শিক্ষা উপকরণের দাম বৃদ্ধি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জানুয়ারি ২০২৩, ৮:৪৪:০৩ অপরাহ্ন

দুঃসংবাদের ভীড়ে যেন হাবুডুবু খাচ্ছি আমরা। এর মধ্যে কোন খবরটিকে সামনে এনে দাঁড় করানো যায়, সেটা বলা মুশকিল। দীর্ঘমেয়াদি বিপর্যয় করোনার পর ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক মন্দার ‘হুমকি’। আছে দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। সব মিলিয়ে মানুষের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। পণ্যের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সর্বশেষ সংযুক্ত হয়েছে শিক্ষা উপকরণের দাম বৃদ্ধি। এতে বেড়েছে শিক্ষা-ব্যয়। উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা।
বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যায়, করোনা মহামারির আঘাতে আয় কমেছে মানুষের। পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়ের। প্রতিকূলতার মধ্যেও যারা এখনো ঝরে পড়েনি, তাদের জন্য এবার দুঃসংবাদ নিয়ে এসেছে খাতা-কলমসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি। হঠাৎ করেই বাজারে দাম বেড়েছে সব ধরনের শিক্ষা উপকরণের। বেড়েছে বই ও খাতার মূল উপকরণ কাগজের দাম। বিভিন্ন ধরনের তৈরি খাতার দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চিকিৎসাবিদ্যা, প্রকৌশল শিক্ষা ও আইনের বইয়ের দাম। বিভিন্ন বিদেশি লেখকের মূল বই বাজারে এখন মিলছে না। ফটোকপি বইয়ের দাম বেড়েছে। দাম বৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে- কাগজ, খাতা, পেন্সিল, মার্কার, স্কুল ফাইল, অফিস ফাইল, বাচ্চাদের লেখার স্লেট, ক্যালকুলেটর, সাদা বোর্ড, জ্যামিতি বক্স, টালি খাতা, কলম বক্স, স্কেল, পরীক্ষায় ব্যবহৃত ক্লিপবোর্ড, কালি ইত্যাদি। অনেকটা বিনা কারণেই শিক্ষা উপকরণের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে অনেকের অভিমত। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, আমদানিকৃত কাগজের দাম কিছুটা বাড়তে পারে, তবে অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়ানোর কোন যুক্তি নেই। কারণ, করোনায় দেড় বছরের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। তখন খাতা-কলমের ব্যবহারও অনেকটাই কমে গিয়েছিলো। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়ে দেয় ব্যবসায়িরা। অনেকের কাছেই গত বছরের খাতা মজুত থাকলেও এখন তারাও আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে বাড়তি দামে খাতা কাগজ বিক্রি করছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
করোনায় অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে শিক্ষার্থীদের। পাশাপাশি অভিভাবকদের যথারীতি সেশন ফি টিউশন ফি ইত্যাদি পরিশোধ করতে হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিক্ষার প্রধান উপকরণ খাতা-কলমের দাম যাতে ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে, সেদিকে নজর দেয়া জরুরি। করোনায় শিক্ষার্থীদের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ করা সম্ভব নয়। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার প্রধান উপকরণের দাম সহনীয় রাখতে সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলকে এগিয়ে আসতে হবে।