বন্যপ্রাণির অবৈধ পাচার
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০১ এপ্রিল ২০২৩, ৩:৪১:১৪ অপরাহ্ন

সকাল সকাল ঘুমানো, সকাল সকাল উঠা মানুষকে স্বাস্থ্যবান, সম্পদশালী ও জ্ঞানবান করে তোলে। -ফ্রাঙ্কলিন
দেশে বন্যপ্রাণির অবৈধ বিকিকিনি বাড়ছে। গবেষণার তথ্য হচ্ছে, সিলেটসহ দেশের ১৩টি জেলায় বন্যপ্রাণির বেচাকেনা হয় প্রকাশ্যে। এসব প্রাণি অবৈধভাবে পাচার করা হয় প্রতিবেশি ভারত, মিয়ানমারসহ কয়েকটি দেশে। গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে শুধুমাত্র ২০১৯ সালেই ৯২৮টি বন্যপ্রাণি বেচাকেনা হয়েছে।
বন্যপ্রাণি এবং উদ্ভিদকূল মানবজাতির বেঁচে থাকা তথা পরিবেশের জন্য অতি অপরিহার্য বস্তু। নানা কারণে বন্যপ্রাণি কিংবা বন্য উদ্ভিদ ধংস হচ্ছে। আসল কথা হলো, বন্যপ্রাণিদের নিজেদের গহীন বনও নিরাপদ নয়। প্রতিনিয়ত তারা মানুষের আক্রমণের শিকার হচ্ছে। অর্থাৎ বনে প্রাণিরা নিরাপদ থাকছে না। প্রায় সময়ই বিভিন্ন প্রাণি হত্যার সংবাদ ওঠে আসছে মিডিয়ায়। এবিষয়ে জাতিসংঘ পরিবেশগত, জিনতাত্ত্বিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক, শিক্ষাবিষয়ক, সাংস্কৃতিক, বিনোদনমূলক এবং নান্দনিক বিষয়ের সাথে যুৎসই উন্নয়ন এবং মানবকল্যাণের দিকে গুরুত্ব আরোপ করেছে। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য যাতে বন্য প্রজাতিদের টিকে থাকতে হুমকি হয়ে না দাঁড়ায় তা নিশ্চিত করতে হবে। এটা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই যে, বনই হচ্ছে প্রাণির জন্ম, বিচরণ, প্রজনন ও বসবাসের উপযুক্ত জায়গা। বৈরী জলবায়ুর কারণে বাংলাদেশে মাছ, পাখি, উভচর প্রাণি, সরীসৃপ, স্তন্যপায়ী প্রজাতির মধ্যে অনেকগুলোই বিলুপ্তির পথে। ৫ হাজার প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে ১০৬টি অস্তিত্ব হুমকির মুখে। বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বাঘ। আর বনে বন্যপ্রাণির সংখ্যা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, অবাধে বন্যপ্রাণি বিকিকিনি। উল্লিখিত গবেষণায় বলা হয়, বন থেকে ধরে আনা বিভিন্ন ধরনের জ্যান্ত প্রাণি প্রকাশ্যে বেচাকেনা হয়। তবে বিদেশে পাচারের তালিকায় রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, মুখপোড়া হনুমান, লজ্জাবতী বানর, তক্ষক, বিষধর সাপ, ছোট সরীসৃপ, উল্লুক, কালো ভালুক প্রভৃতি। যেসব প্রাণি জীবিত পাচার করা সম্ভব হয় না, সেগুলোকে হত্যা করে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি হয়। এছাড়া, সরকারের বন অধিদপ্তর ২০১২ থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৪৯ হাজার বন্য প্রাণি পাচারের সময় উদ্ধার করেছে বলেও গবেষণায় ওঠে এসেছে। বলা হয়েছে- বিশ্বে বছরে অন্তত ৩২ হাজার কোটি ডলার মূল্যের বন্যপ্রাণি বেচাকেনা হয়।
দেশের জীববৈচিত্র্যের অফুরন্ত ভা-ার হচ্ছে বন। বনই হচ্ছে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের ধারক ও বাহক। বন আছে বলেই উদ্ভিদ ও প্রাণি বেঁচে আছে। বন সংরক্ষণ করলে বন্যপ্রাণিও রক্ষা পাবে। আর বন্যপ্রাণি সুরক্ষায় আরও জরুরি হচ্ছে, দুর্বৃত্তদের কবল থেকে বন্যপ্রাণিকে রক্ষা করা। এই সংক্রান্ত আইনের যথাযথ প্রয়োগ দরকার।