গুয়াহাটি মিশনের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান
বাংলাদেশের সাথে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে—-মন্ত্রী চন্দ্র মোহন পাটোয়ারি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ মার্চ ২০২৩, ৬:১৭:৫১ অপরাহ্ন

নূরুল ইসলাম (গুয়াহাটি) আসাম ভারত থেকে : ভারতের আসামে বাংলাদেশে’র সহকারী হাইকমিশন গুয়াহাটি মিশনের উদ্যোগে বাংলাদেশের ৫৩ তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আসামের গুয়াহাটিস্থ খানাপাড়ায় হোটেল বিভান্তে মহান স্বাধীনতা দিবসের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আসাম সরকারের পরিবেশ ও বন, অ্যাক্ট-ইস্ট পলিসি অ্যাফেয়ার্স এবং সংখ্যালঘু বিভাগ কল্যাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী শ্রী চন্দ্র মোহন পাটোয়ারি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আসাম রাজ্য বিধান সভার এমএলএ তরুংগ গগৈ, বিধায়ক লরেঞ্চ ইচলারী, আসাম সরকারের চীফ সেক্রেটারি মনিন্দ্র সিং। অনুষ্ঠানে শুরুতে দু’দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের স্বাগত জানান, আসামের গুয়াহাটি’তে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার ও মিশন প্রধান রুহুল আমিন এবং তার পত্নী ড. নবনীতা হক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী শ্রী চন্দ্র মোহন পাটোয়ারী বলেন, ‘বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রতিবেশী দেশ ভারত সাধ্যমতো সবকিছু দিয়ে সহযোগিতা করেছে। যুদ্ধে বাংলাদেশের ৩০ লাখ শহীদের সাথে অনেক ভারতীয় সৈনিক শহীদ হয়েছেন। ১৯৭১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সাথে ভারত সরকারের গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তিনি মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সরকার প্রধান শেখ হাসিনা এবং জনগণকে শুভেচ্ছা জানান।’
মন্ত্রী চন্দ্র মোহন পাটোয়ারী আরো বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় রয়েছে। তিনি বলেন, ঢাকা-গুয়াহাটি বিমান চলাচল পুনরায় শুরুর উদ্যোগ চলছে। আসাম সরকার শিলচর-সিলেট সরাসরি বাস সার্ভিস চালু করতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশের সাথে স্থলপথ, নৌ-পথে যোগাযোগ উন্নয়নে আগ্রহী। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম সহ সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। সিলেট বিভাগের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
সিলেটের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য আসামের শিলচর শহরে শিলচর-সিলেট উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, দু’দেশের বাণিজ্য, পর্যটন শিল্পের বিকাশ, ভাষা ও সাহিত্য, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং রেল ও সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আর এগিয়ে নিতে দুই দেশ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আসামের ব্রহ্মপুত্র নদী এবং বরাক-কুশিয়ারী নদী খননের উদ্যাগ গ্রহণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আসামের গুয়াহাটি’তে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার ও মিশন প্রধান রুহুল আমিন বলেন, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তৎকালীন ভারত সরকার ১ কোটি বাংলাদেশিকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। আসামে ৩ লাখ মানুষ আশ্রয় গ্রহণ করে ছিলেন। যুদ্ধে ভারতীয় সরকার বিপুল সংখ্যক সৈন্য সহ সবকিছু দিয়ে সহযোগিতা করায় তিনি ভারত সরকার এবং তাদের জনগণের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আসাম সরকারের বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, শিল্পী ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
অনুষ্ঠানে জৈন্তাপুর প্রেসক্লাব সভাপতি নূরুল ইসলাম, জৈন্তাপুর বিয়াম ডা: কুদরত উল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবু সুফিয়ান বেলাল ও সাংবাদিক ইউসুফুর রহমান অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সরকারি-বে-সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংবাদিক, শিল্পীদের ফুল দিয়ে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানানো হয়। পরে স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।