নগরে কেনাকাটার ধুম
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ এপ্রিল ২০২৩, ১০:২৪:৫০ অপরাহ্ন
দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঈদের শেষের কয়েকটি দিনকে ঘিরে সিলেটে কেনাকাটার ধুম পড়েছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অন্যরকম ব্যস্ততা। বলা যায়, শহরের সবকটি বিপনীবিতান এখন ক্রেতা-বিক্রেতাদের প্রচন্ড ভিড়। যে ভীড় উৎসবে রূপ নিয়েছে।
ছয় থেকে সাতদিন বাকি ঈদের। হিসেব কষলে দিন একেবারেই ফুরিয়ে যাচ্ছে। তার মধ্যে পরিবারের অনেকের জন্য কেনাকাটা এখনো বাকি। তাই সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মানুষের মুখরতা। সব শ্রেণিপেশার মানুষ ঘর থেকে যেন পথে নেমে এসেছেন। বিপণীবিতান, অভিজাত ফ্যাশন হাউসে তিল ধারণের ঠাঁই নেই।
তার মধ্যে গত কয়েকদিন যাবত প্রচন্ড গরম পড়েছে। সেই গরমের মধ্যেও মানুষ ঘরে বসে নেই। গতকাল রোববার সকালে ও রাতে বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, আম্বরখানা, নয়াসড়ক দিয়ে হেটে চলাফেরা করা ছিলো দায়। সড়কে, ফুটপাতের ভীড় মাড়িয়ে মার্কেটে প্রবেশ করবেন, সেখানেও ভীড়। পাঞ্জাবী, পায়জামা, শার্ট. প্যান্ট, শাড়ি, অলংকার, থ্রিপিস, শিশু পোশাক কিনতে ব্যস্ত ক্রেতারা। ঈদের প্রয়োজনীয় পোশাক কিনতে অনেকে বিভিন্ন উপজেলা থেকে সপরিবারে এসেছেন। সেই দলে প্রবাসী পরিবারের সংখ্যা বেশী। দূরের ক্রেতাদের সন্ধ্যার সময় পথে, হোটেল, রেস্তোরাঁ, বিপণীবিতানে ইফতার করতে দেখা গেছে। কোনোরকম ইফতার শেষ করে আবার কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন।
জিন্দাবাজারে আশা নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘প্রচন্ড গরমের মধ্যে কেনাকাটা করতে কষ্ট হচ্ছে। তবে সেই কষ্টের মধ্যেও একটা আনন্দ অনুভব করছি। বছরে একবার এই কষ্ট হয়।’ মাহাতে কেনাকাটা করতে আসা মাছুদিঘীর পাড়ের বাসিন্দা জাফর খান জানান, গরমের মধ্যে ভালোভাবে কেনাকাটা করতে পারিনি। তবুও পরিবারের জন্য কেনাকাটা করেছি। তবে এবার পোশাকের দাম অনেক বেশী। আগে যে পোশাক কিনেছি বারোশ’ টাকায় সেই পোশাক গতকাল রোববার কিনেছি বাইশ’ টাকায়। একইভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে জুতার দাম। তবে রমজানের শুরুর দিকে এমন ছিলো না, শেষের দিকে এসে বেড়ে গেছে।’ জিন্দাবাজারে ডা. হাজারী মার্কেটের টপ টেন মার্টের ম্যানেজার বাছির জানান, ‘সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের সমাগম লেগেই আছে। বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে। আশা করছি ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এই আনাগোনা থাকবে।’
তবে শুধু পোশাকের দোকানে নয়, মেহেদী, আতর. টুপি থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণীদের ভীড় দেখা যাচ্ছে গহনা এবং কসমেটিকসের দোকানেও। সবাই পছন্দের পণ্যটি খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছেন, কেউ কিনছেন, কেউ বাজার যাচাই করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
তবে এবার ঈদে গরমের তীব্রতা থাকায় দেশী এবং সূতী কাপড়ের দিকে তরুণ-তরুণীদের দৃষ্টি বেশী। কুমারপাড়ায় অভিজাত ফাশন হাউস সাদাকালো থেকে শাড়ি এবং পাঞ্জাবী কিনেছেন সবুজ দম্পত্তি। কথা হলে তারা বলেন, ‘এভাবে গরম থাকলে দেশীয় পোশাক বিশেষ করে সূতী পোশাকের বিকল্প নেই।’ নারী উদ্যোক্তা ও থ্রি-পিস এক্রক্লুসীভ এর কর্ণধার ফেরদৌসি আক্তার সেই বিষয়ের উপর একমত পোষণ করেছেন। তিনি জানান, ‘আমরা শিশু থেকে নারীদের সব ধরণের পোশাক রেখেছি। গরমকে মাথায় রেখেই সব পোশাক সাজিয়েছি। দামও রেখেছি সহনীয় পর্যায়ে।’