প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ৭:৫৬:৪৮ অপরাহ্ন
অবশেষে চালু হচ্ছে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম। চলতি বছরই পরীক্ষামূলকভাবে চালু হচ্ছে দুই বছর মেয়াদি এই শিক্ষা কার্যক্রম। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। এই কার্যক্রমের আওতায় আসবে চার বছরের বেশি বয়সি শিশুরা। এ জন্য প্রয়োজনীয় শিখনসামগ্রী ও শিক্ষক নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে। দেশে এত দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পাঁচ থেকে ছয় বছর বয়সি শিশুদের জন্য এক বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাস্তর চালু ছিল। যা ‘শিশু শ্রেণি’ নামে পরিচিত।
প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু প্রথম শ্রণি থেকে। যেখানে ভর্তির সুযোগ পায় ছয় বছরের বেশি বয়সের শিশুরা। তবে কিন্ডারগার্টেন বা বিশেষায়িত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে প্রথম শ্রেণির আগে দুই বা তিন বছর করে লেখা পড়া করতে হয় শিশুদের। আর সেখানে ভর্তি করতে হয় মোটামুটি তিন বছরের শিশুদের। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা আরম্ভের পূর্বে ছয় বছরের কম বয়সের শিশুদের জন্য আনুষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থা। এর উদ্দেশ্যে হচ্ছে- তিন থেকে ছয় বছর বয়সী শিশুদের শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী তাদের যত্ন, বেড়ে উঠা শিশু অধিকার নিশ্চিত করা, খেলাধুলা, আনন্দ, অক্ষরজ্ঞান এবং গণনার হাতেখড়ির মাধ্যমে তাদের উন্নয়ন এবং শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হওয়ার সুযোগ তৈরি করা। সেই পরিকল্পনা থেকেই দেশে প্রথম বারের মতো ২০১০ সালে স্বল্প পরিসরে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু হয়। এরপর ২০১৪ সালে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু হয়। এবার চালু হচ্ছে দুই বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিকশিক্ষা। এ বছর তিন হাজার ২১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই কার্যক্রম চালু হবে। এরপর ২০২৪ সালে তা দেশের সব প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চালু হবে। অর্থাৎ এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়িত হলে শিশুর বয়স চার বছরের বেশি হলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাবে এবং ছয় বছর বয়স পর্যন্ত প্রাক-প্রাথমিক স্তরে পড়বে। ছয় বছরের বেশি হলে তারা প্রথম শ্রেণিতে যাবে।
দেশে প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৬ বাজারের কাছাকাছি। সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দু’বছরের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু হলে শিশুদের ঝরে পড়া রোধ হবে, শিক্ষার মান বাড়বে। এক অর্থে কিন্ডারগার্টেন বা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোর সঙ্গে সরকারি স্কুলের পার্থক্য ঘুচে যাবে- এমনটি আশা করাই যায়। তবে তার জন্য দরকার সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিকতা, সদিচ্ছা।