কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্স আছে, চালক নেই
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ৯:২৮:৩৮ অপরাহ্ন

আবিদুর রহমান, কোম্পানীগঞ্জ থেকে : কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জনবল সংকটের খবর বেশ পুরনো। এক্স-রে মেশিন বিকল হয়ে পড়ে আছে ১৬ বছর ধরে। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর থেকে হয়নি প্রসূতি অস্ত্রোপচার। এখানে একটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও নেই তার চালক। গত ১৯ মাস ধরে চালকের পদটি শূন্য রয়েছে। এতে অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার মানুষ।
জানা যায়, ১৯৯৭ সালে ৩১ শয্যা নিয়ে চালু হয় কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। শুরু থেকেই হাসপাতালটি জনগণের কাঙিক্ষত সেবা দিতে ব্যর্থ। জনবল সংকট নিয়েই চলছে এটি। ২০১৯ সালে এটিকে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০২২ এর এপ্রিলে। তবে, ৫০ শয্যার কার্যক্রম এখনও চালু হয়নি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি অ্যাম্বুলেন্স দেয় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। ২০২১ সালের ২০ জুন অ্যাম্বুলেন্স চালক মামুন বদলি হয়ে যাওয়ার পর থেকে তাঁর পদটি শূন্য। চালক না থাকায় গ্যারেজে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে অ্যাম্বুলেন্সটি। এ অবস্থায় প্রতিনিয়ত রোগী ও তাদের স্বজনেরা পড়ছেন বিপাকে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক লুৎফুর রহমান জানান, জরুরি বিভাগ এবং ভর্তিকৃত রোগী থেকে গড়ে ৫-৭ জন রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালে রেফার করা হয়। অ্যাম্বুলেন্স চালু না থাকায় তাদেরকে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
গতকাল বুধবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, রোড এক্সিডেন্টে আহত জাকারিয়া নামে এক শিশুকে তাঁর স্বজনরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এসেছেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে ওসমানীতে রেফার করেন। স্বজনরা তখন অ্যাম্বুলেন্স পেতে মরিয়া ছিল। না পেয়ে তারা সিএনজিতে করে সিলেট ছুটেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শামীম আহমদ বলেন, হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহন। কিন্তু চালক না থাকার কারণে দীর্ঘদিন ধরে লোকজন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তাই উপজেলা কমপ্লেক্সে দ্রুত একজন অ্যাম্বুলেন্স চালক দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ কামরুজ্জামান রাসেল জানান, চালক মামুনের বদলির পর থেকে পদটি শূন্য। কিছুদিন তিনি তার চালক দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি চালু রেখেছিলেন। কিন্তু, ইউএইচসি (উপজেলা হেল্থ কেয়ার) এর নির্দেশনার কারণে সেটি চালু রাখা যায়নি। তিনি বলেন, জরুরি মুহূর্তে রোগীর জন্য অ্যাম্বুলেন্স সেবা না পাওয়াটা কষ্টদায়ক ব্যাপার। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
এ বিষয়ে সিলেট সিভিল সার্জন ডা. এস এম শাহরিয়ার বলেন, চালক নিয়োগের বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেখে। আমরা চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি। জনবল এবং যন্ত্রপাতি পেলে হাসপাতালের ৫০ শয্যার কার্যক্রম চালু হবে বলেও জানান তিনি।