হয়রানিমুক্ত সেবা দিতে সিলেটে আরেকটি পাসপোর্ট অফিস স্থাপনের তাগিদ
ওসমানী বিমানবন্দরে ই-গেইট চালু
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ৭:৩১:৩৪ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা ও চট্টগ্রামের পর প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চালু হলো অত্যাধুনিক ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া বা ই-গেইট কার্যক্রম। ই-পাসপোর্টধারীদের স্বয়ংক্রিয় ও দ্রুততম সময়ে ইমিগ্রেশন সেবা দিতে এই বিমানবন্দরে স্থাপন করা হয়েছে ৬টি ই-গেট (ইলেকট্রনিক গেইট)। এর মধ্যে তিনটি প্রবেশের ও তিনটি বহির্গমনের সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গতকাল রোববার দুপুরে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
ই-পাসপোর্টধারীদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে মাত্র ১৮ সেকেন্ড ব্যয় হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টদের মতে, বিমানবন্দরের কার্যক্রম আরও গতিশীল করতেই মূল ই-গেইট কার্যক্রম চালু হয়েছে। ই-পাসপোর্টে থাকা মাইক্রোপ্রসেসর চিপ এবং অ্যান্টেনা স্ক্যান করে ই-গেট পাসপোর্টধারী ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করবে। যাত্রীরা ই-গেটে পাসপোর্ট দেওয়ার পরই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে খুলে যাবে ফটক। কিছু সময়ের মধ্যে শেষ হবে বিদেশগামীদের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম। যাত্রী নিজে নিজে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন। এজন্য কারো মুখাপেক্ষী হতে হবে না।
সূত্রমতে, ই-গেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ফ্লোরা লিমিটেড এরই মধ্যে ই-গেট মেশিন স্থাপনসহ সব কাজ সম্পন্ন করেছে। এই সেবা সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে যাদের ই-পাসপোর্ট আছে তারাই পাবেন।
সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের উপ-পরিচালক মহের উদ্দিন শেখ বলেন, ই-গেট চালু হলে প্রবাসীদের ভোগান্তি লাঘব হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ হবে। প্রবাসীদের কথা চিন্তা করেই সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে।
এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ইমিগ্রেশন সিস্টেমকে আরও নিরাপদ ও দ্রুততর করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশ পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন ও অথেনটিকেশন খুব কম সময়ে হবে।
২০২১ সালের ৩০ জুন ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এবং ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে ই-গেইটের কার্যক্রম চালু হয়। তৃতীয় স্থান হিসেবে রোববার থেকে সিলেটে ই-গেইটের কার্যক্রম চালু হলো।
এছাড়া, যশোরের বেনাপোল ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আরও ই-গেট স্থাপন করা হবে। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এসব ই-গেট স্থাপন করলেও এগুলো পরিচালনা করবে ইমিগ্রেশন বিভাগ।
জানা গেছে, বিশ্বের ১১৮টি দেশে ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করছে। বাংলাদেশ হলো ১১৯তম দেশ। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ই-গেট বাংলাদেশে প্রথম। ই-পাসপোর্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বে পাসপোর্টের ক্ষেত্রে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে প্রবেশ করেছে। ঢাকার পাসপোর্ট অধিদপ্তর থেকে শুরু করে সকল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু রয়েছে।
এদিকে, ই-পাসপোর্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে চান। সিলেটে ই-পাসপোর্ট চালু হওয়াকে মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করে মন্ত্রী বলেন, এর মাধ্যমে আমাদের পাসপোর্টের মান আরো বেড়ে যাবে। বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভিসারও দরকার হবে না। শেখ হাসিনা থাকলে আমরা আরো অনেক উন্নত অবস্থানে চলে যাবো।
সিলেট পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট নিয়ে মানুষের ভোগান্তির বিষয়েও আলোকপাত করেন মন্ত্রী। পাসপোর্টের জন্য হাহাকার। রয়েছে জনবলের সংকট। পাসপোর্ট অফিসের রাস্তাও পুরোপুরি লোডেড থাকে। এখানে বাচ্চাদের নিয়ে এলে সংশ্লিষ্টদের চলাফেরায় খুবই কষ্ট হয়। এজন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আরেকটি পাসপোর্ট অফিস খোলার অনুরোধ করেছি। নতুন অফিস খুললে সেবার মান আরো বৃদ্ধি পাবে বলে তার মন্তব্য। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সবাইকে হয়রানিমুক্ত সেবা দিতে চাই।
উদ্বোধনীতে আরো বক্তব্য রাখেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরে মহাপরিচালক মেজর জেনারেল নুরুল আনোয়ার, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো: মজিবর রহমান।