দিরাইয়ে নানা সংকটে স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ৮:২৬:১৬ অপরাহ্ন

দিরাই (সুনামগঞ্জ) থেকে সংবাদদাতাঃ হাওরবাসীর স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র সেবাস্থল দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট ও দায়িত্বশীলদের উদাসীনতায় স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এতে দুর্ভোগ বেড়েছে রোগীদের। দীর্ঘ সময় ধরে হাসপাতালটিতে সার্জারি, চক্ষু, চর্ম ও যৌন মেডিসিন বিশেষজ্ঞসহ একাধিক পদে চিকিৎসক না থাকায় এসকল বিভাগে আসা রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দিরাইবাসীর একমাত্র সরকারি স্বাস্থ্য সেবাস্থলটি ৩০ শয্যা থেকে ২০১৬ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। প্রয়োজনীয় জনবল ও সরঞ্জামের অভাবে স্বাস্থ্যসেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শয্যা বাড়ানো এবং ভবন নির্মাণ করা হলেও নতুন করে এখনো ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাড়তি জনবল নিয়োগে প্রশাসনিক অনুমোদন না হওয়ায় রোগীরা সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধ বিপাকে ফেলেছে ভর্তি হওয়া রোগী, স্বজন ও দর্শনার্থীদের। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া রোগীরা। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুত চিকিৎসক ও জনবল নিয়োগ দিয়ে হাওরবাসীকে দুর্ভোগ থেকে রেহাই দিবেন এমনটাই দাবী রোগী ও স্বজনদের। জানা যায়, ২০১৬ সালে ৩০ শয্যার সরকারি এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। শয্যা বাড়ানো ও ভবন নির্মাণ করা হলেও প্রশাসনিক অনুমোদন ও জনবল নিয়োগ করা হয়নি। ফলে উপজেলার প্রায় ৩ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা সঠিকভাবে পাচ্ছেন না। জানা যায়, ৫০-শয্যার হাসপাতাল কিন্তু ৩০ শয্যার লোকবলও নেই। একাধিক পদে চিকিৎসক নেই। যারা রয়েছেন তারাও ব্যস্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক এলাকার প্রাইভেট চেম্বারে। সরেজমিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের এম্বুলেন্সটি অযত্নে অবহেলায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। এছাড়াও ভারত সরকার থেকে উপহার পাওয়া ব্যয়বহুল লাইফ সাপোর্ট এম্বুলেন্সটি চালকের অভাবে শুরু থেকেই পড়ে আছে কমপ্লেক্সটির বারান্দায়। স্বজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা স্থানীয় বাসিন্দা আলামিন চৌধুরী বলেন, ২ দিন যাবৎ হাসপাতালে অবস্থান করছি, এখানে সেবার মান খুবই খারাপ, ভর্তি হওয়া রোগীদের মাঝে নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হয়, যা খাওয়ার অনুপযোগী। বাথরুমে পানি নেই। অপরিচ্ছন্ন, ব্যবহার করার অনুপযোগী। কোন নিয়মনীতি নেই, যখন ইচ্ছা ডাক্তার আসেন এবং যান, রোগীর কোন সমস্যা হলে ডাক্তার খুঁজে পাওয়া যায় না। যে কয়টা শয্যা রয়েছে সবগুলোতেই রোগী ভর্তি রয়েছে, এমনকি বারান্দাতেও রোগীরা রয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা মাজেদা খাতুন (৩২) নামের একজন রোগী হাসপাতালে গাইনী ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা সেবা নিতে এলে কাউকে না পেয়ে তিনি বলেন, অনেক খোঁজাখুজি করেও হাসপাতালে গাইনী ডাক্তার পাইনি। তাই, ফিরে যাচ্ছি। আমি গরীব মানুষ কি করবো ভেবে পাচ্ছি না, আমাকে জরুরি ভিত্তিতে গাইনী ডাক্তার দেখাতে হবে। এখন কোন উপায় না পেয়ে সরকারি ডাক্তারদের প্রাইভেট চেম্বারে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ইয়াসিন আরাফাত বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০ শয্যার লোকবলই নেই, আমরা লোকবল বাড়ানোর জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি, আশা করি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।