সিলেটেও কমতে শুরু করেছে ব্রয়লার মুরগির দাম
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ মার্চ ২০২৩, ৭:৫১:৩৫ অপরাহ্ন
# উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে নজরদারির দাবি ক্রেতাদের
এনামুল হক রেনু
অবশেষে সিলেটেও কমতে শুরু করেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। তবে, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম কমতে আরও ২/৩ দিন সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সিলেটে ব্রয়লার মুরগি সর্বোচ্চ ২৬০-২৭০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে, গতকাল শুক্রবার সিলেটের বিভিন্ন বাজারে ২৪০ থেকে ২৪৫ টাকায় ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে।
বিক্রেতারা জানান, তিনটি ধাপে বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ আসে। প্রথম ধাপে কোম্পানি বাচ্চা উৎপাদন করে। দ্বিতীয় ধাপে ডিলাররা কোম্পানি থেকে বাচ্চা কিনে খামারিদের কাছে বিক্রি করেন, অনেক খামারি আবার সরাসরি কোম্পানি থেকেও বাচ্চা ক্রয় করেন। খামারিরা বাচ্চাগুলো বড় করে নির্দিষ্ট দিন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। এরপর ক্রেতা বাজার থেকে মুরগি কিনেন। মূলত বর্তমানে সব সেক্টরে বাজার দর উর্ধ্বগতি হওয়ার প্রভাব এই তিন ধাপেই পড়েছে। তাই ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে। তাছাড়া চাহিদার তুলনায় কম বাচ্চা উৎপাদন, ফিডের (মুরগির খাবার) দাম বৃদ্ধি, বাড়তি বিদ্যুৎ বিল ও শ্রমিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম।
তারা জানান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর পোল্ট্রি মুরগি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীবৃন্দের সঙ্গে সভা করে খামার পর্যায়ে ১৯০-১৯৫ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের কমতে সময় লাগবে। কারণ, পূর্বের দামে আমাদের পোল্ট্রি ফিড কেনা। নতুন নির্ধারণ করা দামে ফিড আসলে আমাদের দাম কমাতে বাধা নেই।
বন্দর বাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা সিদ্দিকুর রহমান জানান, আমরা মধ্যবিত্তরা গরু-খাসির মাংস কিনতে পারিনা। ব্রয়লার মুরগী কিনেই আমরা পরিবারকে সান্ত¦না দিতাম। কিন্তু দাম বাড়ায় এবার রমজান শুরু হলেও মাংস কেনা সম্ভব হয়নি।
শিবগঞ্জ বাজারের মা পোল্ট্রির মালিক জাকির হোসেন জানান, ফার্ম থেকে যদি কমানো হয় তাহলে আমরা অবশ্যই দাম কমাব। এখনও ফার্ম থেকে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা রেটে ব্রয়লার আসছে। সে ক্ষেত্রে তো খোলা বাজারে ২৫০ টাকা হবেই।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কার্যালয়ে চারটি বড় উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর জানানো হয়েছিল, গতকাল শুক্রবার থেকে কেজিতে দাম কমবে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।
এ প্রসঙ্গে খুচরা দোকানদাররা বলছেন, খামার পর্যায়ে দাম কমানোর সুফল পেতে আর ২-১ দিন সময় লাগবে। সরবরাহ পর্যায়ে দাম কমলে খুচরা পর্যায়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এদিকে, ক্রেতারা বলছেন শুধু বৈঠক করে দাম কমানো সম্ভব হবে না। উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে নজরদারি প্রয়োজন। আইনের কঠোর প্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন ক্রেতারা।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক (মেট্রো) শ্যামল পুরকায়স্থ জানান, সিলেটে নিত্যপণ্যের বাজারদর স্থিতিশীল রাখতে সিলেট জেলা প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মাঠে কাজ করছে। ভোক্তার কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যের অতিরিক্ত রাখলে আমরা ব্যবস্থা নেব।