গোলাপগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদ-
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ মার্চ ২০২৩, ৪:৪২:০৩ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেটের গোলাপগঞ্জে স্ত্রী জনি রানী দাসকে হত্যা করে লাশ গুমের ঘটনায় ঘাতক স্বামী রংগেশ দে’কে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে আর্থিক দন্ডসহ আরও ৭ বছরের কারাদ- প্রদান করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী ঘোষিত রায়ে এই দন্ড দেয়া হয়। দন্ডপ্রাপ্ত রংগেশ দে গোলাপগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ আলমপুরের মৃত রমা দে’র পুত্র।
সিলেট জেলার পিপি এডভোকেট নিজাম উদ্দিন সিলেটের ডাককে এ রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, গোলাপগঞ্জের দক্ষিণ আলমপুরের মৃত রমা দে’র পুত্র রংগেশ দে ২০১৬ সালের ৯ মার্চ হিন্দু ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দুর্বগাগড়া গ্রামের সজল কান্ত দাসের কন্যা জনি রানী দাসকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর স্বামী রংগেশের পরকীয়ার ফলে তাদের দাম্পত্য জীবনে অশান্তি দেখা দেয়। এর ফলে প্রায়শই জনি রানী দাসের উপর নির্মম নির্যাতন করা হতো। ২০১৭ সালের ২৭ জানুয়ারি রংগেশ তার স্ত্রী জনি রানী দাসকে বেধড়ক মারপিট করে এক পর্যায়ে হত্যা করে লাশ গুম করতে কুশিয়ারা নদীতে ফেলে দেয়। নিজের কন্যাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না এমন সংবাদ পেয়ে সজল কান্ত দাস ছুটে আসেন। পরদিন ২৮ জানুয়ারি বহু খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে কুশিয়ারা নদীতে লাশের সন্ধান পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় ৩০ জানুয়ারি নিহতের পিতা সজল কান্ত দাস বাদী হয়ে রংগেশ দে (৩৫) ও শিল্পী রানী দেবকে (৩০) আসামি করে গোলাপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-১৯। তদন্ত শেষে পুলিশ রংগেশ ও শিল্পীকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরপর অভিযোগ গঠন করে মামলার ২৫ সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। যুক্তিতর্কসহ মামলার সকল প্রক্রিয়া শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে স্ত্রী জনি রানী দাসকে হত্যা করে লাশ গুমের ঘটনা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় রংগেশ দে’কে দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ-, ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদ- দেয়া হয়েছে। এছাড়াও দন্ডবিধির ২০১ ধারায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদ- ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদ- দেয়া হয়। মামলার অপর আসামি শিল্পী রানী দেব’র কোনো সম্পৃক্ততা প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে সিলেট জেলার পিপি এডভোকেট নিজাম উদ্দিন ও আসামিপক্ষে এডভোকেট এ কে এম শমিউল আলম মামলাটি পরিচালনা করেন।