গোলাপগঞ্জের আতহারিয়া স্কুলের ৮০ বছর উদযাপন
পূর্বসুরীদের স্মরণ রেখে আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে …ডা. স্বপ্নীল
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১২ মার্চ ২০২৩, ৭:৩১:৫৬ অপরাহ্ন
মাহফুজ আহমদ চৌধুরী, গোলাপগঞ্জ (সিলেট) থেকে : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও জালালাবাদ লিভার ট্রাস্ট’র চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেছেন, ‘আমাদের পূর্বসুরীরা রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন, তাদের সেই ত্যাগ স্মরণ রেখে আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। যুগ যুগ ধরে তাদের সম্মান অক্ষুন্ন রাখা আমাদের দায়িত্ব। তিনি বলেন, যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং যারা প্রতিষ্ঠানকে এতদূর নিয়ে এসেছেন তাদের অক্লান্ত শ্রম বুকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে। এতেই এগিয়ে যাবে প্রতিষ্ঠান, এগিয়ে যাবে দেশ।’
গতকাল শনিবার গোলাপগঞ্জের আতহারিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার মানোন্নয়নে ৮০ বছর উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘উন্নয়নে শিক্ষার মান নবীন-প্রবীণ-ঐকতান’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের ৮০ বছর উদযাপন করা হয়। শুরুতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং জাতীয় পতাকা ও বিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ। এসময় শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়ানো হয়।
উদ্বোধন শেষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং আতহারিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম। সংস্কৃতি কর্মী সৈয়দ সাইমুম আনজুম ইভানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বিশিষ্ট গবেষক ও বিজ্ঞানী, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিডেমিওলজি ও পাবলিক হেলথ বিভাগের শিক্ষক, প্রফেসর ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহম্মদ বলেছেন, ঐতিহ্যেও সাক্ষী হিসেবে শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান রাখছে এই বিদ্যালয়। নতুন প্রজন্মের উচিৎ এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখা। শিক্ষা, ধার্মিকথা, মানসিকতা, মেধা ও মননশীলতার মাধ্যমে আমাদের প্রত্যেকটি ঐতিহ্য রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আতহারিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম বলেন, শুধু গুরুত্বপূর্ণ মানুষ নয়, ভালো মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। এতেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আতহারিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সিলেট অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর মো. আব্দুল মান্নান খান, গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী মান্নান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম রব্বানী মজুমদার, প্রাক্তন ছাত্র ও ফুলবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হানিফ খান। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন শিক্ষক প্রতিনিধি আতহারিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আব্দুস সামাদ, প্রাক্তন ছাত্রদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সরকারি এমসি একাডেমির সাবেক অধ্যক্ষ মনসুর আহমদ চৌধুরী, প্রাক্তন ছাত্র দেলোয়ার হোসেন, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শাহ আশরাফুল ইসলাম, প্রবাসী এনামুল হক খান নেফা, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট দেলোয়ার হোসেন দিলু, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বদরুল ইসলাম সুয়েব, প্রাক্তন ছাত্র সুজন আহমদ খান, তুহিন জোয়ারদার, হেতিমগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এসএমসির সভাপতি জাফরান জামিল, শিক্ষক রিবলু মিয়া, প্রভাষক এমদাদ আহমদ প্রমুখ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত আঞ্জুম নাবিলা, সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মাহফুজা হক। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করে বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র ইমাদ আহমদ, পবিত্র গীতা পাঠ করে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী পূজা চক্রবর্তী। পরে বিদ্যালয়ের ১৯৯৭ সালের এসএসসি ব্যাচের উদ্যোগে নির্মিত শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ। মধ্যাহ্ন ভোজের পর অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, র্যাফেল ড্র ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।