চিকিৎসক দিবস আজ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ মার্চ ২০২৩, ২:৩৬:২৩ অপরাহ্ন
তারাই সুখি যারা নিন্দা শুনে এবং নিজেদের সংশোধন করতে পারে। -শেক্সপিয়ার
আজ বিশ্ব চিকিৎসক দিবস। চিকিৎসা সেবা এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে ডাক্তার রোগির সম্পর্কের বিষয়টিতে উপজীব্য করেই এই দিবসটি ১৯৩৩ সালে প্রথমবারের মতো পালিত হয়। এই দিনে স্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে ডাক্তার-রোগির সম্পর্কের ব্যাপারটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। ডাক্তার চার্লস ব্রাউন আলমন্ডের স্ত্রী ইউডোরা ব্রাউন আলমন্ড প্রথম ডাক্তারদের জন্য একটি দিবস পালনের ধারণা দেন। মূলত আমাদের দেশে ২০০৮ সালে এই দিবসটির বিষয়ে মাতামাতি শুরু হয়। পরের বছর প্রথমবারের মতো এদেশে পালিত হয় আন্তর্জাতিক চিকিৎসক দিবস।
দিবসটির উৎপত্তির মূলেই রয়েছে ডাক্তার-রোগির সম্পর্ক। অর্থাৎ এই সম্পর্কের ওপরই নির্ভর করছে রোগির সুচিকিৎসা। রোগির সঙ্গে ডাক্তারের বোঝাপড়া ভালো হলে, তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি হলে অতি জহজে রোগ নির্ণয় সম্ভব হয়। চিকিৎসকের সুন্দর আচরণে রোগিরও অনেকটা রোগ প্রশমন হয় বলে অনেকের ধারণা। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ডাক্তার-রোগির সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। বিশেষ করে আমাদের দেশেন সঙ্গে তুলনীয় তো নয়ই। সেসব দেশে যেমন উন্নত চিকিৎসার সব ধরণের ব্যবস্থা রয়েছে তেমনি ডাক্তার-রোগির সম্পর্কও প্রাণবন্ত। কিন্তু আমাদের দেশে এর ভিন্ন চিত্র। ব্যতিক্রম ছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডাক্তাররা রোগিদের সঙ্গে ভালো আচরণ করতে চান না। অথচ চিকিৎসা একটা মহৎ সেবামূলক পেশা। শৈশবে প্রায় আশি ভাগ শিশুই ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু তার মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন হয়তো মেডিকেল কলেজে লেখা পড়ার সুযোগ পায়। তারপরেও প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী এমবিবিএস পাস করে বের হচ্ছে দেশের বিভিন্ন সরকারি- বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে। এরা সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে চাকরি করছেন কিংবা প্রাইভেট চেম্বার খুলে চিকিৎসা দিচ্ছেন। প্রাইভেট চেম্বার বা প্রাইভেট ক্লিনিক-হাসপাতালেও রোগিদের সঙ্গে বেশিরভাগ ডাক্তার ভালো আচরণ করছেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে। আর সরকারি হাসপাতালের তো আরও করুণ অবস্থা। প্রথমত সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকগণ কর্মস্থলে নিয়মিত উপস্থিত থাকেন না। সেইসঙ্গে রয়েছে রোগিদের সঙ্গে রীতিমতো অশোভন আচরণের অভিযোগ রয়েছে।
তবে এইসব অভিযোগের বাইরে রয়েছেন অনেক চিকিৎসক, যাদের সেবায় মানুষ মুগ্ধ। এদের সংখ্যা কম। আসল কথা হলো এই পেশার সঙ্গে ‘সেবা’ নামক শব্দটি জড়িয়ে আছে। অন্য দশটা পেশার সঙ্গে এই পেশাকে তুলনা করা যায় না।যদি সেবার মনোভাব না থাকে তবে চিকিৎসা পেশার ভাবমূর্তি ধুলিস্যাৎ হয়ে যায়। আসল কথা হলো, দেশের দরিদ্র, তৃণমূল পর্যায়ের জনগোষ্ঠি প্রত্যাশিত স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেনা। এই বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রোগিদের সঙ্গে ডাক্তারের সহমর্মি আচরণের যে ব্যতিক্রমি ঘটনাগুলো রয়েছে সমাজে, আমরা চাই সেটাই নিয়মে পরিণত হোক। আন্তর্জাতিক চিকিৎসক দিবসে একটাই আমাদের প্রত্যাশা।