প্রেস ব্রিফিংয়ে সিলেটের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন
জুয়ায় হেরে ঋণ থেকে বাঁচতে নিজেকে খুনের নাটক সাজিয়েছিলেন নাহিদ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ এপ্রিল ২০২৩, ৬:৪৫:০৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযান পরিচালনা করে ‘মৃত’ নাহিদকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছে বিয়ানীবাজার থানার পুলিশ। পরে নিজের মৃত্যুর ঘটনা সাজানো ওই যুবককে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ। গতকাল রোববার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে সিলেটের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য জানিয়েছেন।
পুলিশ সুপার জানান, সিলেটে অনলাইন জুয়ায় হেরে ঋণ থেকে বাঁচতে নিজেকে নিয়ে খুনের নাটক সাজিয়েছিলেন নাহিদ ইসলাম নামের ওই যুবক। তবে, শেষ রক্ষা হয়নি তার। গত শনিবার সন্ধ্যায় নরসিংদী থেকে তাকে গ্রেফতার করে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ। এ সময় তিনি বলেন, নাহিদ অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে অনেক টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তা থেকে বাঁচতে প্রথমে ভুয়া জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি এবং পরে নিজেকে হত্যার নাটক সাজান। এ জন্য কেমিকেল দিয়ে তৈরি রক্ত সাদৃশ্য পদার্থ নিজ কক্ষে ফেলে যান নাহিদ।
গত ৩১ মার্চ ভোর রাতে পুলিশ জানতে পারে মাথিউরা ইউনিয়নের মাথিউরা পূর্বপার গ্রামের মো. আব্দুল হেকিমের বাড়ির কেয়ারটেকার নাহিদ ইসলাম (২৮) খুন হয়েছেন। তার ঘর ভর্তি রক্ত। এ খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানার একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে বিছানা, ঘরের মেঝে এবং বারান্দা রক্তে সয়লাব থাকলেও লাশ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে কেয়ারটেকারের সঙ্গে বড় কোনো হামলা বা মারামারির ঘটনা ঘটেছে এমন ভাবনা থেকেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ। বিছানার তোষক, বালিশসহ মেঝেতে রক্ত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকলেও ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টায় কোনো দুর্গন্ধ বের হয়নি। এ নিয়ে পুলিশের সন্দেহ হয়। এটি আসল না নকল রক্ত? এক পর্যায়ে পুলিশ ল্যাবে পাঠিয়ে রক্ত পরীক্ষা করে। কিন্তু, ল্যাব থেকেও আসেনি কোন সিদ্ধান্ত। এক পর্যায়ে পুলিশ নাহিদের ব্যবহৃত ও বিক্রি করা অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। সেই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে শনিবার রাতে তাকে নরসিংদী থেকে গ্রেফতার করা হয়।
ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, নাহিদ গত ১৪ বছর ধরে বিয়ানীবাজারের ওই এলাকায় আছেন, কিন্তু তার প্রকৃত পরিচয় কেউ জানে না। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, নাহিদের বাড়ি নিলফামারীতে এবং সেখানে অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় আত্মগোপনে আছেন।
পুলিশ সুপার জানান, তথ্য গোপন করে জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি করায় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।