সিলেট জেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্য
লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা না দিয়েও নিয়োগ পেলেন ৯ পরিবারকল্যাণ সহকারী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ মার্চ ২০২৩, ৪:৫২:৩৪ অপরাহ্ন
নূর আহমদ
সিলেট জেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে পরিবারকল্যাণ সহকারী পদে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। চূড়ান্ত পরীক্ষা দূরে থাক : লিখিত পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও অনেকেই চাকুরি পেয়েছেন। নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে ৯ জন দক্ষিণ সুরমা, ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নে কর্মরত। অভিযোগ উঠেছে, জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সিলেটের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা: লুৎফুন নাহার জেসমিনের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট এই নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে সম্পৃক্ত। অবশ্য, ডা: লুৎফুন নাহার জেসমিন দাবি করছেন, তার অফিসের অভ্যন্তরে গড়ে উঠা একটি চক্র তার অজান্তে এমন দুষ্কর্ম করেছে। অন্যদিকে বিশাল অংকের টাকা দিয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত প্রার্থীরাও পড়েছেন চরম বিপাকে। সিলেটের ডাক-এর অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে নিয়োগকে ঘিরে সৃষ্ট দুর্নীতির নানা চিত্র।
যখন থেকে শুরু
২০২১ সালের নভেম্বরে সারাদেশের মতো সিলেট জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। যার স্মারক নং (১৯৮/১৭/০৬/২০২১)। সিলেট জেলার ৪৪টি ইউনিয়নের নির্দিষ্ট ইউনিটে পরিবারকল্যাণ সহকারী পদে ৫৫টি শূন্য পদে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে আবেদন চাওয়া হয়। এরপর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০২২ সালের ২৫ নভেম্বর। পরদিন প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষার ফলাফলে ১৮৬ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন। চূড়ান্তভাবে প্রার্থী নির্বাচন (মৌখিক) পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয় ৩০ নভেম্বর। জেলা পরিবার পরিকল্পনা বাছাই/নিয়োগ কমিটির সভাপতি ছিলেন-সিলেটের জেলা প্রশাসক মো: মজিবর রহমান, সদস্য সচিব জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সিলেটের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা: লুৎফুন নাহার জেসমিন ও সদস্য ছিলেন সিলেটের সিভিল সার্জন ডা: এস এম শাহরিয়ার। উপযুক্ত প্রার্থী না থাকায় নিয়োগ বাছাই কমিটি ৫৫টি পদের বিপরীতে ৫১ জনকে সুপারিশ করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে। সিলেটের জেলা প্রশাসকের ওয়েবসাইটেও এই ফলাফল প্রকাশিত হয়। এরপর ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর জেলা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা: আব্দুল মান্নানসহ ৭ জন কর্মকর্তাকে স্থায়ী ঠিকানা যাচাই বাছাইয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। তারা ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেন। এই পর্যন্তই সব ঠিকঠাক চলছিলো। নিয়োগ আদেশ জারির পর থেকেই শুরু হয় অনিয়মের।
একাধিক নিয়োগ আদেশ জারি
স্থায়ী ঠিকানা যাচাই বাছাইয়ের পর সঠিক হলে এক আদেশেই সকল প্রার্থীর নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার কথা। কিন্তু, পরিবারকল্যাণ সহকারী নিয়োগে ছলচাতুরির আশ্রয় নেয় জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে গড়ে উঠা সিন্ডিকেট। তারা একাধিক আদেশ জারি করে। এর মধ্যে ৫টি আদেশ প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, আরো আদেশ রয়েছে। আদেশে দেখা গেছে, প্রথম আদেশে ২৩ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়। ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর এই আদেশ জারি করা হয়। যার স্মারক নং ৫৭৪। ২য় আদেশ জারি করা হয় ২৮ ডিসেম্বর। যার স্মারক নং ৬১১। এই আদেশে নিয়োগ পান ১৭ জন। এই আদেশেই দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি ইউনিয়নে পলি দাশ ও পপি রানী দাশকে ও মন্টি সরকারকে তেতলি ইউনিয়নে পরিবার কল্যাণসহকারী পদে নিয়োগ দেয়া হয়। তাদের কারো রোল নম্বর চূড়ান্ত ফলাফলের তালিকায় নেই। এমনকি বরইকান্দি ইউনিয়নে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিই জারি হয়নি। তেতলী ইউনিয়নে নিয়োগপ্রাপ্ত মন্টি সরকার মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণই হননি।
