ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ট জনজীবন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ এপ্রিল ২০২৩, ৫:০৮:১২ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট মহানগরীর আশপাশ এলাকায় চরম বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। পবিত্র রমজান মাসে এমন পরিস্থিতিতে চরম ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। গতকাল শনিবার কোথাও কোথাও ইফতার-সেহরীর সময়েও বিদ্যুৎ ছিলো না। তারাবিহ পড়তেও চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় মুসল্লীদের। তবে সঠিক কি কারনে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলীগণেরও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান, গতকাল শনিবার দফায় দফায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটছে। কোনো কোনো সপ্তাহে একাধিক দিনও উন্নয়ন কাজের জন্য বন্ধ রাখা হয় বিদ্যুৎ সংযোগ। ঘোষণা দিয়ে এসব কার্যক্রম চললেও গতকাল শনিবার হঠাৎ করে অসহনীয় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়। এতে ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তি এবং সাংসারিক কাজকর্মে নারীরা পোহাচ্ছেন চরম ভোগান্তি। বিশেষ করে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা লোকজনও গরমে পড়েন ভোগান্তিতে।
নগরীর টুকেরবাজারের তালুকদার পাড়া এলাকার বাসিন্দা হামিদুর রহমান জানান, ইফতারের আগ মুহূর্তে বিদ্যুৎ চলে যায়। এরপর তারাবিহ পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিলো না। এতে সারা দিন রোজা রেখে রোজাদাররা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
মইয়ারচর এলাকার মুসল্লী রাজু জানান, নামাজ চলাকালেই বিদ্যুৎ চলে যায়। এরপর দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ ছিলো না। তারাবির সময়ও বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে।
নগরীর মেন্দিবাগ এলাকার বাসিন্দা, সিলেটের সিনিয়র ফটো সাংবাদিক আতাউর রহমান আতা জানান, শুক্রবার দিবাগত রাতে তাদের এলাকায় সেহরীর সময় থেকে বিদ্যুৎ চলে যায়। এরপর বিদ্যুৎ আসে ফজরের নামাজের পর। এর বাইরেও হচ্ছে লোডশেডিং। এই গরমের মধ্যে বিদ্যুতের কারণে তাদের হাঁসফাঁস করতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
নগরবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, সিলেট নগরীর জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, টিলাগড়, উপশহরসহ বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে।
অন্যদিকে সিলেটে এভাবে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটলেও বিষয়টি লোডশেডিং নয় বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের একটি সূত্র। গ্রিডে ত্রুটিজনিত কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানায় ওই সূত্র। এছাড়া তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কোনো কোনো সময় ট্রান্সফরমারের ফিউজ পুড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িক বন্ধ রেখে মেরামত কাজ করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
অপরদিকে, মেরামত কাজের জন্য মহানগরীর বেশ কিছু এলাকায় টানা ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। প্রায় প্রতি সপ্তাহে এক বা একাধিক দিন মেরামত কাজের জন্য কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। এতে দৈনন্দিন কর্ম সম্পাদনসহ অফিস-আদালতের কার্যক্রমে ব্যাপক হারে বিঘœ ঘটে। এ বিষয়ে সিলেটের গ্রাহকরা ক্ষুব্ধ। এর মধ্যে পবিত্র রমজানে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনায় ভোগান্তি বেড়েছে।
সিলেট জেলায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) প্রায় চার লাখ গ্রাহক রয়েছেন। এই গ্রাহকদের প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা থাকে প্রায় ১৪৪ মেগাওয়াট। বিপরীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয় ৪৩০ মেগাওয়াট। তারপরও সিলেটে নিয়মিত ঘটছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। তবে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বলছেন, অপরিহার্যতায় এমনটি করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বিউবো সিলেটের (বিক্রয় ও বিতরণ) প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদিরসহ ডিভিশন প্রধানদের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।