গোলাপগঞ্জে দেওয়ানের পুল নিয়ে এলজিইডির গণশুনানী অনুষ্ঠিত
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জানুয়ারি ২০২৩, ৮:৩৭:৩৩ অপরাহ্ন
গোলাপগঞ্জ (সিলেট) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : গোলাপগঞ্জে দেওয়ানের পুল ভাঙ্গা ও না ভাঙ্গা প্রসঙ্গ নিয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)-এর উদ্যোগে গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা ১১ টায় ব্রীজ সংলগ্ন মাঠে তিন ইউনিয়নের ব্যাপক সংখ্যক মানুষের সামনে এ গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়।
গণশুনানীতে ব্রীজের সুবিধাভোগী স্থানীয় লক্ষীপাশা, ঢাকা দক্ষিণ ও ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ব্যাপক সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। লক্ষীপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহতাব উদ্দিন জেবুলের সভাপতিত্বে, ইউপি সদস্য এম এ আহাদ ও এনামুল হক আবুলের পরিচালনায় আয়োজিত গণশুনানীতে অংশ নেন- গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম, ভাইস চেয়ারম্যান নাজিরা বেগম শিলা, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মিছবাহ উদ্দিন, সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ ও গোলাপগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি সাংবাদিক আব্দুল আহাদ, ফুলবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হানিফ, ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ইউপি সদস্য সেলিম আহমদ, ফুলবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী নুরুল আলম, শ্রীবহরের মজনু মিয়া প্রমুখ।
গণশুনানীতে এলজিইডি সিলেট-এর নির্বাহী প্রকৌশলী ইনামুল কবির, গোলাপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
‘গোলাপগঞ্জে ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে মুঘল স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন দেওয়ানের পুল’-শিরোনামে একটি রিপোর্ট দৈনিক সিলেটের ডাক-সহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। পত্রিকায় খবরটি প্রকাশের পর সেতুটি রক্ষায় প্রতিবাদী হয়ে উঠেন এলাকার ঐতিহ্য সচেতন ব্যক্তিবর্গ। এরপর গত ২৯ ডিসেম্বর ব্রীজ ভাঙ্গার কাজ সাময়িক স্থগিত রাখে এলজিইডি।
ইতিহাস বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, উপজেলার বারকোট গ্রামের শেষ সীমানায় প্রায় দুইশ’ বছর পূর্বে পুলটি নির্মিত হয়েছিল।
রেকর্ড অনুযায়ী, মুঘল শাসনামলে সম্রাট মুহম্মদ শাহ এর রাজত্বকালে অল্পকালের জন্য সিলেটের দেওয়ান (রাজস্ব কর্মকর্তা) নিযুক্ত হয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে সিলেট আসেন দেওয়ান গোলাব রাম (মতান্তরে গোলাব রায়)। এ সময় সিলেট অঞ্চলের ফৌজদার ছিলেন সমসের খান এবং সারা বাংলার শাসনকর্তা ছিলেন সুজা উদ্দিন খান । দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই এই ধর্মপ্রাণ দেওয়ান গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিণে বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক শ্রী চৈতন্যের পিতৃভূমি সম্পর্কে অবগত হন। দেওয়ানের নির্দেশে তৎকালীন সময়ে সিলেট থেকে ঢাকাদক্ষিণ পর্যন্ত সড়ক ও সেতু নির্মিত হয়। এ সড়ক পথে ঢাকাদক্ষিণ এসে দেওয়ান শ্রী চৈতন্যের পিতৃভূমিতে এক মন্দির স্থাপন করেন, এর সামনে এক দীঘি খনন করান। হেতিমগঞ্জ থেকে ঢাকাদক্ষিণগামী সড়কটি আজো দেওয়ানের সড়ক নামে পরিচিত। এ সড়কে দেওয়ানের পুলটি গোলাপগঞ্জবাসীর নিকট মুঘল স্থাপত্য রীতির একটি নিদর্শন ছিল। প্রাচীন দলিল ও রেকর্ডপত্রে তারই সাক্ষ্য বহন করে।