শান্তিগঞ্জে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে প্রতিপক্ষের উপর হামলা ॥ গুলিবিদ্ধ ৩
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ মার্চ ২০২৩, ৪:৩৬:২৩ অপরাহ্ন
শান্তিগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা :
শান্তিগঞ্জ উপজেলার উফতিরপাড় গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের উপর গুলি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এতে ৩ জন গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় তিন জনকে আটক করেছে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ।
জানা যায়, গ্রামের সাইফুল মিয়াসহ গ্রাম্য পঞ্চায়েতের সাথে গ্রামের আমির আলীর পক্ষের বিরোধ চলে আসছে। গ্রামের চার গোষ্ঠীর চাপে অন্যত্র অবস্থান করছিলেন আমির আলীর পরিবার।
সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় এক আত্মীয় মারা গেলে লাশ দাফন করতে গ্রামে আসেন আমির আলী ও তার স্বজনরা। গত বুধবার দিনে আমীর আলীর বাড়িতে বহিরাগত কিছু লোকজন আসেন। তাদের সাথে কিছু অস্ত্র নিয়ে আসা হয়েছে-এমন খবর চাউর হলে গ্রামে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। গ্রামবাসী কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ৯ টার দিকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকদের উপর হামলা চালানের অভিযোগ উঠে। এ সময় গ্রামের অপর গোষ্ঠীর লোকজন হামলা প্রতিরোধ করতে চাইলে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষ চলাকালে ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের ছোঁড়া গুলিতে ওই গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে নূর আলম (৩৫), উস্তার উল্লার ছেলে আলী পাশা (৪০) ও মনর উদ্দিনের ছেলে ফজলু মিয়া (৩০) গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়াও একজন নারীসহ আরও ১০-১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আহতরা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল ও সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, উপ্তিরপাড় গ্রামের আলী আহমদ, হযরত আলী ও লন্ডন প্রবাসী রাজা মিয়ার গ্রুপ ও জমসিদ মিয়া, সাইফুল ইসলাম, ফারুক মিয়া ও জরিফ মিয়া গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মামলা মোকদ্দমা চলে আসছে। এলাকাবাসীর মধ্যস্থতায় কয়েকবার সালিশ বৈঠকে দু’পক্ষের বিরোধ নিস্পত্তি হয়েছিল। বিগত দু-এক বছর যাবৎ আলী আহমদ ও হযরত আলীর পক্ষের লোকজন সিলেটে থাকেন। ১৪ মার্চ আলী আহমদ গ্রুপের একজন লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলে লাশ দাফন করার জন্য আলী আহমদ গ্রুপের লোকজন গ্রামে গিয়ে তার লাশ দাফন শেষে গ্রামবাসীর সাথে সংঘর্ষের পায়তাঁরা শুরু করেন। খবর পেয়ে বিভিন্ন গ্রাম থেকে সালিশ ব্যক্তিসহ শাান্তিগঞ্জ থানা পুলিশের লোকজন ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আলী আহমদ গ্রুপের লোকজন গ্রামবাসী সহ জমসিদ মিয়া গ্রুপের লোকজনকে ডাকাডাকি শুরু করে। এক পর্যায়ে গ্রামবাসী বেরিয়ে এলে আলী আহমদ গ্রুপের ৪ জন লোক স্কুলের ছাদের উপর ও বাড়ীর সামনে থেকে বন্দুক দিয়ে এলোপাতাড়ি কয়েক রাউন্ড গুলি করে ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে জমসিদ মিয়া গ্রুপের লোকজনকে আহত করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জগন্নাথপুর সার্কেল সুভাশীষ ধর বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ রয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। সেই সাথে ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।