গণঅভ্যুত্থান দিবস
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ৭:০৬:৫৭ অপরাহ্ন
আজ ২৪ শে জানুয়ারি, ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস। আমাদের জাতীয় জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এক তাৎপর্যপূর্ণ সূচনা। মহান স্বাধীনতা অর্জনের মাইলফলক। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা, পরবর্তীতে ১১ দফা ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের পথ বেয়েই রক্তাক্ত সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি অর্জন করে মহান স্বাধীনতা। তাই অপশাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রামে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান আজও দেশের মানুষের কাছে অনুপ্রেণার উৎস। মূলত ১৯৬৯-এর চৌঠা জানুয়ারি সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফা কর্মসূচি গণঅভ্যুত্থানের পথ সৃষ্টি করেছিলো।
২০ শে জানুয়ারি পাক পুলিশের গুলিতে শহীদ হন গণঅভ্যুত্থানের নায়ক শহীদ আমানুল্লাহ আসাদুজ্জামান (শহীদ আসাদ)। আসাদের আত্মদানের পর তার রক্তামাখা শার্ট নিয়ে তাৎক্ষণিক মিছিল বের করে ঢাকা বিশ্ব্যবিদ্যালয়ের ছাত্ররা। শুরু হয় তীব্র আন্দোলন। ২১, ২২ ও ২৩ জানুয়ারি শোক পালন করে সারা দেশ। শহীদ আসাদের রক্তের সিঁড়ি বেয়ে সারাদেশে আন্দোলনের আগুন জ্বলে ওঠে। সূচনা হয় গণঅভ্যুত্থানের। ২৪ শে জানুয়ারি সংগ্রামী জনতা পাকিস্তানি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে শাসকগোষ্ঠীর দমন-পীড়ন ও সান্ধ্য আইন উপেক্ষা করে মিছিল বের করে। মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণে নিহত হন নবকুমার ইনস্টিটিউশনের নবম শ্রেণির ছাত্র মতিউর রহমান। গণজোয়ারে স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকলকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। এই বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠন ও স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে এই গণঅভ্যুত্থাণকে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
রাষ্ট্র বিজ্ঞানীদের মতে, একটা দেশের ব্যাপক সংখ্যক জনগণ যখন শাসকের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, পদচ্যূত করে, সেটাই গণঅভ্যুত্থান। উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক মুক্তি সংগ্রামের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। অপশাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আজকের এইতিহাসিক দিনে আমাদের গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার শপথ নিতে হবে।