রাজনগরে পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা থাকলেও উদ্যোগ নেই
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১১ মার্চ ২০২৩, ৬:০৬:২৫ অপরাহ্ন
আব্দুল আজিজ, রাজনগর (মৌলভীবাজার) থেকে : পর্যটন শিল্প সরকারের ৪র্থ শিল্প বিপ্লব। এর অপার সম্ভাবনা থাকলেও উদ্যোগের অভাবে পিছিয়ে পড়া মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার নান্দনিক চা বাগানসহ বিভিন্ন স্পটে গড়ে উঠছে না পর্যটন শিল্প।
‘চা ধান হাওর এই তিনে রাজনগর’ মৌলভীবাজার জেলার ইতিহাসখ্যাত জনপদ রাজনগর উপজেলা। কালের বিবর্তনে এখানে অনেক কিছু হারিয়ে যাচ্ছে। রয়েছে ৭শ’ বছরের প্রাচীন প্রত্নতত্ত্বের অনেক নিদর্শন। রাজাধিরাজদের পদচারণা ছিল এই রাজনগরে। আজো কালের সাক্ষী হয়ে আছে কমলারানীর দিঘী। ১২ একর, ১২ বিঘা, ১২ পোয়া, ১২ ছটাক জমি নিয়ে দীঘির অবস্থান। বিশাল এই দীঘির পারে গড়ে উঠতে পারে আর্কষণীয় পর্যটন স্পট।
রাজনগরে ওয়াটার ট্যুরিজমের জন্য কাউয়াদীঘি হাওরের জলের গ্রাম ও কুশিয়ারা নদীর তীরে স্থাপিত কাশিমপুর পাম্প হাউজের কাছে হতে পারে আর্কষণীয় পর্যটন স্পট।
জানা গেছে, উপজেলার উত্তরভাগ ইন্দনগর চা বাগানে পর্যটকদের কাছে টানার মত নয়ন জুড়ানো বৈচিত্র্যময় সবুজ চা গাছ বেষ্ঠিত টিলার ফাঁকে রয়েছে প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে উঠা বড়তল লেক। একই এলাকায় আছে স্বর্গটিলা, যাদুরগুল পিকনিকস্পট। এ ছাড়া রয়েছে নয়ন জুড়ানো গঙ্গাছড়া, খাসিয়া পুঞ্জি, মাথিউড়া লেক ও রাবার ড্রেম। ভ্রমণ পিপাসুরা জানান, বাগান এলাকার কাছাকাছি স্থানে ইকো কটেজ গড়ে তোলা যায়। পাশাপাশি বৈচিত্র্যময় ভাষা সংস্কৃতি নিয়ে শাওতাল, দেশওয়ালী, জংগলী, খাসিয়াসহ নৃজাতি গোষ্টির বসবাস রয়েছে। এখানে তাদের কৃষ্টিকালচার নান্দনিক পরিবেশে বসে উপভোগ করার মত।
ভ্রমণে আসা কামরান আহমদ জানান, এখানে সীমিত পরিসরে প্রকৃতি প্রেমিরা আসেন। এই স্পটগুলো বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের আওতায় নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগোনো যাবে। আর্থিক ভাবে লাভবান হবে এ সব এলাকা।
উত্তরভাগের ইন্দানগর চা বাগানের বড়তল লেকে গিয়ে দেখা হয় আদিবাসি বিজয় গৌড়াইর সাথে।
তিনি বলেন, বড়তল লেক দেখতে খুব সুন্দর। এখানে দূর থেকে লোকজন আসে। লেকের এক পাশে বনজঙ্গল থাকায় বন্যপশুপাখির বসবাস রয়েছে। বর্ষা আসলে লেকের নান্দনিকতা আরো বাড়ে। লেকের জল সাদা ও লাল শাপলায় ভরে উঠে। তখনকার দৃশ্য আরো সুন্দর লাগে।
দেখা হয় ইন্দানগর বাগানের সাজু গোয়ালার সাথে। তিনি বলেন, সব সময় প্রকৃতি প্রেমিদের আনাগুনা রয়েছে। যাতায়াত ও রাত যাপনের সুবিধা থাকলে এখানে পর্যটন শিল্প গড়ে উঠার সম্ভবনা রয়েছে।
মৌলভীবাজারের ট্যুর অপারেটর মো. মোতাহির আলম বলেন, কমিউনিটি ব্যাজ ট্যুরিজম সরকারের ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের পরিকল্পনা। আর এর সম্ভাবনা রয়েছে চা বাগান নদী-হাওর ঘেরা মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন স্পট। পিছিয়ে পড়া জেলার রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইন্দানগর চা বাগানের বড়তল লেক, স্বর্গটিলা, যাদুরগুল পিকনিকস্পট। এ ছাড়া রয়েছে নয়ন জুড়ানো গঙ্গাছড়া, খাসিয়া পুঞ্জি, মাথিউড়া লেক ও রাবারডেম কমলা রানীর দীঘি। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড যথাযথ ব্যবস্থা নিলে এসব স্থানে কমিউনিটি ব্যাজ পর্যটন শিল্প গড়ে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে।
মৌলভীবাজার ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশনের সভাপতি খালেদ হাসান বলেন, উদ্যোগ ও প্রচার প্রচারণার অভাবে সংশ্লিষ্টদের নজরে আসছে না বিভিন্ন স্পট। যে কারণে পিছিয়ে রয়েছে রাজনগরের সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্প।