মালনীছড়া ও হিলুয়া বাগানে ‘চা পাতা চয়ন উৎসবে’ দানবীর ড. রাগীব আলী
চা শিল্প দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ মার্চ ২০২৩, ৩:৩৪:৩৭ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশের প্রাচীনতম চা বাগান মালনীছড়া ও হিলুয়াছড়া চা বাগানে চা পাতা চয়ন উৎসব উদযাপিত হয়েছে। চা পাতা চয়ন উৎসব উপলক্ষে চা শ্রমিকরা নতুন কাপড়ের পাশাপাশি ছেলে মেয়েসহ উৎসবে মেতেছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চা চয়ন উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দেশবরেণ্য সমাজসেবক-শিক্ষানুরাগী, গরিব-দুঃখী মানুষের বন্ধু, অসংখ্য স্কুল-কলেজে, মসজিদ, মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা দানবীর ড. রাগীব আলী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘চা বাংলাদেশের অন্যতম একটি অর্থকরী ফসল। চা শিল্প দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। চায়ের বাজার রক্ষায় উন্নতমানের পাতা তৈরি করতে হবে। উৎপাদন ভালো হলে বাগানের জন্য ভালো, যা শ্রমিকদের জন্যও কল্যাণকর।’
সমাজসেবায় জীবন্ত কিংবদন্তি, প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মানবকল্যাণে নিবেদিত রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান দানবীর ড. রাগীব আলী আরো বলেন ‘মানুষের কল্যাণে কাজ করা আমার একমাত্র উদ্দেশ্য। কাজের মাধ্যমে মানুষের কল্যাণ করাই আমার আনন্দ। আমরা সবাই যদি যার যার কাজে আন্তরিক হই, তবে অবশ্যই সুফল পাওয়া যাবে। বাগানের উন্নয়ন হলে শ্রমিকরা ভালো থাকবেন।’ তিনি বলেন, উন্নত মানের দ্রব্য উৎপাদনের জন্য দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তিনি শ্রমিকদের আন্তরিকতার সাথে কাজ করার আহবান জানান।
মালনীছড়া চা বাগানে টিলা ক্লার্ক অধির বাউরী’র পরিচালনায় চা পাতা চয়ন উৎসবে উপস্থিত ছিলেন-৬নং টুকের বাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শহীদ আহমদ, প্যানেল চেয়ারম্যান ও টুকের বাজার ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিকুর রহমান শফিক, টুকেরবাজার ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান প্রার্থী রাজু গোয়ালা, বাগানের ব্যবস্থাপক মো. আজম আলী, সহকারী ব্যবস্থাপক সুকুমার সরকার, মোস্তাফিজুর রহমান, আব্দুল মোনায়েম, হেড টিলা ক্লার্ক সুজাউল করিম, টিলা ক্লার্ক মো.জাহাঙ্গীর আলম খান, বেলায়েত হোসেন, শংকর গোয়ালা, রানা বাউরী, স্কুল মাস্টার বিদেশ মুদিসহ বাগানের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। মালনীছড়া চা বাগানের চা পাতা চয়ন উৎসবে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন মালনীছড়া জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন তাজুল ইসলাম। পবিত্র গীতা পাঠ করেন ফটিক ঠাকুর, বাইবেল পাঠ করেন পিটার বিশ^াস। চয়ন উৎসবে প্রথম পুরস্কার লাভ করেন-টিকল বাউরী, দ্বিতীয় আনোয়ারা ও তৃতীয় পুরস্কার লাভ করেন-কুসুম বাউরী। হিলুয়া বাগানে চা পাতা চয়ন উৎসবে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা জালাল উদ্দিন। পবিত্র গীতা পাঠ করেন রিংকু চক্রবর্তী। প্রথম পুরস্কার লাভ করেন আমলা মৃধা, দ্বিতীয় পুরস্কার লাভ করেন শাহানা বেগম, তৃতীয় পুরস্কার লাভ করেন শীমান্ত বাউরী। শংকর দেবনাথের পরিচালনায় ৬নং টুকের বাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্জ্ব শহীদ আহমদ, প্যানেল চেয়ারম্যান টুকেরবাজার ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিকুর রহমান শফিক, বাগান ব্যবস্থাপক মো. আজম আলী, সহকারী ব্যবস্থাপক বিদ্যুৎ তালুকদার, মো. মোরশেদ খান, শ্রী দিলীপ রঞ্জন কুর্মী, মদন গঞ্জু, রঞ্জিত বাউরী, বিমল গঞ্জু, রাধামনী মুন্ডা, চা চয়ন উৎসবে উপমহাদেশের প্রখ্যাত দানবীর, নিবেদিতপ্রাণ সমাজসেবক দানবীর ড. রাগীব আলী চা গাছ এবং বাগান সঠিকভাবে পরিচর্যার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, শ্রমিকদের আয় রোজগারের অন্যতম অবলম্বন চা বাগান। বাগান ভালো থাকলে এবং উৎপাদন ভালো হলে শ্রমিক ও তাদের পরিবার উপকৃত হবেন। মালিকও উপকৃত হবে। বাগান না বাচলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন চা শ্রমিকরা। এদিকে, চা পাতা চয়ন উৎসবকে ঘিরে মালনীছড়ায় শ্রমিকদের মাঝে বিরাজ করছিল এক আনন্দঘন-উৎসবমুখর পরিবেশ। স্থানীয়ভাবে ঐ উৎসব ‘পাতি উৎসব’ নামেও পরিচিত। সম্পূর্ণ নিজস্ব সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের আলোকে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার। বাগানের মালিকও তাদের মূল্যায়ন করতে ভুলেননি। বরাবরের মতো সর্বাধিক চা চয়নকারী শ্রমিকদের হাতে তুলে দেন মূল্যবান পুরস্কার।