৩য় নিয়োগ আদেশ জারি করা হয় চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি। যার স্মারক নং ২৭। এতে আরো ৮ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়। এই আদেশে ¯িœগ্ধা বিশ্বাস নামের একজনকে গোলাপগঞ্জের ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের ২/খ ইউনিটে নিয়োগ করা হয়। অথচ এই ইউনিটে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি। ৪র্থ আদেশ জারি করা হয় ১২ জানুয়ারি। এই আদেশে নিয়োগ দেয়া হয়-৬ জনকে। এর মধ্যে তাহসিন মাসুমা কচি নামের একজনকে নিয়োগ দেয়া হয় ওসমানীনগরের উমরপুর ইউনিয়নে। যিনি মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হননি। ৫ম আদেশে সবচেয়ে বেশি অনিয়ম হয়। এই আদেশ জারি করা হয়-গত ২ ফেব্রুয়ারি। যার স্মারক নং ৬১। এই আদেশে ৪ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়। এই চারজনের মধ্যে বালাগঞ্জের সদর ইউনিয়নে নিয়োগপ্রাপ্ত শক্তি রানী পাল লিখিত ও মৌখিক কোন পরীক্ষাতেই উত্তীর্ণ হননি। উছমানপুর ইউনিয়নের ২/ক ইউনিটে নিয়োগপ্রাপ্ত পূর্ণিমা নমঃ মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হননি, এমনকি তাকে যে ইউনিটে নিয়োগ দেয়া হয়েছে; সেই ইউনিটে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়নি। একইভাবে উছমানপুর ইউনিয়নে নিয়োগপ্রাপ্ত তাছলিমা আক্তারকেও নিয়োগ দেয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তি বহির্ভূত ইউনিটে। সবচেয়ে আলোচিত সিগ্ধা বিশ্বাসকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে ওসমানীনগরের বুরুঙ্গা বাজার ইউনিয়নের ৩/খ ইউনিটে। এই ¯িœগ্ধা বিশ্বাস নামের একজনকে ৩য় আদেশে গোলাপগঞ্জে নিয়োগ দেয়া হয়। দুজনের নিজের ও বাবা-মায়ের নাম একই। শুধু ঠিকানাটা ভিন্ন, কর্মস্থলও ভিন্ন। এই নিয়োগপ্রাপ্ত সকলেই নিজ নিজ কর্মস্থলে কর্মরত রয়েছেন।
নিয়োগপ্রাপ্তরা এখন যেমন আছেন
নিয়োগপ্রাপ্ত এই ৯ জনের মধ্যে প্রত্যেকেই নিজ নিজ কর্মস্থলে কর্মরত রয়েছেন। যারা সরকারি নীতিমালা মেনে যোগদান করেন। অনিয়মের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ সুরমা ও ওসমানীনগর উপজেলায় নিয়োগ পান। দক্ষিণ সুরমায় নিয়োগপ্রাপ্ত তিন জন কর্মরত রয়েছেন বলে জানান উপজেলা সহকারী পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মানুদা রঞ্জন তালুকদার। তিনি জানান, তারা যথারীতি নিয়ম মেনে যোগদান করেন এবং জেলা অফিসের পাঠানো আদেশের প্রেক্ষিতে তাদের যোগদানের সুযোগ দেয়া হয়। তবে নিয়োগ আদেশে উল্লেখিত স্থায়ী ঠিকানায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এদের প্রত্যেকের স্থায়ী ঠিকানা সঠিক নয়। পপি দাস তার বাড়ি চাঁদনীঘাটে জানালেও নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় জানতে চাইলে ফোন কেটে দেন। মন্টি সরকার ও পলি রানী ফোন রিসিভ করেননি।
ওসমানীনগর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মহিতোষ মজুমদার দাবি করেন, বালাগঞ্জের একজনসহ নিয়োগপ্রাপ্ত ৫ জনের ব্যাপারে প্রশ্ন উঠেছে। তার দাবি নিয়োগপ্রাপ্তরা জেলা অফিসের নির্দেশে নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যোগদান করে এবং তারা কর্মরত রয়েছেন। যোগদান নিয়মতান্ত্রিক হলেও তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রয়েছে চরম অমিল। এর মধ্যে উমরপুর ইউনিয়নের নিয়োগপ্রাপ্ত তাহসিন মাসুমা কচি ফোন ধরলেও বাড়ির ঠিকানা জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।
তাসলিমা আক্তার দাবি করেন, তিনি মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলেও জেলা অফিস থেকে তার সাথে যোগাযোগ করা হয়। এরপর তিনি যোগদান করেন।
