‘দেশে খাদ্য সংকট নেই’
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ১২:২৪:০২ অপরাহ্ন
নিস্কর্মা বা কর্মহীন লোকের দিন স্বস্তির বা সুখের হয়না। -আর্থার ইউজিন
দেশে খাদ্য সংকট নেই। বলেছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটে দেশে দেশে যখন খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা, তখন বাংলাদেশে খাদ্য সংকট নেই। তাছাড়া, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, আগামী দিনগুলোতে বিশ্বের যেসব দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়তে পারে, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। খবরটি একটি জাতীয় দৈনিকের।
এটি একটি সুখবর। বৈশ্বিক মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধ প্রভৃতি কারণে সারা বিশ্বই এখন সংকটে। এর মধ্যে খবরটি বাংলাদেশের জন্য সত্যি স্বস্তিদায়ক। যদিও দেশে সার্বিক খাদ্য পরিস্থিতি উল্লিখিত খবরটির সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, তারপরেও পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় আমরা ভালো অবস্থানে আছি। এটা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই যে, দেশে কৃষি উৎপাদন বাড়ছে। বলা যায়, কৃষি ক্ষেত্রে একটা বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, স্বল্প জমিতে অধিক কৃষিপণ্য উৎপাদনে বিশ্বের বুকে রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। গত ১১ বছরে দেশে জনসংখ্যা বেড়েছে আড়াই কোটির বেশি। এই সময়ে কৃষিজমির পরিমাণও কমেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। তবুও বিপুলসংখ্যক মানুষের খাদ্যের জোগানে ঘাটতি হয় নি। বরং নানান উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবনের কারণে ধানসহ ফল, শাক-সবজির উৎপাদন বেড়েছে আশানুরূপ। বেড়েছে মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ উৎপাদনও। জানা যায়, স্বাধীনতার পর দেশে ধানের উৎপাদন তিন গুণের বেশি বেড়েছে। ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়। স্বাধীনতার পর প্রতি হেক্টর জমিতে গড়ে ধানের উৎপাদন ছিলো দুই টন। এখন প্রতি হেক্টরে উৎপাদন হচ্ছে পাঁচ থেকে ছয় টন। বর্তমানে দেশে বছরে গড়ে তিনটি ফসল চাষ হচ্ছে। তাছাড়া, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত গম, সবজি এবং ভুট্টার উৎপাদনএ বেড়েছে কয়েক গুণ। সোনালি আঁশ পাট রপ্তানিতে বিশ্বে আবারও প্রথম স্থানে ফিরেছে বাংলাদেশ। মৎস্য ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। ইলিশ উৎপাদনে বিশ্বে প্রথম স্থাণে রয়েছে বাংলাদেশ। আর মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয়। আলু উৎপাদনে শীর্ষ দশে রয়েছে বাংলাদেশ।
একদিকে দেশের লোকসংখ্যা বাড়ছে, অপরদিকে কমেছে আবাদি জমি। সরকারি হিসাবে প্রতিবছর দেশে কৃষি জমির পরিমাণ কমছে আটষট্টি হাজার সাতশ’ হেক্টর, অর্থাৎ গড়ে শতকরা এক ভাগ হারে। তারপরেও উন্নত জাত উদ্ভাবন, উন্নত প্রযুক্তির সম্প্রসারণ, কৃষকদের প্রশিক্ষণ, সর্বোপরি কৃষিতে সরকারের বিশেষ দৃষ্টি, প্রণোদনা ও যান্ত্রিকীকরণের কারণে ফসল উৎপাদন বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতি স্থিতিশীল পর্যায়ে রাখতে হলে কৃষিজমি অকৃষি খাতে ব্যবহার বন্ধ করা জরুরি।