ছাত্রলীগ : পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ৮:৪৩:৩৪ অপরাহ্ন
মো. দিলওয়ার হোসেন বাবর
ভারত উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে গড়ে উঠা নানা প্রকার ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে সর্বাধিক পরিচিত ও ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন হল ছাত্রলীগ। জন্মলগ্নে এই সংগঠনের নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ। পরবর্তীতে ১৯৫৫ সালে এই সংগঠনের নামকরণ করা হয় পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে এই সংগঠনের নাম হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এই নাম দুটি অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে। আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের প্রতিটি পাতায় পাতায় মিশে আছে এই ছাত্রলীগের নাম। এই দেশ ও জাতির প্রতিটি জাতীয় সংকটময় মুহূর্তে, প্রতিটি রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বাকে বাকে জড়িয়ে আছে ছাত্রলীগের নাম ও অবদান। আমাদের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েও এই দেশের প্রতিটি স্বৈরাচার বিরোধী, গণতান্ত্রিক ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ের আন্দোলনে দেশ ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে, দুর্দিনে ও দুর্বিপাকে এমনকি আর্তমানবতার সেবাতেও এগিয়ে এসেছে এই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
এই ঐতিহ্যবাহী ও সুপ্রাচীন ছাত্র সংগঠন সৃষ্টির পিছনে যাঁর অবদান অবিস্মরণীয় তিনি হলেন আমাদের মহান নেতা, বাঙালি জাতির মুক্তির দূত, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর শ্রম ও সাধনা, অক্লান্ত পরিশ্রম, সৃষ্টিশীল প্রতিভা, অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতা, সুদূরপ্রসারী ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রজ্ঞার ফসল এই ছাত্রলীগ।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সভায় অন্যান্য সমমনা প্রগতিশীল ছাত্র নেতাদের সাথে নিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের সর্ব প্রথম মুসলিম লীগ সরকার বিরোধী ছাত্র সংগঠন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ গঠন করেন। ঐ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নঈমুদ্দিন আহমদ, আব্দুর রহমান চৌধুরী, অলি আহাদ, শেখ আব্দুল আজিজ, শামসুল হক, খালেক নেওয়াজ, আব্দুল মতিন, আজিজ আহমদ, মফিজুর রহমান, নওয়াব আলী, নুরুল কবির, আব্দুল আজিজ, সৈয়দ নুরুল আলম, আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী প্রমুখ।
জন্মলগ্ন থেকেই ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের একটি অঙ্গ সংগঠন হিসেবে কাজ করেছে। ১৯৫৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ হতে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগকে একটি সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক সংগঠনে পরিণত করা হয়। এমতাবস্থায় পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ হতেও মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে এর নামকরণ করা হয় পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ।
পাকিস্তান আমলে তৎকালীন মুসলিম লীগ সরকার বিরোধী বাঙালি জাতির প্রথম ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের সূত্রপাত হয় মহান ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে। ঐ আন্দোলনে ছাত্রলীগ অকুতোভয় সৈনিকের মত অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ১৯৫২ সালের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন, কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা কর্ম পরিষদ গঠন, হরতাল-ধর্মঘট পালন এবং সর্বোপরি বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠায় ছাত্রলীগ ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করে।
১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে মুসলিম লীগকে শোচনীয়ভাবে পরাজয় করা ছিল তৎকালীন সময়ে এই দেশবাসীর একটি বিরাট রাজনৈতিক বিজয়। বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা যায়, তৎকালীন ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ও প্রস্তাবে গঠিত গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্টের চেতনাই পরবর্তীতে পাকিস্তানের জাতীয় রাজনীতিতে ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের ভিত্তি তৈরি করেছিল। ঐ নির্বাচনের বিজয়ে ছাত্রলীগ ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছিল।
১৯৫৮ সালে আয়ুব খান পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি করে দেশব্যাপী রাজনৈতিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ঐ সময় ছাত্রলীগ শিল্প সাহিত্য সংগঠন নামে সাংস্কৃতিক সংগঠন গঠনের মাধ্যমে তাদের সংগঠনের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরে ১৯৬২ সালে আয়ুব খানের শিক্ষা সংকোচন ও শাসনতন্ত্র বিরোধী আন্দোলনে ১৯৬৪ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বিরোধী সহ আয়ুব খানের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ছাত্রলীগ গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করে।
১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ছয় দফা কর্মসূচি ঘোষণা এবং সেই দাবী আদায়ে তাঁর নেতৃত্বে দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু হলে আয়ুব খান আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের উপর শুরু করে অকথ্য নির্যাতন। আন্দোলন দমনে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা সহ একাধিক মিথ্যে মামলা। ১৯৬৯ সালে দেশব্যাপী শুরু হয় গণঅভ্যুত্থান। এই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ও দেশবাসীর সাথে ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্ত করে এবং দেশ ও জাতির পক্ষে তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করে।
১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পিছনে ছাত্রলীগের অবদান ছিল অসামান্য ও অসাধারণ। তখন বাংলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধুমকেতুর মত ছুটে যায়। জনগণের কাছে তারা আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট চায়। ঐ নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মী নিজেকে উজাড় করে ছয় দফার পক্ষে কাজ করে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করে।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামে ছাত্রলীগের অবদান ছিল অপরিসীম। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়, ২ মার্চ কলাভবনে ছাত্রলীগের সভায় স্বাধীন বাংলার মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলিত হয় এবং ৩ মার্চ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ও তাঁর উপস্থিতিতে স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে পল্টন ময়দানে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ, জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা মুজিব বাহিনী গঠনের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে ৯ মাস যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জন করে স্বাধীন ও সার্বভৌম লাল সবুজের বাংলাদেশ।
