উপজেলায় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ এপ্রিল ২০২৩, ৯:১১:০৫ অপরাহ্ন

হাতে কলম আর পেটে বিদ্যা থাকলেই লেখা যায়না। সেজন্যে প্রতিভা ও মগজ থাকা চাই। -গুন্টার গ্রাস
প্রান্তিক পর্যায়ে সংস্কৃতিচর্চাকে ছড়িয়ে দিতে সব উপজেলায় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয় বছর কয়েক আগে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর অগ্রগতি চোখে পড়ছে না। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার লক্ষে শত উপজেলায় ‘উপজেলা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ নির্মাণের কাজ হাতে নেওয়া হয়। যা ধাপে ধাপে ৪৯২ উপজেলায় উন্নীত হওয়ার কথা ছিলো।
প্রথমদিকে ৩০টি উপেজেলায় এ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করার পরিকল্পনা ছিলো। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্প বাস্তবায়নকারি সংস্থা শিল্পকলা একাডেমি। কিন্তু এখন পর্যন্ত উপজেলা সংস্কৃতি কেন্দ্রের কাজ দৃশ্যমান নয়। সরকারের উদ্দেশ্য হচ্ছে শিল্পের আলোয় রাঙিয়ে দেয়া ৫৬ হাজার বর্গমাইল। সেই আলোয় দূর হবে মনের আঁধার। জাগ্রত হবে শুভবোধের চেতনা। সর্বোপরি সংস্কৃতির আশ্রয়ে সব ধরনের অন্যায় প্রতিরোধ করে মানবিক রাষ্ট্র গড়ার লক্ষে নেয়া হয়েছে নানা পরিকল্পনা। আর তারই অংশ হচ্ছে উপজেলা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত ও নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর সংমিশ্রণে নির্মিত হবে চার তলা ভবনের প্রতিটি কেন্দ্র। প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবে তিন থেকে চারশ’ আসনের একটি অডিটরিয়াম।উপজেলা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশের বিজ্ঞমহল। তাদের মতে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশে সংস্কৃতিচর্চার ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। তৃণমূল পর্যায়ে সাংস্কৃতিকচর্চা জোরালো করতে সরকারের এই উদ্যোগ। বলা বাহুল্য যে, সংস্কৃতি প্রতিটি মানুষকে জীবন চলার পথে সুস্থ ও মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করে। একজন সাহিত্য-সংস্কৃতি প্রেমী কখনও কোন অশুভ কাজে জড়িয়ে পড়তে পারে না সহজে। সত্যি বলতে কি, দিন দিন মানুষের মধ্যে সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা কমে আসায় আমাদের সমাজে বেড়ে চলেছে নানা অশান্তি বিশৃঙ্খলা। অতীতে গ্রাম-শহর সর্বত্র সারা বছরই নানা ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাÐ লেগেই থাকতো। তাতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অংশ নিতো সব বয়সের মানুষ। এতে সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় হতো, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশ ঘটতো। যে কারণে মানুষের মধ্যে সহমর্মীতা সহনশীলতা ছিলো অটুট। আর বর্তমানে সাংস্কৃতিক অঙ্গণে চলছে বন্ধ্যাত্ব।
উপজেলা পর্যায়ে সংস্কৃতিকেন্দ্র নির্মিত হলে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সংস্কৃতিকর্মীরা সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ পাবে। সর্বোপরি সর্বস্তরের মানুষকে এই কেন্দ্রের কর্মকাÐে সম্পৃক্ত করতে হবে। গ্রামীণ জনপদে অতীত থেকে চলে আসা বৈশাখী মেলা, চৈত্র সংক্রান্তি কিংবা পৌষ সংক্রান্তির নানা আয়োজন, গ্রামীণ মেলা এই সব কিছুই উপজেলা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মাধ্যমে পূর্ণোদ্দমে জেগে উঠবে বলেই আমরা আশা করছি।এই প্রকল্প যাতে যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয় সেদিকে সরকারের নজর দেয়া উচিৎ।