পূর্ণিমা নমঃ জানান, তার গ্রামের বাড়ি জৈন্তাপুর উপজেলার রামেশ্বরগ্রামে। তাকে জেলা অফিস থেকে ফোন দিয়ে জানানো হয় চাকুরি করতে চাইলে তাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য। এরপর তাকে ওসমানীনগরে নিয়োগ দেয়া হয়। শক্তি রানী পাল জানান, তার বাবার বাড়ি হবিগঞ্জে। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন। মূলত লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের তালিকায় তার নাম ছিলো না। ¯িœগ্ধা বিশ্বাস নামের অপর প্রার্থীর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
অপরদিকে, গোলাপগঞ্জের ঢাকা দক্ষিণে নিয়োগপ্রাপ্ত ¯িœগ্ধা বিশ্বাস উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী মনি দিপা দাশের আত্মীয় বলে গেলেও তিনি তা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এই নামে তার কোন আত্মীয় নেই।
জড়িত যারা
৫১ জনের স্থলে ৫৮ জন পরিবারকল্যাণ সহকারী নিয়োগ সংক্রান্ত আদেশে জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সিলেটের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা: লুৎফুন নাহার জেসমিন এর স্বাক্ষর রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে-তার সাথে পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের ‘প্রভাবশালী’ কর্মচারী উপ-পরিচালকের সহকারী বাশির উদ্দিন, জেলা অফিসে সংযুক্ত পরিবার পরিকল্পনা সহকারী বরুণ ছত্রী জড়িত রয়েছেন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট উপজেলা কর্মকর্তাগণ জড়িত রয়েছেন। উপ-পরিচালক ছাড়াও আদেশে স্বাক্ষর রয়েছে বরুণ ছত্রীরও।
এ ব্যাপারে উপ-পরিচালকের সহকারী বাশির উদ্দিন দাবি করেন নিয়োগ প্রক্রিয়ার সাথে তার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। একটি আদেশ ছাড়া কোথাও তার স্বাক্ষর নেই। তিনি দাবি করেন, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে যে যে উপজেলায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে-তারা কিভাবে যোগদান করলো; কার যোগসাজেসে করেছে সেখানকার উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তারাই ভালো বলতে পারবেন। অন্যদিকে, বরুণ ছত্রী নিয়োগ আদেশে নিজের স্বাক্ষর থাকার কথা স্বীকার করেন। তবে কারা জড়িত এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উপ-পরিচালকের বক্তব্য
জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সিলেটের উপ পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা: লুৎফুন নাহার জেসমিন অনিয়মের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, তার অফিসের অভ্যন্তরে একটি সিন্ডিকেট রয়েছে ; যারা পরিকল্পিতভাবে এই অনিয়ম করে তাকে ফাঁসিয়েছে। তিনি এসব কিছু জানেন না। সবকটা আদেশে তিনি স্বাক্ষরও করেননি বলে জানান। জেসমিন আরো দাবি করেন, তার আশপাশে থাকা সিন্ডিকেট সদস্য তার স্বাক্ষর স্ক্যান করে বিভিন্ন উপজেলায় মেইল করে তাদের যোগদানের ব্যবস্থা করেছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর সিলেট বিভাগের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো: কুতুব উদ্দিন জানান, এ ব্যাপারে অধিদপ্তরের একটি তদন্ত চলছে। ২/১ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যেতে পারে। এরপর বিস্তারিত বলা যাবে।
কেমুসাসে মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা ও আলোচনা সভা
আমাদেরকে লালসবুজের পতাকা
এনে দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা
