সমস্যা যখন স্থুলতা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ মার্চ ২০২৩, ৩:১২:৪৯ অপরাহ্ন
সব কাজেই আমাদের উচিত অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টি দেয়া। -প্যাসকাল
স্থুলতা সমস্যায় ভূগছে মানুষ। সমস্যাটি দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে। শিশুসহ প্রায় সব বয়সের মানুষই ভুগছে স্থুলতায়। আর এই সমস্যাটি আগামিতে আরও প্রকট আকার ধারণ করবে, এমনই তথ্য বেরিয়ে এসেছে গবেষণায়। এতে বলা হয়, ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের অধিকারি হবে। ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ফেডারেশন এক প্রতিবেদনে এই তথ্য দিয়েছে। তাদের মতে, আগামি ১২ বছরে বিশ্বের ৪০০ কোটি মানুষ স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের শিকার হবে। শিশুদের মধ্যে এই হার সবচেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পাবে বলেও এতে বলা হয়েছে। খবরটি একটি জাতীয় দৈনিকের।
সাধারণত স্থূলতা শব্দটি উচ্চমাত্রায় চর্বিযুক্ত ব্যক্তিকে বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়, স্থূলতা হচ্ছে বাড়তি ওজন বা মুটিয়ে যাওয়া। যাকে ইংরেজিতে বলা হয় ড়নবংরঃু. অর্থাৎ স্থূলতা এমন একটি শারীরিক অবস্থা যা শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমার ফলে নানান রোগ সৃষ্টিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। এটি রোগাক্রান্ত মানুষের আয়ুষ্কাল কমিয়ে দেয়। উন্নত দেশে স্থূলতা জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের ৫০ কোটির বেশি তরুণ এই সমস্যায় আক্রান্ত। আর ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের অধিকারি হবে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞগণ। দেখা গেছে, এই সমস্যাটি আফ্রিকা ও এশিয়ার নিম্ন বা নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশগুলোতেই বেশি। বাংলাদেশেও এই সংখ্যা একেবারেই কম নয়। বিশেষ করে সচ্ছল পরিবারের শিশু-যুবাদের একটি বিরাট অংশ ইতিমধ্যেই স্থূলতায় আক্রান্ত। স্থূলতার কারণ হিসেবে প্রথমত অতিরিক্ত খাওয়া, কম কায়িক শ্রম, হরমোন জনিত, বংশগত, মানসিক সমস্যা এবং কিছু ওষুধ সেবনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ বা কোন কারণে ক্যালরি কম খরচ হলে বাড়তি অংশ শরীরে জমা হয়, যা স্থূলতার মূল কারণ। স্থূলতায় আক্রান্তরা উচ্চ রক্তচাপসহ হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, মস্তিষ্কে স্ট্রোক, অস্থির প্রদাহ, পিত্তথলিতে পাথর, বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার, শ্বাসকষ্ট, ঘুমে ব্যাঘাত, নানা ধরনের ত্বকের রোগ ইত্যাদি সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন।
স্থূলতা বা ওবেসিটির ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। আর সেটা ওজন-হ্রাসসহ নিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা অনুসরণের মাধ্যমেই শুরু করা যেতে পারে। একটি সুষম খাদ্য এবং নিয়মিত শরীর চর্চা একটি স্বাস্থ্যকর শরীরের ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে, নিয়মিতভাবে ব্যায়াম করা প্রতিদিনের ক্যালোরির সুপারিশ ছাড়াই শরীরের ওজন পরিচালনা করতে পারে এবং অস্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধি রোধ করতে পারে।