাগ, নতুন কাপড়। প্রিয় সন্তানের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে দোকানে দোকানে তাই ভিড় করছেন অভিভাবকরা।
প্রতিদিন রাত আনুমানিক দশটার আগে বন্ধ হয়ে যায় নগরীর স্কুল ড্রেসের অধিকাংশ দোকানপাট। তবে গতকাল শনিবার রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত দোকানগুলো খোলা ছিলো। শুধু খোলা নয়, রীতিমতো ভিড় ছিলো সব দোকানে। সকাল থেকেই ভিড় থাকলেও সন্ধ্যার পর ভিড় বেড়ে যায়। অধিকাংশ দোকানেই ছোট ছোট শিশুর উপস্থিতি। অভিভাবকের হাত ধরে তারা স্কুলের নতুন পোশাক, ব্যাগসহ আরো কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে এসেছে। কারণ একটাই, আজ রোববার থেকে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশু শ্রেণির ক্লাস শুরু হচ্ছে। নতুন বিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর, নতুন আনন্দ নিয়ে শিশুরা বিদ্যালয়ে যাবে। তাই ঘরে ঘরে শিশুদের সাথে অভিভাবকদের মধ্যেও চলছে একধরনের প্রস্তুতি। আর সেই প্রস্তুতির তালিকায় রয়েছে শিশুর নতুন স্কুলে যাবার জন্য নতুন বই, নতুন পোশাক, নতুন ব্যাগ। সেগুলো কিনতেও রয়েছে নির্দিষ্ট দোকান। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির পর, পোশাকের জন্য দোকানের নামও বলে দেন শিক্ষকরা। সেই পোশাক কিনতে শেষ মুহূর্তে শুরু হয়েছে ছুটাছুটি। শুরু হয়েছে দোকানে দোকানে ভিড়।
নতুন বছরের শুরুতে শিশুদের হাতে হাতে এসেছে নতুন বই। আর যেসকল শিশু বিভিন্ন বেসরকারি কিংবা কিন্ডার গার্টেনে নতুন ভর্তি হয়েছে, তাদের আনন্দটা অন্যরকম রঙিন। তাদের হাতেও এখন নতুন বই। অভিভাবকরা বিভিন্ন লাইব্রেরি থেকে নতুন বই কিনে দেয়ার পর থেকে তারা মহাখুশি। সেই শিশুদেরও স্কুলে যাওয়া শুরু হয়ে গেছে। আবার অধিকাংশ বিদ্যালয়ে আজ রোববার থেকে প্রথম ক্লাস। সেই হিসেবে আজ থেকে বহু শিশুর জীবনে প্রথম স্কুলে যাওয়া শুরু।
গতকাল শনিবার এরকম বহু কোমলমতি শিশুদের ভিড় করতে দেখা গেছে জিন্দাবাজারে, স্কুলের পোশাক বিক্রি করেন-এমনসব দোকানে। জালালাবাদ হাউসের দশটির মতো দোকানেই বিক্রি হয় স্কুল ড্রেস। শহরের ভেতর অধিকাংশ স্কুলের পোশাক এই মার্কেটের দোকানগুলোতে পাওয়া যায়। নতুন বইয়ের সাথে শিক্ষার্থীদের নতুন ব্যাগ, নতুন পোশাক, নতুন প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে অভিভাবকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
মিরাবাজার থেকে অলিউর রহমান নামে একজন অভিভাবক এসেছেন জালালাবাদের পপি স্কুল ড্রেসের দোকানে। প্রথম সন্তান, প্রথম স্কুলে যাবে আজ রোববার থেকে। এবার দরকার নতুন ব্যাগ, নতুন স্কুল ড্রেস। তাই, তিনি পছন্দমতো যেন সবকিছু কিনতে পারেন, এজন্য শিশু পুত্রকে সাথে নিয়ে এসেছেন। কথা হলে তিনি জানান, ‘ভাবলাম সন্ধ্যার পর মানুষ কম হবে, নিরিবিলি কিনতে পারবো। কিন্তু এসে দেখি ঈদের কেনাকাটার মতো অবস্থা। সব দোকানে ভিড়। প্রায় আধাঘণ্টা দাঁড়িয়ে তারপর নতুন পোশাক, নতুন স্কুল ব্যাগ কিনতে হয়েছে।’ আরেক অভিভাবক শারমিন। তিনিও এসেছেন মা-মণি স্কুল ড্রেসের দোকানে, সন্তানের জন্য নতুন পোশাক কিনতে। তবে স্কুলের পোশাকের দোকানে এমন ভিড় জীবনে প্রথম দেখেছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ভিড় দেখা গেছে এস.এ স্কুল ড্রেসসহ প্রায় সবগুলো দোকানে। যেন একটু অবসরের সুযোগ নেই দোকানীদের। পপি স্কুল ড্রেসের কর্ণধার মো. আব্দুল হক চৌধুরী জানান, নতুন বছরের শুরুতে স্কুল ব্যাগ, পোশাক, জুতা কিংবা প্রয়োজনীয় অন্যসব জিনিসপত্রের বেচাকেনা হয়ে থাকে। তবে করোনার কারণে অতীতে তেমন ভালো ব্যবসা হয়নি। অবশ্য এবছরের শুরু থেকে ব্যবসা ভালো হচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা থাকায় রাত করে দোকান বন্ধ করতে হচ্ছে।
এস.এ, স্কুল ড্রেসের কাজ্জাফী আহমদ খানসহ আরো কয়েকজন ব্যবসায়ী বলছেন, জানুয়ারি মাসের শুরু থেকে বর্তমানে বেচাকেনা একটু ভালো। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর সাথে শুরু হয়েছে নতুন করে কেনাকাটার প্রস্তুতি। এজন্য আমাদের দোকানগুলোতে ব্যবসা ভালো হচ্ছে।
দোকানগুলোতে নিজেদের তৈরি পোশাকের সাথে রয়েছে চায়না ব্যাগের পাশাপাশি দেশি ব্যাগের পসরা। এক একটি ব্যাগ ছয়শ’ থেকে পনেরশ’ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। তবে প্রকারভেদে কমেও পাওয়া যাচ্ছে। অবশ্য অভিভাবকদের দাবি গতবছরের তুলনায় এবার ব্যাগের দাম একটু বেশি। তবে ব্যাগ ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগের তুলনায় বেশি দামে কিনতে হয়েছে। তাই বিক্রি দামও একটু বেশি।