অবৈধ ইটভাটা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ৭:৩৭:০৩ অপরাহ্ন
অবৈধ ও পরিবেশ দূষণকারী ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা পরিবেশ দূষণকারী ইটভাটার দূষণ নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ ইটভাটা বন্ধ এবং প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহার রোধের লক্ষে সম্প্রতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এক সভায় ডিসিদের এই নবর্দেশ দেয়া হয়।এ সময় সরকার ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০২৫ সাল নাগাদ সব সরকারি কাজে শতভাগ পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট ব্যবহার নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
ইট তৈরির ভরা মওসুম চলছে এখন। এখানে ওখানে গড়ে ওঠেছে বৈধ অবৈধ ইটভাটা। অথচ ইটভাটা হচ্ছে বায়ুদূষণের অন্যতম উৎস। সারা দেশে ইটভাটাগুলো চলছে মালিকদের খেয়ালখুশিমতো। ইটভাটার মালিকদের অনেকেই আইনকানুনের তোয়াক্কা করেন না। পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে সারা দেশে ইটভাটার সংখ্যা আট হাজার ৩৩টি। এগুলোর মধ্যে দুই হাজার ৫১৩টিরই পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। তাছাড়া সরকার ইতোপূর্বে ইটভাটায় জ্বালানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি গ্রহণের যে শর্ত বেঁধে দিয়েছিলো, প্রায় তিন হাজার ইটভাটা সেই প্রযুক্তি গ্রহণ করেনি। এই ইটভাটাগুলোও আইনত অবৈধ। এই প্রেক্ষাপটে ইটভাটার জ্বালানি হিসাবে গাছপালা কেটে কাঠ পোড়ানো বন্ধ করাসহ অবৈধ ও পরিবেশ দূষণকারী ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এখানে উল্লেখ করা জরুরি যে, পরিবেশসম্মতভাবে ইটভাটা পরিচালনা করার জন্য দেশে রয়েছে ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩। তার প্রয়োগ নেই বললেই চলে। তাছাড়া প্রচলিত পরিবেশ সংরক্ষণ আইনেরও স্বাভাবিক প্রয়োগ নিশ্চিত করা হলে পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া দেশে একটিও ইটভাটা চালু করা সম্ভব ছিল না।
মাটি পুড়িয়ে তৈরি করা হয় ইট। কৃষিজমির উপরিভাগের উর্বর মাটি ইট তৈরিতে ব্যবহার করায় প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করায় বনজ সম্পদ ধংস হচ্ছে। তাছাড়া ইট পোড়ানোর ধোঁয়া থেকে ইটভাটার পার্শ্ববর্তী এলাকার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। যে কারণে ইটখোলার আশপাশে বসবাসরত মানুষ বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।সব মিলিয়ে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর পাশাপাশি ইটের বিকল্প ব্লক ব্যবহারে সকলকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।