ভূমিসেবা সপ্তাহ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ মে ২০২৩, ২:১৯:৫৫ অপরাহ্ন
যে একজনও শত্রু তৈরি করতে পারে নি, সে কারও বন্ধু হতে পারে না। -আলফ্রেড টেনিস
দেশে চলছে ভূমি সেবা সপ্তাহ-২০২৩। এ বছরের ভূমি সেবা সপ্তাহের প্রতিপাদ্য হচ্ছে -স্মার্ট ভূমি সেবায় ভূমি মন্ত্রণালয়। দেশের সকল বিভাগ, জেলা উপজেলা, রাজস্ব সার্কেল, ইউনিয়ন ও পৌর ভূমি অফিসে সেবা বুথ স্থাপন করে এই সপ্তাহ পালিত হচ্ছে। বুথে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভূমি সেবা প্রদান, ভূমিসেবা বিষয়ে অবহিত করা ও পরামর্শ সেবা দেওয়া হচ্ছে।
স্মার্ট ভূমিসেবায় জনগণকে সম্পৃক্ত করা, স্মার্ট ভূমিসেবা বিষয়ে সকলকে অবগত করা এবং ভূমি সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধি করাই ভূমি সেবা সপ্তাহের মূল লক্ষ্য। এই সপ্তাহে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বেশকিছু ভূমিসেবা প্রদান করা হচ্ছে।বিশেষ করে, ই-নামজারি, অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর, ডাকযোগে সার্টিফাইড খতিয়ান ও ম্যাপ এবং ১৬১২২ নম্বরে কল সেন্টারের মাধ্যমে ভূমিসেবা প্রদানে ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন আন্তঃসংযোগ, স্মার্ট ভূমি নকশা, স্মার্ট ভূমি রেকর্ড ও স্মার্ট ভূমি-পিডিয়াসহ স্মার্ট ভূমিসেবা স্থাপনে সরকারের পরিকল্পনার বিষয়টিও জনগণকে অবহিত করা হচ্ছে। যখন এই সপ্তাহ পালিত হচ্ছে তখন আমাদের ভূমিসেবার সার্বিক অবস্থা কী, সেটা দেখা দরকার। বাস্তবতা হচ্ছে, ভূমি সেবায় প্রতি ধাপেই অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন মানুষ। ভূমি সংক্রান্ত সেবা কার্যক্রমে ঘুষ লেনদেন, সম্পত্তি আত্মসাৎ, রাজনৈতিক প্রভাব, ভোগদখলসহ এ খাতে চলছে লাগামহীন দুর্নীতি। দেখা গেছে একজনের জমি অন্যজন বিক্রি করে দিচ্ছে। অথবা ভুয়া মালিক সাজিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ভুয়া দলিল। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নিবন্ধনে ছলচাতুরির আশ্রয় নিচ্ছে খোদ নিবন্ধন কর্মকর্তা-কর্মচারিও। এ কারণে মানুষ ক্ষতি ও হয়রানির শিকার হচ্ছে। তাছাড়া, ভূমিসংক্রান্ত আইন অন্যান্য ক্ষেত্রের আইন অপেক্ষা অধিক জটিল। তাই এই সংক্রান্ত মামলার সংখ্যাও অনেক বেশি। ভূমিসেবা সংক্রান্ত হয়রানি ও জটিলতা নিরসন, স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা এবং অনিয়ম-দুর্নীতি ও জাল-জালিয়াতি রোধ করে ভূমি ব্যবস্থাপনাকে সহজ করার লক্ষে সরকার ২০০৪ সালে ভূমি রেজিস্ট্রেশন (সংশোধন) আইন প্রণয়ন করে। কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ হয় নি। ভূমি অফিসগুলোতে দুর্নীতি বহাল তবিয়তেই আছে।
এতো হয়রানি, এতো ভোগান্তির পরও আমরা আশাবাদি যে, সরকার যথাযথ উদ্যোগ নিলে যেকোন সমস্যারই একদিন সমাধান হয়। প্রধানমন্ত্রী ভূমি সেবাকে দেশের জনগণের হাতের মুঠোয় নিয়ে আসার মাধ্যমে ভোগান্তি লাঘবের জন্য তাগিদ দিয়েছেন। আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। এই কর্মযজ্ঞে ভূমিসেবাও আসবে হাতের মুঠোয়, অর্থাৎ ই সংক্রান্ত সব সেবা মানুষ পাবে ঘরে বসে-এমন কথাই বলছে সরকার। আমরা এর বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করছি।