ঈদ বাজার
সিলেটের দর্জিপাড়ায় বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১০ এপ্রিল ২০২৩, ৪:৪১:০১ অপরাহ্ন
আনাস হাবিব কলিন্স :
বৈশ্বিক মন্দা অর্থনীতির প্রভাব পড়েছে সিলেটের দর্জি পাড়ায়। অতীতে ঈদকে সামনে রেখে ভিড় লেগে লাগতো সিলেটের দর্জি পাড়ায়। কিন্তু, এবার পরিলক্ষিত হয়েছে উল্টো চিত্র। দর্জি দোকানসমূহে নেই আগের সেই প্রাণচাঞ্চল্য। সরেজমিনে বিভিন্ন দর্জি দোকান ঘুরে এমন চিত্র মিলেছে।
নগরীর হাতেগোনা কয়েকটি বিপণী বিতান ও পাড়া মহল্লার কয়েকটি দর্জি দোকানে গ্রাহকদের কিছু ভিড় দেখা গেলেও অনেক দোকানেই কারিগর ও মালিকদের অলস সময় পার করতে দেখা গেছে। কয়েকজন দোকানী জানান, মাস তিনেক আগে শীতের সময় তাদের জমজমাট ব্যবসা ছিল।
নগরীর জিন্দাবাজার মোতালেব ভিলার সিলেট লেডিস টেইলার্সের স্বত্বাধিকারী হামিদ মিয়া জানান, ঈদকে ঘিরে কাজের চাপ ততটা নেই, যতটা হওয়ার কথা ছিল। করোনার পরে আর ভালো অবস্থানে আসতে পারিনি। তিনি জানান, অধিকাংশ প্রবাসী শীত মৌসুমে দেশে আসেন। তখন দর্জিপাড়ায় ব্যস্ততা বাড়ে। তিন-চার বছর ধরে ঈদ মৌসুমের চেয়ে শীতকালে ব্যবসা ভালো হয় বলেও জানান তিনি।
নগরীর বন্দরবাজারস্থ মধুবন সুপার মার্কেটের প্রাইড টেইলার্স এন্ড ফেব্রিক্সের মালিক সাহাব উদ্দিন, ইউনিক টেইলার্সের বিদ্যুৎ তালুকদার, ন্যাশনাল টেইলার্সের সাব্বির আহমদ জানান, আগে ঈদকে ঘিরে শপিংমলের পাশাপাশি দর্জির দোকানগুলোতেও ভিড় ছিল। নিজস্ব ডিজাইন ও পছন্দের কাপড়ে পোশাক তৈরি করতে আসতেন অনেকে। কিন্তু, এ বছর ঈদের আগে দেখা যাচ্ছে এর ব্যতিক্রম। শবেকদরের আগ পর্যন্ত তারা কাস্টমারের অর্ডারের অপেক্ষায় রয়েছেন। তারা জানান, মহামারি করোনাসহ নানাভাবে তারা বিপদগ্রস্ত। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে তারা সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
নগরীর শুকরিয়া মার্কেটের ওয়ানম্যান টেইলার্সের ফয়েজ জানান, আমাদের ব্যবসার অবস্থা আগের মত নেই। আগে শবেবরাতের পর থেকেই আমরা অর্ডার সীমিত করে দিতাম। এখন কোনদিন কাপড়ের কোনো অর্ডার হচ্ছে না। পুরাতন কাজ করে সময় পার করছি। তবে, আগামী দিনগুলো নিয়ে এখনো আশায় আছি।
আল মারজান শপিং সেন্টারে দর্জি দোকানে আসা জনৈক তরুণী জানান, মার্কেট ঘুরেও অনেক সময় পছন্দের পোশাক পাওয়া যায় না। পছন্দ হলেও আবার অনেক সাইজ মেলে না। এসব ঝামেলা এড়াতে মনের মতো পোশাক বানাতে দর্জির কাছে এসেছেন। সিলেটের দর্জিপাড়ায় সেই চিরচেনা ঈদের ব্যস্ততা নেই। সব ধরনের সেলাইয়ে দাম বাড়ানো হয়েছে বলে জানান।
এদিকে বিভিন্ন পাড়া মহল্লার টেইলারিং দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের যে একটা জমজমাট ভাব সেটি অধিকাংশ দোকানেই নেই। ১৭ রমজান পার হলেও অনেকেই এখনও অর্ডারের অপেক্ষায় বসে আছেন। কখন গ্রাহক আসবে এই ভেবে। আল মারজান শপিং সেন্টারের ওয়েস্টার্ন টেইলার্সের রফিক বলেন, ঈদের আগের দিন পর্যন্ত অনেক গ্রাহক নতুন কাপড় বানাতে আসেন। ব্যবসার জন্য এই সুযোগটা হাতছাড়া করতে চান না। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি ও শ্রমিকের মজুরি বাড়ায় কাপড় সেলাইর দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে, দেশের অন্যান্য জায়গার তুলনায় সিলেটে কাপড় সেলাইর দাম তেমন বাড়েনি বলেও দাবি করেন তিনি।