ডাক ডেস্ক ঃ মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমেই বাঙালি জাতি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছে। এই অর্জনের পেছনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিস্মরণীয় ভূমিকা রয়েছে। তাই বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা। গতকাল বুধবার বিকেলে নগরের শহীদ সোলেমান হলে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের (কেমুসাস) উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা ও আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। কেমুসাসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আহমেদ নূরের সভাপতিত্বে সভায় বক্তারা আরো বলেন, স্বাধীনতার জন্য আমাদের অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে মুক্তিযোদ্ধারা আমাদেরকে লালসবুজের পতাকা এনে দিয়েছেন।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির সদস্যসচিব প্রিন্স সদরুজ্জামান চৌধুরী ও কেমুসাসের সাহিত্য ও গবেষণা সম্পাদক আহমদ মাহবুব ফেরদৌসের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কমিটির আহবায়ক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী। সম্মাননাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. মৃগেন কুমার দাস চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুছ ছালাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী গোলাম মর্তুজা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আফিজ আলী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সাইফুল হোসাইন।
সভায় বক্তব্য দেন কেমুসাসের সহসভাপতি অধ্যক্ষ কালাম আজাদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সাদেক লিপন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সায়ফুল আলম রুহেল, লেখক বেলাল আহমদ চৌধুরী, কেমুসাসের কোষাধ্যক্ষ মো. ছয়ফুল করিম চৌধুরী হায়াত, পাঠাগার সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ তাহের। সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন কেমুসাসের কার্যকরী পরিষদ সদস্য ফায়যুর রাহমান।
সম্মাননার জবাবে মুক্তিযোদ্ধারা কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে হবে। যাতে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ও দেশপ্রেমের মন্ত্রে দীক্ষিত হতে পারে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. মৃগেন কুমার দাস চৌধুরী বলেন, একাত্তরের রণাঙ্গনে জীবনবাজি রেখে যারা যুদ্ধ করেছেন, তাদের অবদানের পাশাপাশি লেখক-সাংবাদিক-চিকিৎসকসহ সকল সেক্টরের বাঙালিদের অবদান রয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী গোলাম মর্তুজা বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো মানুষকে আমরা নেতা হিসেবে পেয়েছি বলে আমরা জাতি হিসেবে ভাগ্যবান। একাত্তরে তাঁর ডাকে আমরা সাড়ে সাত কোটি মানুষ জেগে উঠেছিলাম। তাই নতুন প্রজন্মের কাছে তার কীর্তি আরো উদ্ভাসিত।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম বলেন, আমার সৌভাগ্য আমি ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে অবস্থান করে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনেছি। তার ভাষণে উদ্দীপ্ত হয়েছি। আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ কাজ মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং আমার জীবনের বেদনাদায়ক স্মৃতি খুনি মোশতাকচক্রের হাতে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আফিজ আলী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করেছিলো, তাই আমরা আমাদের যার যা কিছু আছে তা নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সাইফুল হোসাইন বলেন, বঞ্চনার অবসান ঘটাতে আমরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম এবং আমরা সফল হয়েছি। এই সফলতা আমাদেরকে ধরে রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে কেমুসাসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আহমেদ নূর বলেন, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ হয় না। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদেরকে আত্মস্মৃতি লেখার আহবান জানিয়ে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বয়ানে যে ইতিহাস লেখা হবে, সেটাই প্রকৃত ইতিহাস। এ ইতিহাস সংরক্ষণ করতে হবে।
বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ সময় হলো মুক্তিযুদ্ধ, শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা এবং শ্রেষ্ঠ মানব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।