আর ভর্তুকি নয়
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ৮:২৫:০৩ অপরাহ্ন
দাম বেড়েছে গ্যাসের। ইতোপূর্বে বৃদ্ধি পায় বিদ্যুতের দাম। এবার বাড়লো গ্যাসের। সম্ভবত এই খবরটি আজকাল খুব একটা নাড়া দেয় না মানুষকে। কারণ এই সেবাখাতগুলোর দাম তো অহরহ বাড়ছেই। এতে গ্রাহক সাধারণের দুর্ভোগে যে নতুন মাত্রা যুক্ত হচ্ছে সেটা কারও বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না। যদিও এ দুর্ভোগ নিয়ে সরকারের তেমন কোন গরজ নেই। বরং খোদ প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ উৎপাদন ও গ্যাস কেনার প্রকৃত ব্যয় পরিশোধের জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন।
বিদ্যুতের দাম গড়ে পাঁচ শতাংশ বাড়ানোর এক সপ্তাহ পর গত ১৮ই জানুয়ারি সরকার নির্বাহী আদেশে গ্যাসের দাম বাড়ায়। সত্যি বলতে কি, বিভিন্ন সেবাখাতের দাম বাড়ানো হয় যখন তখন। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে এই ধারা। এর পেছনে আছে নানা অজুহাত। এর মধ্যে প্রধান অজুহাত হচ্ছে, সরকারের ভর্তুকি কমানো। অর্থাৎ বেশি দামে কিনে কম দামে গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করা। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে আর ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব হবে না। বছরের পর বছর এই একই অজুহাতে বাড়ানো হচ্ছে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদ্যুতের কিংবা গ্যাসের দাম বাড়ানোর এটা সঠিক সময় নয়। এমনিতেই এখন দেশে মূল্যস্ফীতির চাপ বেশি। শিল্প পর্যায়ে গ্যাসের দাম বাড়ানোর কারণে তা আরও বাড়তে পারে। তারা বলেন, দেশের শিল্পকারখানাগুলো অভ্যন্তরীণভাবে গ্যাসের দাম বাড়ানোর চাপ মোকাবেলা কনতে না পারলে তারা শেষমেশ ভোক্তাদের কাঁধেই এই দায় চাপিয়ে দেবে। যে কারণে বাড়বে নিত্যপণ্যের দাম আরেক দফা। সরকার বলছে, কৃচ্ছ্রসাধনে ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। প্রথমে বিদ্যুতের ভর্তুকি কমানো হবে। জানা যায়, বর্তমানে বিদ্যুতের ভর্তুকি ১৭ হাজার কোটি টাকা এবং গ্যাসের ভর্তুকি ছয় হাজার কোটি টাকা।
আসল কথা হলো, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমা মাত্রই দেশে যাতে মূল্য সমন্বয় করা হয় তা নিশ্চত করতে হবে। এছাড়া, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইনের সংশোধনী সংসদে পাস হলে প্রতি মাসে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম সংশোধনের নীতিমালা হবে বলে ইতোপূর্বে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী। আর অনেকের মতে, বিকল্প উপায়ে গ্যাসের দাম না বাড়িয়ে বরং কমানোও সম্ভব। আর অস্বাভাবিক সিস্টেম লসের নামে পুকুরচুরি কমানো গেলেও দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হয় না। কিন্তু সরকার সেদিকে যায় নি, এটাই সবচেয়ে দুঃখের।