প্রচন্ড খরতাপের মধ্যে বিদ্যুৎ বিড়ম্বনা ॥ জনজীবনে দুর্ভোগ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৩৪:২০ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : একদিকে রোদের প্রচন্ড খরতাপ তার সাথে যুক্ত হয়েছে বিদ্যুৎ বিড়ম্বনা। অনিয়ন্ত্রিত লোডশেডিং মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় অতিষ্ট হয়ে উঠেছে জনজীবন। সিলেট মহানগরী ছাড়াও গ্রামগঞ্জে গত ৩-৪ দিন ধরে বিরাজ করছে এ অবস্থা। রমজানের শেষ সময়ে ও বৈশাখের শুরুতে বিদ্যুতের উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। এতে জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। পবিত্র রমজান মাসে এমন পরিস্থিতিতে চরম ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। গতকাল রোববারও অনেক স্থানেই ইফতার-সেহরীর সময়েও বিদ্যুৎ ছিলো না। তারাবিহ পড়তেও চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় মুসল্লীদের।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, দেশের তিনটি বড় বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। চাহিদার তুলনায় সিলেট অঞ্চলে ১৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি থাকায় গ্রাহকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলেও জানায় বিউবো।
এদিকে, ক্ষুব্ধ বিদ্যুৎ গ্রাহকরা জানিয়েছেন, রমজানে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা বলে গাছপালা কর্তন ও জরুরি মেরামতসহ নানা কারণে সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রায় সপ্তাহতেই দিনভর বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ রাখে। এমনকি মহানগরীর বেশ কিছু এলাকায় টানা ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। কিন্তÍু রমজান শুরু হওয়ার পর থেকেই নানা ‘অজুহাতে’ পিছু ছাড়ছে না বিদ্যুৎ বিড়ম্বনা। এতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ অফিস আদালতে কাজের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের মারাত্মক প্রভাব পড়েছে ঈদের বাজারেও। ঈদকে সামনে রেখে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীগণ।
বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান, গতকাল রোববারও দফায় দফায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটছে। এতে ব্যবসায় ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তি এবং সাংসারিক কাজকর্মে নারীরা পোহাচ্ছেন চরম ভোগান্তি। বিশেষ করে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা লোকজনও গরমে পড়েন ভোগান্তিতে।
সিলেটে এভাবে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটলেও বিষয়টি লোডশেডিং নয় বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেট অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির। তিনি জানান, জাতীয় গ্রীডে ত্রুটিজনিত কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আশুগঞ্জ ৯শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, রামপাল ৪শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র এবং রাউজান ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে ত্রুটি দেখা দেয়ায় সারা দেশেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে। দু’ একদিনের মধ্যেই পরিস্থিতি উন্নত হবে বলেও জানান তিনি। প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির আরো জানান, গতকাল রোববার সিলেট বিভাগে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৬৭০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে জাতীয় গ্রীড থেকে সরবরাহ করা হয়েছে ৫০০ মেগাওয়াট। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটছে বলেও জানান তিনি।