অবৈধ উপায়ে ধান ক্রয় ॥ গোয়াইনঘাটের সেই খাদ্য কর্মকর্তা প্রত্যাহার
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২১ মে ২০২৩, ৫:৩৩:৫৪ অপরাহ্ন
গোয়াইনঘাট (সিলেট) থেকে নিজন্ব সংবাদদাতা : ‘অবৈধ উপায়ে’ ধান ক্রয় করার দায়ে গোয়াইনঘাট থেকে প্রত্যাহার হয়েছেন উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) পলিদাস। সিলেটের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় তাকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিলুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ১৬ মে সকাল ১০টায় গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্নানগর খাদ্য গুদামে সুনামগঞ্জ থেকে আনা ট্রাকবর্তী ধান গুদামে লোড হওয়ার খবর চারিদিকে চাউর হলে এলাকার কৃষকরা ওই খাদ্যগুদামে জড়ো হন। ওই সময় খাদ্য গুদামের সংশ্লিষ্ট কাউকে সেখানে পাওয়া যায়নি। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফারুক আহমদ ধানগুলো জব্দ করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী-লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুবাস চন্দ্র পাল ছানা ও গোয়াইনঘাট থানার এস আই জাকিরুল ইসলাম।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপস্থিত হয়ে ২৬০ বস্তা ধান জব্দ করা হয়। তিনি বলেন, স্থানীয় কৃষকরা গোয়াইনঘাট খাদ্য গুদামে বোরো ধান বিক্রি করতে চাইলে ধান শুকানোর অজুহাতে তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি আমি জানার সাথে সাথে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকেও অবগত করি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেলা প্রশাসককে বিষয়টি জানিয়ে তিনিও ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন। এক পর্যায়ে সেখানে জেলা খাদ্য কর্মকর্তা এসেও উপস্থিত হন। পরবর্তীতে বিষয়টি তদন্তের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটির সদস্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রায়হান পারভেজ রনি জানান, ধানগুলো সুনামগঞ্জ থেকে আসার সত্যতা আমরা পেয়েছি।
এ ব্যাপারে ওসিএলএসডি পলি দাসের সাথে যোগাযোগ হলে তিনি জানান, আমি সিলেট জেলা অফিসে একটা মিটিংয়ে আছি। ধানের বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, ধানগুলো কৃষকরাই দিয়েছে, সুনামগঞ্জের নয়। অথচ, ট্রাকের হেলপার সাবুল তদন্ত দল ও স্থানীয় লোকজনের কাছে বলেছেন, ২৬০ বস্তা ধান ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় সুনামগঞ্জ থেকে গোয়াইনঘাটে তিনি নিয়ে এসেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, গোয়াইনঘাটের কৃষকরা তাদের ধান বিক্রি করতে পারছেন না। এ বছর ৭শ’ মেট্রিক টনেরও বেশি বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও খাদ্য গুদামের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নানা কৌশলে গোয়াইনঘাটের কৃষকদের ধান ক্রয় না করে তাদের ফিরিয়ে দেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা। গুদামের দায়িত্বে থাকা ওসিএলএসডি পলি দাস তার নিজ এলাকা সুনামগঞ্জ থেকে ধান ক্রয় করে গুদামে মজুদ করতে শুরু করেন। তবে, ওই খাদ্য কর্মকর্তা গোয়াইনঘাট থেকে প্রত্যাহারের সংবাদে তারা স্বস্তি প্রকাশ করেন।