পরবর্তীতে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে জাতির পিতার নির্দেশে ছাত্রলীগ তৎকালীন সরকারকে সাধ্যমত সহযোগিতা করে। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে শাহাদৎবরণ করলে তৎকালীন বৈরী পরিবেশেও ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে রাজপথে সোচ্চার ছিল।
১৯৮১ সালের ৭ মে জননেত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করলে ছাত্রলীগ যথাযথ ভূমিকা পালন করে। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ বাংলাদেশে সামরিক শাসন জারি হলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ স্বৈরাচার বিরোধী সেই আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ছাত্রলীগ তখন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা বাংলায় দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলে। অনেক ছাত্রলীগ কর্মীর রক্তের বিনিময়ে পরিশেষে ১৯৯০ এর সফল গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হলে গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠিত হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন ছাত্রলীগ বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়সহ দেশ ও জাতির যে কোন সংকটময় মুহূর্তে ও দুর্বিপাকে এবং আর্তমানবতার সেবায় ছুটে এসে জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সর্বাগ্রে। ১৯৯৮ সালের প্রলয়ংকারী বন্যায় সমগ্র দেশ প্রায় ৩ মাস জলমগ্ন ছিল। গ্রামগঞ্জে সাধারণ মানুষের কষ্টের সীমা ছিল না।
তখন অনেকেই বলেছিল রোগে, শোকে, অনাহারে দেশে লক্ষ লক্ষ লোক মারা যাবে। কিন্তু সেদিন আমরা দেখেছি তৎকালীন সরকারের সময়োপযোগী ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে একটি মানুষও না খেয়ে মারা যায়নি। ঐ সময়ে দেশের ক্রান্তি লগ্নে সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতার্মী, অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী ও সেবাধর্মী সংস্থা ও সংগঠনের পাশাপাশি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সেবা করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
১৯৯২ সালের ২৯ জানুয়ারি শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গঠিত হয় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। তৎকালীন সময়ে রাজনৈতিক প্রতিকূল পরিবেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে জনমত গঠনে ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কার্যক্রম শুরু করে। ২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি ঘোষিত হয় ঐ ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়। উচ্চ আদালতের বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর ঐ রায়ের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। ঐ রায় কার্যকরের ব্যাপারেও দেশব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির পাশাপাশি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করে।
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশে সামরিক শাসন জারির মাধ্যমে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হলে ১৬ জুলাই জননেত্রী শেখ হাসিনাকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে বন্দী করা হয়। তখন দেশব্যাপী ছাত্রলীগ কর্মীরা কঠোরভাবে প্রতিবাদী হয়ে অগ্নিমূর্তি ধারণ করে। সেই ছাত্রলীগ কর্মীরা ধারাবাহিকভাবে মিছিল, সভা ও রাজনৈতিক প্রতিবাদ অব্যাহত রাখে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়া সংগঠন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গঠনমূলক ও তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে তৎকালীন সরকার নমনীয় হয়ে ২০০৮ সালের ১১ জুন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নি:শর্ত মুক্তি প্রদান করে।
১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বঙ্গবন্ধু হত্যামামলার প্রথম রায় ঘোষিত হয়। বিভিন্ন বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর ৫ খুনীর রায় কার্যকর হয়। ১৯৯৮ সালের পর থেকে এই রায় কার্যকরের জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাজপথে দীর্ঘ দিন নানা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছে।
বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য যে ‘ভিশন ২০২১’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল তা বাস্তবায়নের জন্যও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের জন্যও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এখন থেকেই বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করছে।
সাম্প্রতিককালে করোনা মহামারির সময়েও ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা করোনাকালীন লকডাউনের সময়ে বিভিন্ন প্রকার খাদ্যসামগ্রী ও ঔষধ পত্র মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া, করোনায় মৃত্যুবরণকারীদের লাশ দাফনে অংশগ্রহণ করে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে। তাছাড়াও আমরা দেখেছি করোনাকালীন সময়ে শ্রমিকের অভাবে হাওরাঞ্চলে কৃষকের শষ্য কর্তনে সহযোগিতা করে মানবিক দায়িত্ব পালন করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
সুতরাং আমরা দেখতে পাই বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ছাত্রলীগ সেই পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে অদ্যাবধি দেশের জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবি দাওয়া ও অধিকার আদায়ের আন্দোলনে, সকল প্রকার গণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে, জনগণের ভোট ও ভাতের দাবী আদায়ের আন্দোলনে, যে কোন জাতীয় সংকটময় মুহূর্তে, দুর্দিনে ও দুর্বিপাকে, সর্বোপরি জনগণের আর্তমানবতার সেবায় তাদের পাশে দাঁড়িয়ে অতন্দ্র প্রহরীর মত কাজ করেছে। আমরা আশা করি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অতীতের মত আগামীতেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ‘ভিশন ২০৪১’ বাস্তবায়ন করে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
লেখক : শিক্ষক ও কলামিস্ট।