বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস আজ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ৭:৪৮:১৪ অপরাহ্ন
বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস আজ। প্রতি বছর জানুয়ারি মাসের শেষ রোববার দিবসটি পালিত হয় সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও। এই দিবসটি পালনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে- কুষ্ঠ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা, এই রোগে আক্রান্ত লোকদের সাহায্য করা এবং এই রোগে আক্রান্ত লোকদের যত্ন নেওয়ার জন্য অন্য লোকদের সচেতন করে তোলা। কুষ্ঠ একটি অতি প্রাচীন দীর্ঘস্থায়ী সংক্রামক রোগ। এতে আক্রান্তদের ত্বকের ঘা প্রকট হয়ে যায় এবং হাত ও পায়ের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমাদের সমাজে কুষ্ঠ রোগীদের ভালো চোখে দেখা হয় না। তবে কুষ্ঠ রোগ এখন আর দুরারোগ্য নয়। এর নিরাময় ও চিকিৎসা সম্ভব।
জানা গেছে, সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক কুষ্ঠ বিরোধী সংগঠনগুলো সর্বপ্রথম এই দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেয় ১৯৫৪ সালে। মানব সভ্যতার বিকাশ ও সামাজিক উন্নতির সাথে সাথে উন্নত দেশগুলোতে এই রোগের প্রাদুর্ভাব কমে এসেছে। কিন্তু আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এখনও আছে কুষ্ঠ রোগের প্রাদুর্ভাব। বর্তমানে বাংলাদেশসহ ব্রাজিল, ভারত, নেপাল, মোজাম্বিক, এঙ্গোলা, কঙ্গো এবং তানজানিয়ায় কুষ্ঠ রোগি শনাক্ত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশে প্রতি বছর সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার নতুন কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হচ্ছে। এদের মধ্যে আট থেকে দশ শতাংশ রোগী সময়মতো চিকিৎসার অভাবে পরবর্তীতে পঙ্গুত্ব বরণ করে। কুষ্ঠ সাধারণত চিকিৎসাবিহীন সংক্রামক ধরনের রোগীর হাঁচি কাশির মাধ্যমে ছড়ায় এবং আক্রান্ত রোগীর প্রান্তিক স্নায়ুর কার্যকারিতা নষ্ট করে। ফলে আঙুল বাঁকা হওয়া, মুখের প্যারালাইসিস, বেদনাহীন ঘা ইত্যাদি বিকলাঙ্গতা দেখা দেয়। রোগির সামাজিক সমস্যার চেয়েও মানসিক ও সামাজিক সমস্যা এবং বৈষম্য প্রকটরূপে দেখা দেয়। চামড়ার অবশ দাগ দিয়ে শুরু হয় এই রোগ। অনেক সময় দানা গুটিও দেখা দেয়। তবে দুর্বল প্রতিরোধ ক্ষমতার অধিকারী মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয় বেশি। দারিদ্র্য, অপুষ্টি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এই রোগের সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়।
সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে বাংলাদেশে কুষ্ঠ রোগকে খুব একটা গুরুত্ব দেয়া হচ্ছেনা বলেই মনে হয়। বাজেট স্বল্পতার কারণে কুষ্ঠ রোগ বিরোধী কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাছাড়া, প্রত্যন্ত অঞ্চলে রোগি খুঁজে বের করার জন্য প্রশিক্ষিত লোকবলের অভাবসহ রয়েছে এই রোগকে ঘিরে কুসংস্কার। চিকিৎসকদের কুষ্ঠ বিষয়ে ধারণা কম থাকায় রোগী চিহ্নিত করা ও চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে কুষ্ঠ রোগের কারণে বিকলাঙ্গদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধার অভাব রয়েছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, প্রধানমন্ত্রী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে কুষ্ঠমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন ইতোমধ্যেই। আমরা আশাবাদি সরকার সেদিকেই এগিয়ে যাবে।