খাদ্য অধিদপ্তরে সিলেট বিভাগের সিদ্ধ চালের চাহিদা বেড়েছে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ মে ২০২৩, ৪:৫৩:০১ অপরাহ্ন

# গত বছরের চেয়ে এবার সাড়ে ৩ হাজার মেট্রিক টন বেশি
সিদ্ধ চাল কেনা হবে # কেনা হচ্ছে না এবার আতপ চাল
কাউসার চৌধুরী :
সরকারের খাদ্য অধিদপ্তরে বেড়েছে সিলেট বিভাগের সিদ্ধ চালের চাহিদা। টানা তিন বছরের সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বিশ্লেষণ করে এই চিত্র পাওয়া গেছে। এবছর চলতি মৌসুমে সিলেটের ৪ জেলা থেকে ৪৪ হাজার ৪৫৬ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর এর পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার ৯৯১ মেট্রিক টন। গেল বারের চেয়ে এ বছর ৩ হাজার ৪৫৬ মেট্রিক টন চাল বেশি কিনবে খাদ্য বিভাগ। এর আগের বছর ২০২১ সালে চাহিদা ছিল ৩২ হাজার ১৯৬ মেট্রিক টন। অবশ্য, সুনামগঞ্জ জেলায় খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আতপ চাল দিয়ে সিদ্ধ চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের অভিযোগ বহু পুরনো। সিদ্ধ চাল সংগ্রহের চাহিদা বাড়লেও এবার সিলেট বিভাগ থেকে আতপ চাল কেনা হচ্ছে না।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার সম্প্রতি ভার্চুয়ালি সুনামগঞ্জের ধান-চাল সংগ্রহের মধ্য দিয়ে সিলেট অঞ্চলের ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
জানতে চাইলে সিলেটের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মঈন উদ্দিন সিলেটের ডাককে বলেন, সিলেট অঞ্চলে ইতোমধ্যে সিদ্ধ চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে সুনামগঞ্জে এই কার্যক্রম শুরু করেন। গত বছরের চেয়ে এবার চালের দামও বাড়ানো হয়েছে। ৪৪ টাকা কেজি করে এবছর একমণ সিদ্ধ চাল ১ হাজার ৭৬০ টাকা করে কেনা হচ্ছে। সিদ্ধ চালের চাহিদা থাকায় আমরা প্রতি বছর লক্ষ্যমাত্রাও বাড়িয়েছি। টার্গেট বাস্তবায়নে আমরা সচেষ্ট আছি। ধান চাল সংগ্রহ অভিযানে কোথাও কোনো অনিয়ম দেখলে কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেন।
তিনি জানান, এবছর খাদ্য অধিদপ্তর এখনো আতপ চাল কেনার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। যার ফলে আতপ চাল সংগ্রহ আপাতত বন্ধ রয়েছে।
খাদ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবছর সিলেট বিভাগের মধ্যে হবিগঞ্জ জেলা থেকে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৪২৪ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল কেনা হবে। সিলেট জেলা থেকে ১৩ হাজার ২৪৪ মেট্রিক টন, সুনামগঞ্জ জেলা থেকে ৯ হাজার ৬৭৬ মেট্রিক টন ও মৌলভীবাজার জেলা থেকে সংগ্রহ করা হবে ৭ হাজার ১১২ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল। এবার প্রতি মেট্রিক টন সিদ্ধ চালের মূল্য ৪৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে খাদ্য অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্ট মিল থেকে এই সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হবে।
সিলেট জেলার মধ্যে কেবল সিলেট সদর উপজেলা থেকেই সংগ্রহ করা হবে ৯ হাজার ৫১৬ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল। বিশ্বনাথ উপজেলা থেকে ৮৮ মেট্রিক টন, বালাগঞ্জ উপজেলা থেকে ১০২ মেট্রিক টন, ওসমানীনগর উপজেলা থেকে ৬৪ মেট্রিক টন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা থেকে ১৫০ মেট্রিক টন, বিয়ানীবাজার উপজেলা থেকে ১০২ মেট্রিক টন, কানাইঘাট উপজেলা থেকে ২ হাজার ৬১২ মেট্রিক টন, জকিগঞ্জ উপজেলা থেকে ৫২৪ মেট্রিক টন ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা থেকে সংগ্রহ করা হবে ৮৬ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল।
মৌলভীবাজার জেলার মৌলভীবাজার সদর উপজেলা থেকে ৯৮ মেট্রিক টন, শ্রীমঙ্গল উপজেলা থেকে ৪ হাজার ২০ মেট্রিক টন,
কুলাউড়া উপজেলা থেকে ১৮৮ মেট্রিক টন, বড়লেখা উপজেলা থেকে ২১৮ মেট্রিক টন, রাজনগর উপজেলা থেকে ২ হাজার ২২২ মেট্রিক টন, কমলগঞ্জ উপজেলা থেকে ৩৬৬ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হবে।
হবিগঞ্জ জেলার হবিগঞ্জ সদর উপজেলা থেকে ৩ হাজার ৯৪৩ মেট্রিক টন, লাখাই উপজেলা থেকে ২ হাজার ৩৫৬ মেট্রিক টন, মাধবপুর উপজেলা থেকে ১ হাজার ৯০৪ মেট্রিক টন, চুনারুঘাট উপজেলা থেকে ৩ হাজার ২০৮ মেট্রিক টন, বাহুবল উপজেলা থেকে ১২৪ মেট্রিক টন, নবীগঞ্জ উপজেলা থেকে ৫৫২ মেট্রিক টন, বানিয়াচং উপজেলা থেকে ২ হাজার ৩৩৭ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করবে খাদ্য অধিদপ্তর।
সুনামগঞ্জ জেলার সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা থেকে ৭ হাজার ৮২০ মেট্রিক টন, শান্তিগঞ্জ উপজেলা থেকে ১ হাজার ২৪৮ মেট্রিক টন, দোয়ারাবাজার উপজেলা থেকে ৯২ মেট্রিক টন, জগন্নাথপুর উপজেলা থেকে ২৯২ মেট্রিক টন, দিরাই উপজেলা থেকে ২২৪ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল কেনা হবে।
গত বছর সিলেট বিভাগের ৪ জেলা থেকে ৪০ হাজার ৯৯১ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সংগ্রহ করা হয়েছে ৩১ হাজার ৬০২ দশমিক ৬৩০ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল।
এর আগের বছর ২০২১ সালে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩২ হাজার ১৯৬ মেট্রিক টন। ওই বছর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ২৯ হাজার ৯৪৩ দশমিক ২৮০ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হয়।