ওসমানীনগরে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী খুন কথিত প্রেমিক পুলিশ হেফাজতে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১০ মার্চ ২০২৩, ৭:৫০:২৯ অপরাহ্ন
ওসমানীনগর (সিলেট ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : ওসমানীনগরে দিপা রানী সিংহ (১৪) নামের অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার তাজপুর বাজারে স্কুল রোডে তাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান অরুনোদয় পাল ঝলকের নির্মাণাধীন একতলা ভবনের ছাদে লাশটি পাওয়া যায়। নিহত দিপা কুমিল্লা জেলার বরুড়া থানার তলা গ্রামের পীযুষ চন্দ্র সিংহের মেয়ে ও তাজপুর মঙ্গল চন্ডি নিশি কান্ত সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। নিহত দিপা তার পরিবারের সাথে দুই বছর ধরে স্কুল রোডের দুলিয়ারবন্দ এলাকায় চেয়ারম্যান ঝলকের মালিকানাধীন বহুতল ভবনের চারতলায় বসবাস করে আসছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত দিপার কথিত প্রেমিক বালাগঞ্জের ইমনকে পুলিশী হেফাজতে আনা হয়েছে। প্রেমঘটিত কারণে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে কিনা পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার রাতের খাবের খেয়ে পিতা পীযুষ চন্দ্র সিংহের সাথে একই কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে দিপা সিংহ। ভোর ৫টার দিকে পিতা পীযুষ সিংহ ঘুম থেকে জেগে দেখেন মেয়ে পাশে নেই। ঘরের মূল দরজা ও কলাপসিবল গেইট খোলা। মা ও বড় ভাইয়ের মোবাইল এবং ঘরের চাবি নির্দিষ্ট স্থানে নেই। পরিহিত কাপড় পরিবর্তন করে নতুন জামা কাপড় পরে দিপা কোথায় চলে গেছে। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর একই ভবনের পাশের একতলা নির্মাণাধীন একটি ভবনে দিপার রক্তাক্ত লাশ খুঁজে পান তার পরিবার। পরিবারের লোকজন দিপাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ওসমানীনগর থানা পুলিশ খবর পেয়ে সকাল ৯টার দিকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
লাশের সুরতহাল রিপোর্টের বরাত দিয়ে ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম মাঈন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, নিহত দিপার মাথায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ও পিঠের কিছু অংশ থেতলানো রয়েছে।
খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার খালেদুজ্জামান, ক্রাইম সিনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোহাম্মদ সেলিম মিয়া, অতিরিক্তি পুলিশ সুপার ওসমানীনগর (সার্কেল) আশরাফুজ্জামান, ডিবির ওসি ইকতিয়ার উদ্দিন, ওসমানীনগর থানার ওসি এসএম মাইন উদ্দিনসহ সিআইডির টিম।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম মাঈন উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি দেখে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে এটি একটি হত্যাকান্ড। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে আনা হয়েছে। আশা করি দ্রুত ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওসমানীনগর (সার্কেল) আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। দ্রুত প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে পারব বলে মন্তব্য করেন তিনি।’