সিলেটে বিএনপির সমাবেশ
নিজেরা নির্বাচনে প্রার্থী হব না, কারও নির্বাচনী প্রচারণায়ও অংশ নেব না ——-নজরুল ইসলাম খান
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২০ মে ২০২৩, ৪:০৩:১২ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘বিএনপিসহ দেশের অন্যান্য আন্দোলনকামী দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা এই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বর্জন করবে। এই সিদ্ধান্তের আলোকে বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচন আমাদের সাথিরা বর্জন করেছেন। আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে আরও ভালো খবর পাবেন বলে আশা করি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন বর্জন করেছি। এর মানে হলো, আমরা নিজেরা নির্বাচনে প্রার্থী হব না এবং অন্য কারও নির্বাচনী প্রচারণায়ও অংশ নেব না। যাঁরা দলের এই সিদ্ধান্ত মানবেন দল তাঁদের মর্যাদা দেবে।”
সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির আয়োজনে শুক্রবার বিকেলে সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্টে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘গায়েবি মামলায় নির্বিচারে গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের লোডশেডিং, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং ১০ দফা বাস্তবায়ন’-এর দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশে উপস্থিত সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেজাউল হাসান ওরফে কয়েস লোদীর কথা উল্লেখ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘চার-পাঁচবারের নির্বাচিত কমিশনার নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছেন। যাঁরা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন দল তাঁদের মর্যাদা দেবে। আর যাঁরা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাঁদের কী হয়েছে, সেটি দেখেছেন আপনারা। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর হয়েছেন একজন। তিনি শ্রমিক দলের নেতা। তারপরও তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা নির্বাচন বর্জন করেছি। এর মানে হলো, আমরা নিজেরা নির্বাচনে প্রার্থী হব না এবং অন্য কারও নির্বাচনী প্রচারণায়ও অংশ নেব না।’
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরো বলেন, ‘জনগণ চায় পরিবর্তন, জনগণ চায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব, জনগণ চায় তারেক রহমানের নেতৃত্ব। সেই নেতৃত্ব নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠার সুযোগ এসেছে। সময় এসেছে, আমরা সে সময় কাজে লাগানোর প্রস্তুতি নেব। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। এই লড়াইয়ে অবশ্যই আমরা বিজয়ী হব এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরবে।’
নজরুল ইসলাম খান আরো বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে এই সরকার ক্ষমতায় আসেনি। এখনো সরকার নির্বাচনের নামে যা করছে, তা আসলে প্রহসন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য । তিনি বলেন, সারা দুনিয়া আজ বলছে, এই সরকার জনগণের সরকার নয়। যার জন্য এই সরকারের অধীনে সব নির্বাচন বর্জন করবে বিএনপি।
সমাবেশে উপস্থিত সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে আজ শনিবার সিলেট রেজিস্ট্রারি মাঠে তাঁর সমাবেশে উপস্থিত থাকার জন্য সমাবেশে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর যৌথ সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন। সমাবেশের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, সিলেট রেজিস্ট্রারী মাঠে আমাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। কিন্তু সরকার মাঠটি পুলিশ দিয়ে দখল করেছে। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা আজ পুরো নগরী দখলে নিয়েছে। এতে প্রমাণ হয় আওয়ামীলীগের সময় আর বেশী বাকি নেই, জনগণ রাস্তায় নেমেছে। আওয়ামীলীগের পতন নিশ্চিত করে আমরা ঘরে ফিরব ইনশাআল্লাহ।
ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন বলেন, এই সরকারের সময় শেষ, তাই তারা আবুল তাবুল বলতেছে। আগামী দিনে রাজপথ দখলের জন্য সবাইকে প্রস্তুত হতে হবে। এই সরকারের পতন অনিবার্য।
স্বাগত বক্তব্যে মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, জনগণ এখন আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত। আওয়ামীগের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না। তাই জনগণও এই নির্বাচনকে বর্জন করবে।
সিলেট জেলা ওলামা দলের আহবায়ক মাওলানা নুরুল হকের কোরআন তেলাওয়াতের মধ্যদিয়ে সূচিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম।
এসময় সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- এডভোকেট আশিক উদ্দিন আশুক, রেজাউল হাসান কয়েস লোদি, হাজী শাহাব উদ্দিন আহমদ, ফখরুল ইসলাম ফারুক, একেএম তারেক কালাম, ইকবাল বাহার চৌধুরী, সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন, নজিবুর রহমান নজিব, সৈয়দ মঈন উদ্দিন সুহেল, শহিদ আহমদ (চেয়ারম্যান), নাজিম উদ্দিন লস্কর, শাহাব উদ্দিন আহমদ, মাহবুব কাদির শাহী, সামিয়া বেগম চৌধুরী, ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, এডভোকেট হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, তাজরুল ইসলাম তাজুল, মামুনুর রশিদ মামুন, আনোয়ার হোসেন মানিক, এডভোকেট আবু তাহের, সৈয়দ সাফেক মাহবুব, মুকুল আহমদ মুর্শেদ, হুমায়ূন আহমদ মাসুক, এড. মোমিনুল ইসলাম মোমিন, অধ্যক্ষ নিজাম উদ্দিন তরফদার, কোহিনুর আহমদ প্রমুখ। সমাবেশ শেষে নগরীতে একটি মিছিল বের করা হয়।