খোশ আমদেদ মাহে রমযান
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ এপ্রিল ২০২৩, ৩:০৯:০৬ অপরাহ্ন
শাহ নজরুল ইসলাম
আজ ১৫ রমযান শুক্রবার, ১৪৪৪ হিজরি। মাগফিরাতের দশকের আজ পঞ্চম দিন। সিয়াম সাধনার গুরুত্ব তাৎপর্য ও উপকারিতা উপলব্ধি করতে না পারায় অনেকে অবহেলা, অলসতা ও খামখেয়ালী করে রোযা ছেড়ে দেয়। হেলায় খেলায় রোযা ভঙ্গ করে। এর পরিণাম সম্পর্কে বেখবর। এর পরিণতি যে কত ভয়াবহ তা আমাদের ধারনারও বাইরে। হযরত আবু উমামা আল বাহিলি রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে বলতে শুনেছি, তিনি বলছেন, ‘আমি ঘুমিয়েছিলাম, এমন সময় দুজন ফিরিশতা এলেন, তারা উভয়ে আমার দুবাহু ধরে আমাকে একটি দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে গেলেন। তারা আমাকে পাহাড়ের উপরে উঠতে বললেন। আমি বললাম সে সামর্থ আমার নেই। তারা বললেন, আমরা আপনার জন্য তা সহজ করে দিচ্ছি। এতে করে আমি পাহাড়ে আরোহন করতে থাকলাম। যখন আমি পাহাড়ের মাঝখানে পৌঁছলাম তখন ভয়ঙ্কর আওয়াজ শুনতে পেলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম এসব শব্দ কিসের? তারা বললেন এ হচ্ছে দোযখবাসীদের আর্তনাদ ও চিৎকার। এরপর আবার তারা আমাকে নিয়ে অগ্রসর হলেন। এমতাবস্থায় আমি দেখতে পেলাম এমন এক জনগোষ্ঠিকে যাদেরকে পায়ে বেঁেধ মাথা নিচের দিকে করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের চোয়াল ফেটে চৌচির হয়ে আছে এবং তা থেকে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম এরা কারা? তারা বললেন, এরা হলো ঐসব লোক যারা ইফতারের সময় হওয়ার পূর্বেই ইফতার করে নিত। (সহীহ ইবনে হিব্বান, সহীহ ইবনে খুযাইমা) এতে আমরা বুঝতে পারি যে রোযা রেখে সময়ের আগে ইফতার করার শাস্তি যদি এতো কঠিন হয় তবে রোযা ভঙ্গের শাস্তি কত কঠিন হতে পারে।
আলেমগণের সর্বসম্মত মত হলো রমযানের রোযা ফরযে আইন। যে ব্যক্তি রমযানের রোযা অস্বীকার করবে সে কাফির। (কাজী খান, হাশিয়া আলমগীরী ১ম খÐ পৃ. ২০৯) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা ওযরে ইচ্ছাপূর্বক রমযানের একটি রোযা ভাঙ্গে অন্য সময়ে সারা জীবনের রোযা তার সমকক্ষ হবে না।
আমাদের অনেক ভাই-বোন রোযার আরবী নিয়ত নিয়ে প্রশ্ন করেন। আরবী নিয়ত মুখস্ত নেই বা মনে থাকে না এসব অভিযোগ করেন। এ প্রসঙ্গে একটি কথা খুব ভাল করে মনে রাখুন যে রোযার নিয়ত করতে হবে এবং তা রাত থেকে নিয়ে দুপুরের আগ পর্যন্ত করা যাবে। সুবহি সাদিক থেকে দুপুরের এক ঘণ্টা পূর্বে এ নিয়ত সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হলো সুবহি সাদিকের পর সর্ব প্রকার পানাহার যৌনাচার থেকে বিরত থাকা।’
কোন কাজ করার প্রতি মনের সংকল্পকে সে কাজের নিয়ত বলে। এটা মুখে উচ্চারণ করতে হবে বা আরবী হতে হবে তা জরুরী নয়। মনে মনে রোযা রাখার নিয়ত করলেই রোযার নিয়ত হয়ে যায়। এ নিয়ে বাড়তি কোন পেরেশানীর প্রয়োজন নেই। কোন নিয়ত মুখস্ত করার বাধ্যবাধকতা নেই। রোযা রাখার জন্য সেহরী খেলেও রোযার নিয়ত হয়ে যায়। বিষয়টিকে জটিল করে চিন্তা করার কোন প্রয়োজন নেই।